সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি
কোন রঙটি ভালো লাগে বেশি? কারও হয়তো কালো পছন্দ, কারও পছন্দের রং গাঢ় নীল। ছোটবেলার কথা মনে আছে? যখন আমাদের পছন্দের রং, আমাদের চারপাশের পৃথিবীটাই আরও বেশি উজ্জ্বল ছিল। লাল, গোলাপি আর হলুদে আকৃষ্ট হতাম আমরা সবচাইতে বেশি। ছোটবেলার সেই রঙিন জীবনে চলুন ঢুঁ মেরে আসি আরেকবার-
ঝকমকে লাল, নীল, গোলাপি-
ছোটবেলায় আপনার প্রিয় পোশাকের রং কী ছিল? আর আপনার পুতুল কিংবা প্লেট- সেগুলোর রং? লাল তখন খুব ভালোবাসতাম আমরা। ভালবাসতাম গোলাপি, লাল আর নীল। ছোটবেলায় এই রঙগুলোই আমাদেরকে আনন্দ দিত। শিশুদের কাছে কোনো জিনিসকে চেনার জন্য রং একটা বড় ভূমিকা পালন করে। বাবা-মাও তাই আমাদের রং, বিছানার চাদর- সবকিছুকে উজ্জ্বল রং দিয়ে রাঙিয়ে দিতেন।
শেষ কবে কোনো অসম্ভব সুন্দর কিছুর দিকে তাকিয়ে থেকেছেন অবাক হয়ে, ছুঁয়ে দেখেছেন? রং আর শব্দ ছোটবেলায় সবাইকে আকৃষ্ট করে। বাহারি এই রঙগুলো তাই ছোটবেলায় আমাদের বড্ড বেশি প্রিয় ছিল।
সাদা, সাদা আর সাদা-
আপনার বাসার ফ্রিজের রং কী ছিল? ফ্যান কিংবা থালা? এখন হরেক রংয়ের জিনিসপাতি কেনা যায়। কিন্তু একটা সময় ঘরের বেশিরভাগ জিনিসই ছিল সাদা। বাবা-মা বা বাড়ির অন্যদের ঘরের দেয়ালে সাদা রংটাই বেশি দেখা যেত। আসবাবগুলো ছিল কাঠের, কিংবা কাঠ কাঠ খয়েরি রঙের। থালার রং যে শুধু সাদা হতো তা না। সাথে সোনালি রঙের পিতলের থালাও দেখা যেত সব বাড়িতেই।
রঙিন বই-
মজার সব কবিতা কিংবা শুধুই ছবি দিয়ে ভরা ছোটবেলার বইগুলোর কথা মনে আছে? কত রকমের রং যে থাকতো সেখানে। ধীরে ধীরে আমাদের বইগুলোতে ছবির জায়গা নিয়ে নিয়েছে লেখা। এখন তো পাতার পর পাতা কালো রঙের লেখা দিয়ে ভর্তি থাকে বইগুলো।
নানান রঙের রং পেন্সিল-
বাবা-মায়ের কাছে রং পেন্সিলের আবদার করেননি ছোটবেলায়, এমনটা খুঁজে পাওয়া মুশকিল। কত কত রকমের রং। একটা যদি কোনোমতে হারিয়ে যেত তাহলেই মন খারাপ হয়ে যেত। এখনও কি রং করেন? খাতায় না হোক, ঘরের দেয়ালে কিংবা অন্য কোথাও রং করতে কি ইচ্ছে করে না?
রঙিন জামায় ঈদের খুশি-
ঈদের জামার কথা মনে পড়ে? এখন হয়তো রঙগুলো ফিকে হয়ে গিয়েছে। ঈদ নানান কাজে, দায়িত্ব আর কর্তব্যের মধ্যে আটকে গিয়েছে। কিন্তু ঈদ বলতেই একটাসময় ছিল নতুন রঙিন জামার গন্ধ। কার জামাটা বেশি সুন্দর, কার জামার সাথে রঙিন চুড়ি, টিপ আর ক্লিপ আছে- সেই নিয়েই চলত সব জল্পনা-কল্পনা। মনে পড়ে ফেলে আসা সেই দিনকে?
রং ছিল খাবারেও-
শুধু কি জামা আর জুতো? ছোটবেলায় রং জুড়ে ছিল খাবারেও। নানা উৎসবে একে অন্যের বাড়ি গিয়ে নানা স্বাদ আর রঙের খাবার খাওয়া, সময় পেলেই বাবা-মায়ের কাছ থেকে এক টাকা নিয়ে হাওয়াই মিঠাই খাওয়া, রঙিন সব ক্যান্ডিতেই তখন যেন জীবনের সবটা ভালোলাগা আটকে ছিল। এখন খাবারে রং আছে বটে। তবে সেই পুরনো দিনের আমেজ, স্বাদ আর স্বাস্থ্যকর খাবারের ব্যাপারটা কমে এসেছে অনেকটাই। খাবার বলতেই এখন দামি আর রেস্তোরাঁর খাবারের কথা চলে আসে। মায়ের হাতের রান্নাটাকে মিস করেন মাঝেমধ্যেই?
ছোটবেলার সেই রঙিন দিনগুলোতে কি ফিরে যেতে ইচ্ছা করে না আবার? সেই দিনগুলোতে তো আর ফিরে যাওয়া যাবে না, বরং নিজের জীবনকেই করে তুলুন রঙিন। একদিন হুট করে আঁকতে বসে যান রঙিন কোনো ছবি। একদিন ছেলেমানুষি করুন পোশাক নিয়ে। কিংবা নিজের সন্তানকে কিনে দিন রঙিন কাগজ আর রং। তার ছেলেবেলাও হোক আপনার মতোই রঙিন।
ওডি/এনএম
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড