• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৫ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

যে রেলস্টেশন পরিচালনা করে শিশুদের দল!

  নাবিলা বুশরা

০৪ জুলাই ২০১৯, ১১:০৪
শিশুদের রেল স্টেশন
হাঙ্গেরির এই রেল স্টেশন পরিচালনা করে এক দল শিশু (ছবি: রিফ্লেকশন এনরুট)

ট্রেনে তো চেপে বসেছেন। ঘুরে বেড়ানোর উদ্দেশ্য নিয়ে যতটা বের হয়েছেন তার চেয়ে বেশি আপনাকে বিস্মিত করছে রেলস্টেশনটি। কারণ এখানে আপনি রেল চালনায় যাদের দেখছেন তারা সকলেই শিশু! কেউ ট্রেনের হুইসেল দেবার প্রস্তুতি নিচ্ছে, কেউবা টিকিট চেক করছে, কেউবা টিকিট দিচ্ছে, আবার কেউবা যাত্রীদের সুবিধা-অসুবিধার তদারকি করছে! আপনি ভাবলেন এগুলো হয়ত শিশুদের নিছকই খেয়ালপনা। নইলে পুরো আস্ত একটা রেল স্টেশন শিশুদের কোনো দল চালায় নাকি!

এবার ভাবনাটাকে একটু পাশ ফিরিয়ে রাখুন। বাস্তব গল্পটা শুনুন। মজার বিষয় হচ্ছে যা দেখে এতক্ষণ আপনার চক্ষু চড়কগাছ হচ্ছিল ব্যাপারটা আসলে সত্যি। এই পুরো রেলস্টেশনটা চালায় একদল ছেলেমেয়েই! আর এটা কিন্তু মোটেও খেয়ালপনা নয়। বড়দের মত করেই তারা সব কিছু করে এখানে।

শিশুদের রেল সার্ভিস দেয়ার এই অভূতপূর্ব দৃশ্যের দেখা মেলে হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টের পাহাড়ি এলাকা বুদা-হিলসে। সেখানে সবুজ পাহাড় ভেদ করে তৈরি হয়েছে মাত্র ১১ কিলোমিটার দীর্ঘ জায়ারমেকভেসাট (হাঙ্গেরিয়ান নাম) নামের একটি রেল স্টেশন। এর ইংরেজি অর্থ ‘দ্য চিলড্রেনস রেলওয়ে’।

শিশু

রেলসেবায় যুক্ত এক শিশু (ছবি: বিবিসি)

এই রেলওয়েতে চলে সাদা, নীল আর লাল রঙের ট্রেন। শিশুদের পোশাকের রংটাও রেলওয়ের সাথে মিলিয়েই। ট্রেনে থাকা দুই ধরনের বগির মাঝে প্রথম শ্রেণীর বগির সিটগুলো খুব সুন্দর সবুজ ভেলভেটে মোড়ানো আর সাধারণ শ্রেণির বগিগুলো কাঠের তৈরি। তবে প্রতিটি বগিই বেশ যত্ন নিয়ে সুন্দর অলংকরণে তৈরি।

রেলওয়েতে আকর্ষণীয়ভাবে সাজানো সাতটি স্টপেজ রয়েছে যার সবগুলোই দেখাশোনা করে শিশুরা। এই শিশুদের বয়স মাত্র ১০-১৪! আর এদের সবাই বিভিন্ন এলাকার বিভিন্ন স্কুলে অধ্যয়নরত।

এখানে যে সকল শিশু যোগদান করে তাদের সকলকেই মেধার উপর ভিত্তি করে নিয়োগ দেয়া হয়। নিয়োগের পর তাদেরকে চার মাসের একটি ট্রেনিং এ অংশ নিতে হয়। এরপর রেলওয়ে ম্যানেজমেন্টের সকল ধরনের কাজ সম্পাদনের জন্য পরীক্ষায় বসতে হয়। এতে পাশ করলে তবেই মেলে এক বছরের লাইসেন্স।

শিশু

রেলসেবায় নিযুক্ত শিশুদের মাঝে একজন। এদের বয়স ১০-১৪ এর মাঝে। (ছবি: ডেইলি মেইল)

সকালে ক্লাসে যোগদান করতে যেন সমস্যা না হয় সেজন্য রেলওয়েতে কর্মরত শিশুরা চাইলে রাতের কাজ ভাগ করে নিতে পারে। সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে, শিশুরা এখানে কাজ করে যদি স্কুল মিস করতে চায় তবে স্কুল থেকে সে অনুমতিও নেয়া আছে তাদের!

হয়ত ভাবতে পারেন, শিশুরা যেহেতু কাজ করছে তাহলে হয়ত খুব সাধারণ কাজগুলোই এরা করছে। কিন্তু এদের বেলায় এমন ভাবার কোনো কারণই নেই। টিকিট চেক, যথাযথ নিয়মে টিকিট দেয়া, হুইসেল বাজানো, ট্রেনে ডিজেল দেয়া, যাত্রীদের তদারকি কোনো কিছুতেই এরা বড়দের চেয়ে পিছিয়ে নেই। শুধুমাত্র চালকের আসনে একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিকেই নিয়োগ দেয়া হয়। আর শিশুদের এ সকল কাজ তদারকির জন্যেও নিয়োগপ্রাপ্ত আছেন কয়েকজন কর্মকর্তা।

ছোট শিশুদের পরিচালনায় এমন অভূতপূর্ব দৃশ্য দেখতে কিন্তু মন্দ লাগবে না আপনার! চাইলে একবার ঘুরে আসতেই পারেন অসাধারণ এই জায়গাটি থেকে।

তথ্যসূত্র: হিডেন আনসিন ব্লগস্পট

ওডি/এএন

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড