ভিন্ন খবর ডেস্ক
ধীরে ধীরে বৃক্ষশূন্য হয়ে পড়ছিল ব্রাজিলের একটা এলাকা। একসময় তা রূপ নেয় খাঁ খাঁ ধূসর প্রান্তরে। কিন্তু এক দম্পতির প্রচেষ্টায় এলাকাটি ফের সবুজ হয়ে উঠল। গড়ে উঠল মানুষের হাতে গড়া বিশাল এক অরণ্য। সেই সাথে ফিরে এসেছে সেই পুরনো পাখির দল। যাদের কাকলীতে একসময় মুখর থাকত এলাকাটি। ঘটনাটি ঘটেছে ব্রাজিলের ইনস্টিট্যুটো টেরা নামক স্থানে।
অনন্য এই ঘটনার জন্ম দিয়েছেন সেবাস্তিয়াও সালগাদো নামের এক চিত্রসাংবাদিক এবং তার স্ত্রী লেলেয়া ডেলুইজ ওয়ানিক সালগাদো। ব্রাজিলের অধিবাসী এই দম্পতি তাদের দীর্ঘ ২০ বছরের পরিশ্রমের পর অসাধারণ এই কাজটি করতে পেরেছেন। তবে হুট করে এই কাজের চিন্তা মাথায় আসেনি কারও। দীর্ঘকাল আগে থেকেই সেবাস্তিয়াওর চিন্তা ছিল তাদের এলাকার হারানো সবুজকে আবার ফিরিয়ে আনার।
ছোটবেলায় যখন এই এলাকা ত্যাগ করতে হয়েছিল সেবাস্তিয়া সালগাদোকে তখনও এই এলাকাটি বেশ ঘন সবুজে আবৃত ছিল। কাজের সূত্রে এই চিত্রসাংবাদিক পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গা ঘুরে বেড়িয়েছেন। একসময় নাড়ির টানে ফিরে আসেন তার নিজের বাড়ি ইনস্টিট্যুটো টেরাতে। ফিরে এসে তিনি খুব অবাক হন। ছোট বেলার সেই চির পরিচিত সবুজ নেই কোথায়। নেই কোনো বন্য প্রাণীও। অরণ্যহীন প্রান্তরে শুধুই শুকনো খড়খড়ে মাটি।
প্রথমেই তার মাথায় চিন্তা এলো কী করে এত সুন্দর বন হারিয়ে গেল এই কয়েক বছরে সেই প্রশ্নের উত্তর বের করতে হবে। তিন জানতে পারলেন, এটার জন্য দায়ী তারই পরিবার। পারিবারিক এবং আর্থিক নানান কারণেই এলাকার অধিকাংশ গাছ কেটে ফেলেছিলেন তার বাবা। এই তথ্যটি তাকে খুব পীড়া দেয়। প্রকৃতির সাথে করা সেই পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতেই তিনি মনস্থির করেন এই এলাকাটিকে আবার সবুজ করে গড়ে তুলবেন। কাজটা তিনি একা শুরু করলেও তার সাথে যোগ দিয়েছিলেন তার স্ত্রীও।
সেবাস্তিতাও জানালেন, এই জায়গাটার সবকিছুই নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। গাছের পরিমাণ এতটাই কমেছিল যে মাত্র আধা শতাংশ জায়গায় কয়েকটি গাছ দাঁড়িয়েছিল অনেকটা অসহায়ের মতো। এটি তাকে খুব ভাবিয়ে তোলে। তিনি মনে মনে অরণ্যের কল্পনা করলেন এবং সেভাবেই শুরু করলেন কাজ। ধীরে ধীরে গাছ বাড়তে থাকে। ফিরে আসতে থাকে পাখি আর বন্যপ্রাণীরাও।
এই অরণ্যকে ফিরিয়ে আনতে তারা উদ্যোগী হয়ে ওঠেন একটু ভিন্নভাবে। গড়ে তোলেন ইনস্টিট্যুটো টেরা নামের একটি ছোট সংস্থা। আর তাতেই সাধিত হয় এই অসাধ্য কাজ। এই সংস্থার মাধ্যমে এই দম্পতি রোপণ করেন ৪ লাখের মতো গাছ।
এই দম্পতির ২০ বছরের পরিশ্রমে এই অরণ্যে এখন অনেক বন্যপ্রাণী আশ্রয় নিয়েছে। এরমধ্যে ১৭২ প্রজাতির পাখি, স্তন্যপায়ী ৩৩ প্রজাতির, ১৫ প্রজাতির সরীসৃপ রয়েছে। মনুষ্যসৃষ্ট এই অরণ্যে ২৯৩ প্রজাতির গাছপালা রয়েছে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
ওডি/এসএম
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড