ভিন্ন খবর ডেস্ক
সবুজের মায়া ঘেরা ছোট্ট একটি পাহাড়ি গ্রাম। এই গ্রামে সাড়ে তিনশো মানুষের বসবাস। তবে অদ্ভুত কথা হলো গ্রামের প্রায় ৭৫ শতাংশ মানুষই অন্ধত্বের শিকার। বাকীরাও ক্রমশ হারাচ্ছেন তাদের দৃষ্টিশক্তি। আর তাই পেরুতে অবস্থিত ‘প্যারান’ নামের গ্রামটি পরিচিত ‘অন্ধদের গ্রাম’ বা ‘দৃষ্টিহীনদের গ্রাম’ নামে।
জানা যায়, সমতল থেকে ৩ হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এই গ্রামের বেশির ভাগ মানুষই চোখের একটি জিনগত রোগে আক্রান্ত। যার নাম ‘রেটিনাইটিস পিগমেনটোসা’। এই রোগটিকেই আমরা অনেকে রাতকানা রোগ হিসেবে চিনি।
চক্ষু চিকিৎসকদের মতে, ‘রাতকানা’ রোগের জন্য প্রধান্তত এই ‘রেটিনাইটিস পিগমেনটোসা’ দায়ী। এ রোগের ফলে চোখের ‘টানেল ভিশন’ নষ্ট হয়ে যায়। চোখের ভেতরে রেটিনা নামের যে গুরুত্বপূর্ণ পাতলা মেমব্রেন থাকে, তার প্রধান দুটি অংশ হল রড ও কোণ। এই রড আর কোণ ‘ফটো রিসেপ্টর’র কাজ করে। এই রোগের ফলে রেটিনার রড কোষ ধীরে ধীরে তার কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।
প্যারান নামক গ্রামের বেশিরভাগ মানুষই এ রোগে আক্রান্ত। যার ফলে গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে কারও শৈশব থেকেই দৃষ্টিশক্তি ক্ষীন, কারও কারও বয়স পঞ্চাশ পেরুতেই চোখের সামনে নেমে আসে অন্ধকার।
এক সময় সোনা, রূপার খোঁজে এই অঞ্চলে হাজির হন একটি খনন সংস্থা। তাদের দৌলতেই এ গ্রামের মানুষেরা প্রথম চিকিৎসার সুযোগ পান। সে সময়ই এই গ্রামে আসা একদল চিকিত্সক পরীক্ষা করে জানান, চোখের এই রোগ আসলে জন্মগত। এক্স ক্রোমোজোমের সমস্যা থেকেই এই রোগের সৃষ্টি হয়।
নারীদের চেয়ে পুরুষরা ‘রেটিনাইটিস পিগমেনটোসা’ রোগে বেশি আক্রান্ত হন। পর পর বেশ কয়েকটি ঘটনায় দেখা গেছে, এই গ্রামে পুত্র সন্তান জন্মালে তার অন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই বেশি। এই কারণে এই গ্রামের বাসিন্দারা সাধারণত অন্য কোনো এলাকার মানুষের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্কে জড়ান না।
সবকিছু মিলিয়ে সভ্যতার আলো পৌঁছালেও, পেরুর এই গ্রামটির বাসিন্দারা আজও বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে দেশের অন্যান্য জনপদ থেকে।
ওডি/এনএম
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড