• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

সন্তান যমজ কিন্তু তাদের বাবা দুইজন ভিন্ন মানুষ!

  অধিকার ডেস্ক    ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৬:১৩

যমজ দুই সন্তান
সায়মন এবং গ্রিম বার্নি-এডওয়ার্ডস তাদের যমজ দুই সন্তানের সঙ্গে (ছবি: বিবিসি বাংলা)

সাধারণত যমজ বলতে একই বাবার দুই সন্তানকে বোঝায়। কিন্তু আলেকজান্ডার এবং ক্যালডারের বেলায় ঘটনা একদম ভিন্ন। তারা দুজনে যমজ ভাই-বোন হলেও তাদের বাবা দুইজন ভিন্ন মানুষ!

আলেকজান্ডারের বাবার নাম সায়মন আর ক্যালডারের বাবার নাম গ্রিম।

কিন্তু ভিন্ন বাবার যমজ সন্তান কীভাবে সম্ভব?

চার অভিভাবক, তিনটি দেশ ও দুই শিশু

সায়মন এবং গ্রিম বার্নি-এডওয়ার্ডস যখন সিদ্ধান্ত নিলেন যে তারা বাবা হতে চান তখন তাদের সামনে এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।

তারা হাতে গোনা ব্রিটিশ দম্পতির একজন যারা ভিট্রো ফার্টিলাইজেশান বা আইভিএফ-গর্ভাধান পদ্ধতির সময় দুইজনের থেকে একটি করে ভ্রূণ বেছে নন। এবং এই দুটি ভ্রূণ একই সাথে একই সময়ে একজন সারোগেট মায়ের শরীরে ইমপ্ল্যান্ট করা হয়।

দীর্ঘ এবং জটিল প্রক্রিয়া

শুনতে কঠিন মনে না হলেও এটি ছিল বেশ দীর্ঘ এবং জটিল একটি প্রক্রিয়া।

এই প্রক্রিয়াটির লক্ষ্য ছিল পর পর দুইবারের গর্ভধারণ থেকে দুজনের ডিএনএ সম্বলিত দুটি বাচ্চা ভূমিষ্ঠ করা। তবে একটি সংস্থা একজন সারোগেট মায়ের থেকে একইসঙ্গে দুটি শিশু জন্মদানের সম্ভাবনার কথা জানান। সেই সারোগেট মাকে খুঁজে পেতেও সংস্থাটি সহায়তা করে। সায়মন এবং গ্রিম যুক্তরাজ্যে থাকলেও এই প্রক্রিয়ার জন্য তাদের দেশের বাইরে যেতে হয়েছিল।

সায়মন বলেছেন, "আমরা আমাদের গর্ভাধানের চিকিৎসা করিয়েছি যুক্তরাষ্ট্রের নেভাডা অঙ্গরাজ্যের লাস ভেগাসে। এবং সেখানকার একজন সারোগেট মাকে আমরা পেয়ে যাই।"

সারোগেট মায়ের শরীরে অর্ধেক সায়মন ও অর্ধেক গ্রিমের শুক্রাণু ফার্টিলাইজ করা হয়। তাদের শক্তিশালী ভ্রূণটি থেকে গর্ভধারণ করেন এই মা। আর সন্তান ভূমিষ্ঠ করা হয় কানাডায়।

একজন কানাডিয়ান সারোগেট মা

এ কারণেই দুইটি ভ্রূণের মধ্যে রয়েছে একজন মা ও দুইজন ভিন্ন বাবার নমুনা। এই দুটি একই সাথে বেড়ে উঠতে থাকে সারোগেট মায়ের গর্ভের ভেতরে।

কানাডার নাগরিক এই সারোগেট মায়ের নাম মেগ স্টোন। যিনি সায়মন এবং গ্রিমের সন্তান জন্ম দেয়ার ব্যাপারে রাজি হয়েছেন।

যমজ সন্তান

কানাডিয়ান সারোগেট মায়ের সঙ্গে দুই বাবা (ছবি: বিবিসি বাংলা)

"আমরা আমাদের সন্তান ভূমিষ্ঠ করতে কানাডাকে বেছে নিয়েছিলাম কারণ তাদের আইনি কাঠামো আমাদের পছন্দ হয়েছে। এটা অনেকটা যুক্তরাজ্যের মতোই, যেখানে সারোগেসিকে কোন ব্যবসা নয় বরং কল্যাণকর কাজ হিসেবে দেখা হয়।" বলছিলেন সায়মন।

কিন্তু যমজ শিশু প্রসবের ছয় সপ্তাহ আগেই দুই বাবা যুক্তরাজ্যে ফিরে আসেন। কিন্তু প্রতিনিয়ত কানাডা থেকে একটা ভাল খবরের প্রতীক্ষায় উৎকণ্ঠায় কাটত তাদের সময়।

তাদের ভাবনায় সব সময় একটাই প্রশ্ন ছিল, সন্তানের পৃথিবীর মুখ দেখা সফল হবে তো?

অপেক্ষার অবসান

অবশেষে তাদের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে আসে প্রতীক্ষিত সেই ফোন কল।

গ্রিম বলেন, "আমাদের মাথার মধ্য দিয়ে অনেক আবেগ-অনুভূতির বিস্ফোরণ হচ্ছিল। আমরা এতো খুশি হয়েছিলাম যেটা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না।"

সারোগেট মায়ের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার কোনো নিয়ম না থাকলেও দুই বাবা এই মায়ের সঙ্গে সব সময় সুসম্পর্ক ও যোগাযোগ রাখার ব্যাপারে বদ্ধ পরিকর। এমনও হতে পারে যে এই দুই বাবা আরও সন্তান ধারণ করতে চাইবেন।

দুজনের বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন জোড়া সন্তান নিয়ে সায়মন এবং গ্রিম ভীষণ খুশি।

এ কারণে এই দুই বাবার কণ্ঠে এখন একটাই কথা "নেভার সে নেভার" (কখনও হবে না এ কথা বলবে না)।

তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা

আপনার চোখে পড়া অথবা জানা অন্যরকম অথবা ভিন্ন স্বাদের খবরগুলোও আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তাই সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড