অধিকার ডেস্ক
সাধারণত বয়স ৬০ পেরুলে আমরা তাকে বৃদ্ধ কিংবা বেশি বয়সী মানুষের তালিকায় ফেলি। কেউ বাঁচেন ৮০ বছর, কেউবা পার করেন শত বছর। তবে এই গ্রামে গেলে বদলে যাবে আপনার ভাবনা। এখানে বয়স ৫০ পার করেছেন এমন কাউকে খুঁজে পাবেন না। ৪০ পার করা মানুষগুলোকে সহজেই রাখতে পারবেন বৃদ্ধের তালিকায়। ভাবছেন, এমনও কি সম্ভব?
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চকরুটোলা এলাকায় পঞ্চাশের বেশি বয়সী কোনো বাসিন্দা নেই। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম আনন্দবাজারে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে অদ্ভুত এই অঞ্চলটির কথা। অন্য মানুষের থেকে আলাদা হয়ে বসবাস করেন এখানকার বাসিন্দারা। এই এলাকার কোনো মেয়ের বিয়ে হয় না অন্যত্র। এমনকি এখানকার কোনো পুরুষের কাছে বাইরের কেউ মেয়ে বিয়েও দেন না।
ডালটনগঞ্জ শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই চকরুটোলা। কোয়েল নদী থেকে তিন কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কৌড়িয়া পঞ্চায়েতের এই টোলায় হাজার তিনেক আদিবাসী বাস করেন। এখানে এমন কোনো বয়স্ক ব্যক্তি নেই যারা সোজা হয়ে হাঁটতে পারেন। চল্লিশের ওপর সবাই ভরসা রাখেন লাঠিতে। শিশুদের দাঁতের বর্ণও হলুদ।
কিন্তু কেন এমন দুর্দশা তাদের? জানা যায়, সবকিছুর জন্য দায়ী ফ্লোরাইড। সহনমাত্রার অন্তত চার গুণ বেশি (৪ দশমিক ২ মিলিগ্রাম প্রতি লিটারে) ফ্লোরাইড মিশ্রিত বিষ পানি খেয়ে টোলার প্রতিটি পরিবারেরই কেউ না কেউ পঙ্গু।
ফ্লোরাইড বিশেষজ্ঞরা জানান, কেবল চকরুই নয়, পলামু জেলার ৪৮টি গ্রাম এবং গরওয়া জেলার ২৭৭টি গ্রামের ভূগর্ভস্থ জলে রয়েছে বিপজ্জনক মাত্রায় ফ্লোরাইড। দেশের ফ্লোরাইড-দূষণ মানচিত্রের অন্যতম বিপজ্জনক জায়গা পলামু।
চকরুটোলার আদিবাসীদের মূল পেশা দিনমজুরি। সোহর সিংহ নামের এক বাসিন্দা আগে তাই করতেন। কিন্তু বর্তমানে তার বয়স ৪৮ বছর। এই বয়সেই তার কোমর আর পা দুটো বেঁকে ফুলে গিয়েছে। লাঠির সাহায্য ছাড়া উঠে দাঁড়াতেও পারেন না। বছর তিনেক আগে হারিয়েছেন স্ত্রীকে। পাশে ঘরে খাটিয়ায় শুয়ে মৃত্যুর প্রহর গুণছেন অনিতা কুঁয়া। তার বয়স মাত্র ৪৫।
ওডি/এনএম
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড