• শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

মাদারীপুর-১ : আওয়ামী লীগের দুর্গ দখল নিতে মরিয়া বিএনপি

  এস.এম. রাসেল

০৫ নভেম্বর ২০১৮, ১৪:৫৬
সংসদ নির্বাচন
মাদারীপুর-১ আসনের প্রার্থী ইয়াজ্জেম হোসেন রোমান, নুর-ই-আলম চৌধুরী ও মো. জহিরুল ইসলাম মিন্টু (ছবি : দৈনিক অধিকার)

শিবচর উপজেলা নিয়ে গঠিত মাদারীপুর-১ আসন। শিবচর পৌরসভা ও উপজেলার ১৯টি ইউনিয়ন এ আসনের অন্তর্ভুক্ত। সর্বশেষ ভোটার তালিকা অনুযায়ী মোট ভোটারের সংখ্যা ২ লাখ ১৭ হাজার ৮২৫ জন। আ.লীগের দুর্গ হিসেবে খ্যাত মাদারীপুর-১ আসনটিকে আ.লীগের ভোট ব্যাংক বলা হয়।

২০০৮ সালের নির্বাচনে আ.লীগের প্রার্থী ছিলেন নুর-ই-আলম চৌধুরী (লিটন চৌধুরী), ৪ দলীয় ঐক্যজোটের প্রার্থী ছিলেন হাসান মোহাম্মাদ আবদুল্লাহ। ঐ নির্বাচনে আ.লীগের প্রার্থী নুর-ই-আলম চৌধুরী (লিটন চৌধুরী) বিজয়ী হন। ২০১৪ সালের নির্বাচন বিএনপি নির্বাচন বয়কট করলে আ.লীগের প্রার্থী নুর-ই-আলম চৌধুরী (লিটন চৌধুরী) বিনা-প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।

আগামী নির্বাচনে বিএনপি চাইছে আসনটি পুনরুদ্ধার করতে। আর আ.লীগ চাইছে ধরে রাখতে। এমন টার্গেট নিয়েই নেতাকর্মীরা মাঠে কাজ করছেন।

সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন, বর্তমান সংসদ সদস্য বাংলাদেশ আ.লীগ পার্লামেন্টারি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও অনুমিত হিসাব কমিটির সভাপতি ও সাবেক হুইপ নুর-ই-আলম চৌধুরী (লিটন চৌধুরী)। বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা বিএনপির অন্যতম সদস্য ও শিবচর উপজেলা বিএনপির (ভারপ্রাপ্ত) সভাপতি বিশিষ্ট সমাজ সেবক ইয়াজ্জেম হোসেন রোমান এবং জেলা বিএনপির সদস্য খলিলুর রহমান চৌধুরী। জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা সহ-সভাপতি জহিরুল ইসলাম মিন্টুর নাম শোনা যাচ্ছে।

শিবচর উপজেলা আ.লীগের সভাপতি সামসুদ্দিন খান বলেন, শিবচর উপজেলায় আমাদের এমপি নুর-ই-আলম চৌধুরী ছাড়া আ.লীগের অন্য কোন প্রার্থী নেই। তিনি বারবারই এখানে একক প্রার্থী। তার বিকল্প কেউ নেই। তার হাত ধরেই এই উপজেলার সকল উন্নয়ন হয়েছে।

ওদিকে হাতছাড়া হওয়া এ আসনটি পুনরুদ্ধারে বিএনপি মরিয়া। এর জন্য গ্রুপিং, কোন্দল মিটিয়ে এক সঙ্গে কাজ করতে চায় বলে বিএনপি নেতৃবৃন্দ জানান। শিবচর উপজেলা বিএনপির সভাপতি, বিশিষ্ট সমাজ সেবক ইয়াজ্জেম হোসেন রোমান এলাকায় এসে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিগত দিনের চেয়ে আরও সু-সংগঠিত করেছেন। মাঠ পর্যায় চালিয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন কর্মকাণ্ড। অন্যদিকে সাধারণ ভোটারদের জনসমর্থন নিতে কৌশল অবলম্বন করছেন। আগামী সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন দৌড়ে শিবচর উপজেলা বিএনপির সভাপতি, বিশিষ্ট সমাজ সেবক ইয়াজ্জেম হোসেন রোমান ছাড়াও খলিলুর রহমান চৌধুরী লবিং করে যাচ্ছেন। ইয়াজ্জেম হোসেন রোমান জনপ্রিয়তায় ও মনোনয়ন দৌড়ে অনেক এগিয়ে আছেন।

শিবচর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জহের গোমস্তা জানান, আগামী নির্বাচনে জনপ্রিয়তা ও হিসাব-নিকাশ করেই দল প্রার্থী নির্ধারণ করবে। তবে প্রার্থীদের জনপ্রিয়তা যাচাই-বাছাই করে এবং ত্যাগী ও রাজনীতির মাঠে যারা সক্রিয় থাকেন সে হিসেব অনুযায়ী মনোনয়ন দেওয়া হলে এ আসনে ধানের শীষের জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী তিনি।

বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী শিবচর উপজেলা বিএনপির (ভারপ্রাপ্ত) সভাপতি ইয়াজ্জেম হোসেন রোমান বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হলে ধানের শীষের জয় শতভাগ।

অপর দিকে, জাতীয় পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশী তরুণ সমাজ সেবক মো. জহিরুল ইসলাম মিন্টু গণসংযোগ চালাচ্ছেন।

এছাড়া এই আসনে ইসলামী আন্দোলনের নেতা হাফেজ মোহাম্মদ জাফর দলীয় সম্ভাব্য প্রার্থী। তার মনোনয়ন অনেকটা নিশ্চিত বলে দলীয় সূত্রে জানা যায়।

জানা যায়, স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে মাদারীপুর-১ (শিবচর) আসনে আ.লীগের প্রার্থী ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আপন বড় বোনের ছেলে মরহুম ইলিয়াছ আহম্মেদ চৌধুরী। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন জাসদের প্রার্থী বর্তমান নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান। ওই নির্বাচনে আ.লীগের প্রার্থী মরহুম ইলিয়াছ আহম্মেদ চৌধুরী বিজয়ী হন।

১৯৭৯ সালের নির্বাচনে আ.লীগের প্রার্থী ছিলেন রেজা শাজাহান আর বিএনপির প্রার্থী ছিলেন মরহুম শামসুল হুদা চৌধুরী, স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন মোতাহার হোসেন সিদ্দিকী ও কাদের চৌধুরী। ওই নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী মরহুম শামসুল হুদা চৌধুরী বিজয়ী হন।

কিন্তু বিজয়ী সংসদ সদস্য শামসুল হুদা চৌধুরীর হঠাৎ মৃত্যুতে আসনটি শূন্য হওয়ায় উপ-নির্বাচনে আ.লীগের প্রার্থী ছিলেন রেজা শাজাহান আর বিএনপির প্রার্থী ছিলেন আলতাফ হোসেন চৌধুরী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন মোতাহার হোসেন সিদ্দিকী। ওই নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী আলতাফ হোসেন চৌধুরী বিজয়ী হন।

১৯৮৬ সালের নির্বাচনে আ.লীগের প্রার্থী মরহুম ইলিয়াছ আহম্মেদ চৌধুরী, বিএনপি নির্বাচন বয়কট করে এবং জাতীয় পার্টির প্রার্থী ছিলেন আবুল খায়ের চৌধুরী। ওই নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আবুল খায়ের চৌধুরী বিজয়ী হন। ১৯৮৮ সালের নির্বাচন আ.লীগ ও বিএনপি বয়কট করেন। ঐ নির্বাচনে অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আবুল খায়ের চৌধুরী বিজয়ী হন।

১৯৯১ সালের নির্বাচনে আ.লীগের প্রার্থী মরহুম ইলিয়াছ আহম্মেদ চৌধুরী, বিএনপির প্রার্থী মজিবর রহমান খান। ওই নির্বাচনে আ.লীগের প্রার্থী মরহুম ইলিয়াছ আহম্মেদ চৌধুরী বিজয়ী হন।

১৯৯১ সালের ১৯ মে আ.লীগের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ইলিয়াছ আহম্মেদ চৌধুরীর হঠাৎ মৃত্যুতে আসনটি শূন্য হওয়ায় উপ-নির্বাচনে আ.লীগের প্রার্থী ছিলেন তার জৈষ্ঠ্যপুত্র নুর-ই-আলম চৌধুরী (লিটন চৌধুরী), বিএনপির প্রার্থী ছিলেন মোতাহার হোসেন সিদ্দিকী। ওই নির্বাচনে নুর-ই-আলম চৌধুরী (লিটন চৌধুরী) বিজয়ী হন। ১৯৯৬ সনের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন আ.লীগ বয়কট করে। বিএনপির প্রার্থী ছিলেন আবুল খায়ের চৌধুরী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন নাবিলা চৌধুরী। ওই নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী আবুল খায়ের চৌধুরী বিজয়ী হন।

১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আ.লীগের প্রার্থী ছিলেন নুর-ই-আলম চৌধুরী (লিটন চৌধুরী), বিএনপির প্রার্থী ছিলেন আবুল খায়ের চৌধুরী। ওই নির্বাচনে আ.লীগের প্রার্থী নুর-ই-আলম চৌধুরী (লিটন চৌধুরী) বিজয়ী হন। ২০০১ সনের নির্বাচনে আ.লীগের প্রার্থী ছিলেন নুর-ই-আলম চৌধুরী (লিটন চৌধুরী), বিএনপির প্রার্থী ছিলেন খলিলুর রহমান চৌধুরী (ঠান্ডু চৌধুরী)। ওই নির্বাচনে আ.লীগের প্রার্থী নুর-ই-আলম চৌধুরী (লিটন চৌধুরী) বিজয়ী হন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড