বাপ্পা আজিজুল
১ আমাদের প্রাক্তন প্রেমিকারা ব্যর্থ ছিল। ব্যর্থ ছিল আমাদের মতো মহাপুরুষকে ধারণ করতে। বিনিময়ে পুষেছিল একরাশ ঘৃণা। ঢেউতোলা যৌবনে সহসা স্লুইসগেট খুলে দিয়ে তারা আমাদের হতাশায় ডুবাতে চেয়েছিল। অথচ আমরা শোককে শক্তিতে পরিণত করে ঢের এগিয়েছি। এতটা এগিয়েছি যে তাদের স্পর্ধার নাগালের বাইরে। তারা এখন আমাদের হিংসে করে যেমন হিংসে মানুষ চাঁদকে করে, নক্ষত্রকে করে। আমরা হাসি যেমন তিমির রাতে কালপুরুষ হাসে।
২ প্রাক্তন প্রেমিকাদের কেউ কেউ পীরের মুরিদ হয়েছে কিনা জানিনা। আপাদমস্তক তারা এখন জড়িয়ে থাকে রঙবেরঙের পট্টি। অথচ আমাদের বুকের ঘ্রাণে তারা একসময় রঙিন স্বপ্ন দেখত ও দেখাতো। হয়ত তাদের বহুরূপী ব্যক্তিত্ব আড়াল করার এ এক ব্যর্থ প্রয়াস।
৩ প্রাক্তন প্রেমিকারা আমাদের অকালমৃত্যু চেয়েছিল। ভালোবাসার নামে হেমলক পান করিয়েছিল। অমৃত মনে করে আমরাও পান করেছিলাম। আমাদের এপিটাফে আঁকা হল প্রাক্তনীদের মীরজাফরী। তারপর সমাধির উর্বর মাটি ফুঁড়ে আমাদের পুনর্জন্ম হতে লাগল। যেমন মৃত বীজ অংকুরিত হয়। ভাগ্যিস! আমাদের হত্যা করে প্রাক্তনীরা সেপথ মাড়ায়নি। হয়ত টুঁটি চেপে ধরত, উপড়ে ফেলতো শেকড়। তারা তখন অন্যপুরুষে কামাসক্ত। আমরা মহীরুহ হচ্ছি।
৪ প্রাক্তন প্রেমিকারা কখনও সুখী হয় না। হতে পারেনা। সুখী হওয়ার ভাণ করে। কেননা অতীতের প্রেতাত্মারা তাদের পিছু ছাড়েনা। ফলে তারা হরদম হ্যালুসিনেশন, ডিলিউশনে ভুগে।
৫ আমরা ভাত খেতাম নিজেদের বাড়িতে আর কুলি ফেলতাম প্রাক্তন প্রেমিকার উঠোনে। কী মায়া! কী মহব্বত! সবই যে বয়সের আবেগ। আজ কত বছর আমরা সেপথ ভুলেও তাকাইনি। ফেলে আসা পদচিহ্ন হয়ত খুঁজে পাওয়া যাবে না প্রাক্তনীদের চৌহদ্দিতে। সুখে থাকুক জগতের সকল প্রাক্তনী। প্রাক্তনং শরনং গচ্ছামি।
আরও পড়ুন- তামাম শহরে বসে মানুষের হাট
ছবি : কবি বাপ্পা আজিজুল
লেখক পরিচিতি :
কবি বাপ্পা আজিজুল। যাকে বলা হয় ন্যানোকাব্যের রূপকার। তিনি একজন সম্পাদকও। সম্পাদনা করেন লিটল ম্যাগ ‘কবিতিকা’। তিনি পেশায় একজন চিকিৎসক। এই পর্যন্ত প্রকাশ হয়েছে তাঁর সাতটি গ্রন্থ। এর মধ্যে ‘অন্তরীণ’, ও ‘নাগরিক বিষণ্নতা’ কাব্যগ্রন্থ।
অন্যান্য গ্রন্থের ভিতর আছে নিবন্ধ সংকলন ‘যেতে হবে বহুদূর’। রমাদান কারীম- দ্যা প্যানাসিয়া অফ হার্ট, ইবরাহিম আ.- ফাদার অফ প্রোফেটস। জীবনোপন্যাস ‘রনিঃসঙ্গ পথিক’। স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রবন্ধ সংকলন ‘অটিজম ও অন্যান্য: ভিন্ন প্রেক্ষিতে জীবন’।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড