• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

সম্মানীর নামে শিক্ষাবোর্ডে ১৬৭ কোটি টাকা লুট

  শিক্ষা ডেস্ক

৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৬:১৫
শিক্ষা মন্ত্রণালয়
শিক্ষা মন্ত্রণালয় (ছবি : দৈনিক অধিকার)

সারাদেশের আটটি শিক্ষাবোর্ডে সম্মানীর নামে ৩৩ ধরনের আর্থিক অনিয়ম ও ১৬৭ কোটি টাকা লুটের ঘটনা ঘটেছে। গত ২৭ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এ ব্যাপারে প্রতিবেদন পাঠানো হয়।

প্রতিবেদনটিতে বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডে ৩৩ ধরনের অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগ উঠেছে এবং এতে সরকারের ১৬৭ কোটি টাকা গচ্চা গেছে। এ অর্থ বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারী, ঠিকাদারসহ সংশ্লিষ্টদের পকেটে চলে গেছে। যে কাজের জন্য তারা বছরে অন্তত ছয়টি বোনাস নেন, সেই কাজের জন্য আবার সম্মানীও নেন।

সম্প্রতি স্থানীয় সরকার ও রাজস্ব অডিট অধিদপ্তর গত দুই মাস ধরে দেশের আটটি শিক্ষাবোর্ডে সরেজমিন নিরীক্ষা চালায়। এরপর এ সংক্রান্ত বার্ষিক নিরীক্ষা প্রতিবেদনটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, বোর্ডগুলোতে সবমিলিয়ে ১৬৭ কোটি টাকার অনিয়ম পাওয়া গেছে। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে আটটি শিক্ষাবোর্ডে এসব অর্থ ব্যয় করা হয়েছে। প্রতি বছরের মতো ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে দেশের আটটি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বোর্ডের বার্ষিক নিরীক্ষা প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে। এতে ৩৩ ধরনের অনিয়ম ও অর্থ অপচয়ের তথ্য উঠে এসেছে।

চিহ্নিত ৩৩টি অনিয়মের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- প্রাপ্য না হওয়া সত্ত্বেও জেএসসি পরীক্ষায় রেজিস্ট্রেশন করা, পরীক্ষা পরিচালনা এবং ফল প্রকাশ সংক্রান্ত কাজে সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সম্মানী প্রদান; মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় নম্বরপত্র ও সনদপত্র লিখন, যাচাই, স্বাক্ষর ও পাঠানোর কাজে প্রাপ্যতার অতিরিক্ত সম্মানী প্রদান; ব্যবহারিক পরীক্ষার উত্তরপত্র যাচাই-বাছাই কাজের জন্য অতিরিক্ত অর্থ প্রদান; অনলাইন নিবন্ধনের জন্য অর্থ প্রদান; এসব সম্মানীর বিল থেকে নির্ধারিত হারে উৎসে আয়কর কর্তন না করা।

এছাড়া এ সকল অনিয়মের মধ্যে আরও রয়েছে- শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে নির্ধারিত হারের চেয়ে কম হারে দীর্ঘমেয়াদী ঋণের সুদ আদায় করা, আন্তঃশিক্ষা বোর্ড তহবিল ও বিজি প্রেসকে অনিয়মিতভঅবে অর্থ পরিশোধ, ঠিকাদারের বিল হতে ভ্যাট কর্তন না করা, ক্যাশ বইয়ের হিসাব অনুযায়ী ব্যাংক হিসাবে অমিল, গাড়ি ক্রয়ে সরকার নির্ধারিত হারে চেয়ে অতিরিক্ত মূল্যে ক্রয়, বিভিন্ন খাতে বাজেট বরাদ্দ অপেক্ষায় অতিরিক্ত ব্যয়, অনিয়মিতভাবে চাহিদা তৈরির মাধ্যমে কম্পিউটার সামগ্রী ক্রয় বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা ব্যতিত সম্পদ সংগ্রহ খাতে অনিয়মিত ব্যয়, ব্যাংকের এফডিআর, সঞ্চয় হিসাব হতে প্রাপ্ত আয় হিসাবে অন্তর্ভুক্তি না করা, হিসাব বইতে আয় কম দেখানো।

ঠিকাদারদের পরিশোধিত বিলে গড়মিল করা, বিভাগীয় কাজে প্রদান করা অগ্রিম অর্থ সমন্বয় না করা, আবাসিক বাসায় বাসায় বসবাসরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গ্যাস বিল বাবদ অতিরিক্ত অর্থ প্রদান, পরিশোধিত বিল হতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে অর্থ ফেরত প্রদান করা, মডেল কলেজের আয় বোর্ড তহবিলে জমা না করে মডেল কলেজের শিক্ষকদের বেতন-ভাতা বোর্ড থেকে প্রদান, অর্থ লেনদেনে ক্যাশ বই যথাযথ সংরক্ষণ না করা, কর্মচারীদের সার্ভিসবুকে চাকরি সংক্রান্ত কোনো তথ্য সংরক্ষণ না করা, পুরাতন গাড়ি অকেজো ঘোষণা করা সত্ত্বেও সেগুলো বিক্রয় না করাসহ অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় অসঙ্গতি পাওয়া গেছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক জানান, ‘প্রণোদনা না দিলে বোর্ডে তো কাজই উঠবে না। কেননা, বিভিন্ন পরীক্ষার সময় কাজ করতে করতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাতও পার হয়ে যায়। এসব বিবেচনা করে বোর্ড কমিটিই প্রণোদনা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই অনুযায়ী দেওয়া হয়েছে।’ এ সময় কোনো অনিয়ম নেই বলেও দাবি করেন তিনি।

ওডি/এসএসকে

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড