• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

লকডাউনে বেশি ক্ষতির মুখে অসচ্ছল শিক্ষার্থীরা

  শিক্ষা ডেস্ক

২৩ এপ্রিল ২০২০, ১৮:৪৮
শিক্ষার্থী
ছবি : সংগৃহীত

করোনাভাইরাসের কারণে মার্চের মাঝামাঝি সময় থেকে বন্ধ হয়ে গেছে লন্ডনের ১৬ বছর বয়সী থিওনি বোসম্যান কুরশির স্কুল। পরিবারের সঙ্গে ঘরবন্দি অবস্থায় সময় কাটছে তার। যদিও তার স্কুল অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করেছে; কিন্তু সে নিজের পড়াশোনার অবস্থা নিয়ে সন্তুষ্ট নয়।

পরিবার আর্থিকভাবে সচ্ছল না হওয়ায় অনলাইনে পড়াশোনার উপকরণগুলো সংগ্রহ করা, পড়াশোনার উপযুক্ত পরিবেশ পাওয়া কঠিন তার জন্য। ফলে মানসিক চাপে থাকতে হচ্ছে তাকে। মক টেস্টগুলোতে ভালো ফল অর্জন করাও বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।

কুরশির মতো সমস্যায় আছে সারা বিশ্বের অনেক শিক্ষার্থী। ইউনেস্কোর তথ্য মতে, বিশ্বজুড়ে প্রায় ১৯০টি দেশের শিক্ষার্থীরা লকডাউনে আছে। অর্থাৎ স্কুল বন্ধ থাকার কারণে সারা বিশ্বের ৯০ শতাংশেরও বেশি শিক্ষার্থী এখন বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করছে।

এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ ও আমেরিকার বেশ কয়েকটি দেশের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে সিএনএন জানিয়েছে, সব দেশেই আর্থিকভাবে সচ্ছলদের তুলনায় অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ধনীদের মতো অনলাইন ক্লাসে অংশ নেওয়ার ডিভাইস, ইন্টারনেট সংযোগ, নিরাপদ ও পড়াশোনার উপযোগী পরিবেশ পাচ্ছে না তারা।

আর্থিক অনিশ্চয়তার কারণে তারা মানসিকভাবেও ভালো নেই। সব মিলিয়ে করোনা মহামারির পর ধনী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের ফলাফলের পার্থক্য অনেক বেড়ে যাতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সবচেয়ে বড় সমস্যাটি হচ্ছে, অনেক দেশেই সমাজের একটি বড় অংশের কাছে অনলাইনে ক্লাস করার মতো কম্পিউটার, অন্যান্য ডিভাইস ও ইন্টারনেট সংযোগ নেই। ২০১৯ সালের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, চীনে ৪০ শতাংশ লোকের ইন্টারনেট সংযোগ নেই।

একই বছরের হিসাব অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রে দুই কোটি ১০ লাখ মানুষের ব্রডব্যান্ড সংযোগ নেই। করোনা সংক্রমণের আগে করা আরেক গবেষণায় দেশটির ১৭ শতাংশ কিশোর শিক্ষার্থী জানায়, কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সুবিধার অপ্রতুলতার কারণে তারা প্রায়ই স্কুলের দেওয়া বাড়ির কাজ শেষ করতে পারে না।

পাশাপাশি দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য বাড়িতে পড়ার উপযুক্ত পরিবেশ পাওয়া কঠিন। অনেকে নিরাপদ পরিবেশও পাচ্ছে না। আন্তর্জাতিক সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেনের আফ্রিকার পলিসি ডিরেক্টর এরিক হ্যাজার্ড জানান, ২০১৫ সালে ইবোলা মহামারির সময় সিয়েরা লিওনে স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছিল।

আরও পড়ুন : ঈদ পর্যন্ত সব প্রাথমিক বিদ্যালয় ছুটি ঘোষণা

এ সময় করা এক গবেষণায় দেখা যায়, মেয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর সহিংসতা ও নির্যাতনের মাত্রা অনেক বেড়ে গেছে। করোনাতেও একই অবস্থা হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। তিনি আরো বলেন, নিম্ন আয়ের পরিবারগুলো অনেক শিশু শিক্ষার্থীকেই জোর করে অর্থ উপার্জনে নামিয়ে দিতে পারে। তাদের মধ্যে অনেকেই হয়তো পরে আর স্কুলে ফেরার সুযোগ পাবে না।

এদিকে মনোবিজ্ঞান বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার কারণে শিশুদের মানসিক চাপও অনেক বেড়ে গেছে। ভারতে পথশিশুদের নিয়ে কাজ করা একটি সংগঠনের পরিচালক চেতন গুপ্ত বলেন, এসব শিশু বাড়িতে বাড়িতে মা-বাবাকে ঝগড়া করতে দেখছে, পারিবারিক সহিংসতা দেখছে। ফলে তাদের মানসিক অবস্থা ভালো থাকছে না।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড