• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বিশ্ববিদ্যালয় বাড়লেও ঘাটতি শিক্ষার মানে

  শিক্ষা ডেস্ক

০৭ জানুয়ারি ২০২০, ১৪:৩২
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

বর্তমানে দেশে ১০৩টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। দিনদিন এ সংখ্যা বাড়লেও বাড়ছে না শিক্ষার মান। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নানান সমস্যার কথা উঠে এসেছে।

এছাড়াও শিক্ষা পরিষদ, সিন্ডিকেট, পরিচালনা পর্ষদ, অর্থ কমিটির সভা না করা, উপাচার্যসহ শীর্ষ তিন পদে নিয়োগে অনাগ্রহ, নিজস্ব ক্যাম্পাসে যেতে গড়িমসির মতো সমস্যা তো আছেই। পূর্ণকালীন শিক্ষক নিয়োগেও আছে গড়িমসি।

ইউজিসি প্রতিবেদনটি করেছে ২০১৮ সালের তথ্যের ভিত্তিতে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী ৩ লাখ ৬১ হাজার ৭৯২ জন। এর মধ্যে ছাত্রী ১ লাখ ১৪ হাজার ৬১৫ জন। শতাধিক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বড়জোর ১৫টি ভালোভাবে চলছে বা চলার চেষ্টা করছে।

ইউজিসি জানিয়েছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের অনেকাংশই লঙ্ঘিত হচ্ছে। এ জন্য এ বিষয়গুলো নিবিড় পর্যবেক্ষণে আনার সুপারিশ করা হয়েছে। গত ২৯ ডিসেম্বর প্রতিবেদনটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্য ও রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে জমা দিয়েছে ইউজিসি।

ইউজিসির একাধিক কর্মকর্তা জানান, বার্ষিক প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নিজেদের দেওয়া তথ্যের ওপর। সেখানেই এত অনিয়ম-অব্যবস্থার চিত্র রয়েছে। প্রকৃত অবস্থা আরও খারাপ।

অনেক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবছর নিয়ম মেনে নিরীক্ষা প্রতিবেদন দেয় না। অবশ্য গবেষণায় আগ্রহ কিছুটা বেড়েছে। ২০১৮ সালে ৭৭টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা খাতে কম-বেশি অর্থ ব্যয় করেছে। এই খাতে মোট ব্যয় ছিল ৯০ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, আটটি বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৮ সালে শিক্ষা পরিষদের সভা (অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল) করেনি। অথচ ভর্তিসহ শিক্ষা বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য শিক্ষা পরিষদের সভা লাগে। ওই বছর সিন্ডিকেটের সভা না হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১০টি। এছাড়া ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ে বোর্ড অব ট্রাস্টিজ এবং ১৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থ কমিটির সভা হয়নি।

ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘সমস্যাগুলো সমাধানে ইউজিসিকে পক্ষপাতহীন, প্রভাবমুক্ত এবং বস্তুনিষ্ঠভাবে তৎপর হতে হবে। তবে এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে আরও বেশি তৎপর হতে হবে। কারণ, ইউজিসির সুপারিশ বা পদক্ষেপগুলো কার্যকর করবে মন্ত্রণালয় ও সরকার।’

এ দিকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দেখভালের দায়িত্বে থাকা ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক মো. আখতার হোসেন বলেন, ‘বর্তমান অবস্থাকে একেবারে অসন্তোষ বলব না, পুরোপুরি সন্তুষ্টও বলব না। সমস্যাগুলো সমাধান করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এগিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।’

এ ব্যাপারে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির সভাপতি শেখ কবীর হোসেন বলেন, ‘তারা মনে করেন শিক্ষা পরিষদ, সিন্ডিকেটসহ এ ধরনের কমিটিগুলোর সভা নিয়মিত হওয়া উচিত। উপাচার্য, সহউপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নিয়োগ যে প্রক্রিয়ায় হয়, সেখানে সময় লাগে। কিন্তু ইউজিসি সে বিষয়গুলো না বলে কেবল না থাকার তথ্যটি তুলে ধরে। বাস্তবতা হলো, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও এসব পদ খালি থাকে।’

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক ১৬ হাজার ৭৪ জন। আইন অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগ বা প্রোগ্রামে খণ্ডকালীন শিক্ষক পূর্ণকালীন শিক্ষকের এক-তৃতীয়াংশের বেশি হবেন না। বর্তমানে যত পূর্ণকালীন শিক্ষক আছেন, এর প্রায় ৩৭ শতাংশ খণ্ডকালীন।

আরও পড়ুন : প্রাথমিকের ছুটির তালিকায় পরিবর্তন

ইউজিসির মতে, পূর্ণকালীন বা খণ্ডকালীন শিক্ষকের এই অনুপাত সন্তোষজনক নয়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর গড় অনুপাত ১ দশমিক ২২। কিন্তু ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই অনুপাত ১ দশমিক ৩০ বা তার বেশি। ইউজিসি বলছে, এটা কাঙ্ক্ষিত নয়। এর মধ্যে ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর অনুপাত ১ দশমিক ৮৫।

২০১০ সালে নতুন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন হওয়ার পর অন্তত ছয়বার সময় দেওয়া হলেও সাত বছরের বেশি বয়সী মাত্র ২১টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব ক্যাম্পাসে গেছে। বাকিরা কেউ ক্যাম্পাস নির্মাণ করছে, কেউবা জায়গা কিনেছে।

ওডি/জেআই

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড