• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

তিতুমীর কলেজে ‘বেলায়েত চত্বর’

  মামুন সোহাগ, জিটিসি প্রতিনিধি

২৪ অক্টোবর ২০১৯, ১৪:৩৮
তিতুমীর কলেজ
বেলায়েত মামার স্মৃতিচারণে ‘বেলায়েত চত্বর’ (ছবি : দৈনিক অধিকার)

রাজধানী ঢাকার সরকারি তিতুমীর কলেজে বেলায়েত চত্বর নামে শিক্ষার্থীদের একটি বসার স্থানকে নির্বাচন করা হয়েছে। কলেজের প্রধান গেটের ঠিক পেছনে, দ্বিতীয় গেটের রাস্তা যেতে বাম হাতে দেখা মিলবে সদ্যঘোষিত এই বেলায়েত চত্বরের।

বেলায়েত মামা নামে একজন তিতুমীর কলেজে জীবনের পুরোধা জুড়ে লেবুপাতার চা বিক্রি করেছেন। সাধারণ সকল শিক্ষার্থীর মনে বড় বেশি জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। ঝড়বৃষ্টি কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে তিনি চলে আসতেন ভালোবাসার, নিজের আয় রোজগারের তিতুমীর কলেজ ক্যাম্পাসে।

তিনি কিডনিজনিত রোগে আক্রান্ত ছিলেন। এক বছর আগে তার দুইটি কিডনিই নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। তারপরও সব অসুস্থতা পেছনে ফেলে তিনি তিতুমীরের মাটিতে আসতেন চা বিক্রি করতে। লেবু পাতার এক দারুণ স্বাদের চা বিক্রি করতেন তিনি।

তাকে নিয়মিত ডায়ালাইসিস করাতে হতো। প্রয়োজন হতো অনেক টাকা। অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে প্রায়ই সময়মতো ডায়ালাইসিস করতে পারতেন না। বিষয়টি জানার পর তিতুমীরের অনেক শিক্ষার্থীই তাকে সাহায্য করত চিকিৎসা করার জন্য। কলেজ ছাত্রলীগ তাদের নিজ উদ্যোগে কয়েকবার অর্থ সংগ্রহ করেও তাকে সহায়তা করেছে।

গেল ১৪ অক্টোবর (সোমবার) গ্রামের বাড়িতে তিতুমীর কলেজের এই পরিচিত মুখ পরলোকগমন করেন। তার মৃত্যুতে সমবেদনা জানিয়েছেন তিতুমীরের সকল শিক্ষক শিক্ষার্থী। বেলায়েত মামার স্মৃতিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য আক্কাসুর রহমান আখি ছাত্রাবাসের ছাত্ররা মিলে ক্যাস্পাসে বেলায়েত চত্বর ঘোষণা করেছে।

বেলায়েত মামার স্মৃতিচারণে সাইফুল ইসলাম নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, একদিন চা দেবে কী না জানতে চাইলে বলেছিলাম মামা পকেট খালি আজ। উনি বলেছিলেন, ‘টাকা লাগবে না এখন। পরে দিয়েন। নেন মামা চা খান।’

রাকিব হাসনাত নামে এক শিক্ষার্থী বলে, উনি অসুস্থ শরীর নিয়েও চা বিক্রি করেছেন। শেষ সময়গুলোতে স্ত্রীকে সঙ্গে করে নিয়ে আসতেন। আমরা চা না খেলেও ৫-১০ টাকা হাতে দিতাম।

এ বিষয়ে কলেজ উপাধ্যাক্ষ ড. আবেদা সুলতানা বলেন, বেলায়েত নামে লোকটি দীর্ঘদিন আমাদের কলেজে চা বিক্রি করেছেন। তার মৃত্যুতে আমরা শোকাহত।

কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি মো. রিপন মিয়া বলেন, বেলায়েত মামা তিতুমীর কলেজে সবার কাছে পরিচিত ছিলেন। কলেজের একমাত্র ছাত্রাবাসের ছেলেরা তার স্মৃতিচারণে ‘বেলায়েত চত্বর’ নামকরণ করেছে একটি স্থানকে। আমাদের কাছে চিরঅম্লান তিনি।

ওডি/আরএআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড