ঢাবি প্রতিনিধি
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) পাকিস্তানি অধ্যাদেশ বাতিল করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আইন প্রণয়ন এবং ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। সোমবার (১৪ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যে পাদদেশে আয়োজিত মানববন্ধনে এ দাবি জানান সংগঠনটির নেতারা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ, মুক্তিযোদ্ধা পরিবারদের অধিকার নিয়ে কথা বলার পাশাপাশি সমাজ ও রাষ্ট্রের সকল অন্যায়-অবিচার-অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে আসছে। বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের নির্মম হত্যাকাণ্ডে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছে। আবরার হত্যাকাণ্ডে জড়িত সকলকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। ইতোমধ্যে অপরাধীদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
নেতারা আরও বলেন, এ জন্য সরকার এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে ধন্যবাদ। কয়েকদিনের পর্যবেক্ষণে আমরা লক্ষ্য করেছি আবরার ফাহাদের হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচারে সরকার যথেষ্ট আন্তরিক এবং গুরত্ব সহকারে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার সরকার সমাজ ও রাষ্ট্রে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। যার প্রমাণ আপনারা ইতোমধ্যে দেখেছেন। নিজ দলের মধ্যে কোনো অপরাধী থাকলে তাকেও ছাড় দেওয়া হচ্ছে না।
আবরার হত্যাকারীদের দৃষ্টামূলক শাস্তির দাবি করে তারা বলেন, আবরার হত্যাকারীরা কোনো ছাড় পাবে না এবং তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করলাম আবরার হত্যাকাণ্ডের পর বুয়েট প্রশাসন কর্তৃক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হলো। মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ এমন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছে। কোনো রোগ হলে ঔষধ দিয়ে চিকিৎসা করতে হয়। পুরো অঙ্গ কেটে ফেলা অযৌক্তিক।
পাকিস্তানি অধ্যাদেশে চলা বুয়েট থেকে কখনোই পাকিস্তানি ভূত নামেনি। কয়েকবার গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল বুয়েটে ওড়ে না জাতীয় পতাকা। বিভিন্ন হল ও ইনস্টিটিউটের সামনে পতাকার স্ট্যান্ড থাকলেও সেখানে পতাকা ওড়ে না। ১৯৬২ সালের পাকিস্তানি ভাবধারার অধ্যাদেশ বাংলাদেশের সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সংবিধানে সভা ও সমাবেশ করার অনুমতি রয়েছে। কিন্তু মনে হচ্ছে বুয়েট প্রশাসন পাকিস্তানি ভাবধারায় পরিচালিত হতে চায়।
সমাবেশ থেকে সরকারের কাছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের পক্ষ থেকে চার দফা দাবি তুলে ধরেন।
দাবিগুলো হলো- স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের ১৯৬২ সালের পাকিস্তানী অধ্যাদেশ বাতিল করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বুয়েট পরিচালনা করার জন্য নতুন অধ্যাদেশ প্রণয়ন করতে হবে।
আবরার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত দায়িত্ব পালনে গাফিলতি এবং ব্যর্থ হলের প্রাধ্যক্ষ, হাউস টিউটরদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
যারা ইতোমধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন তাদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে, প্রগতিশীল ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার অপরাধে, প্রতিক্রিয়াশীল জামাত-শিবির-জঙ্গিদের রাজনীতি করার সুযোগ দেওয়ার অপরাধে এবং দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হওয়ায় বুয়েট উপাচার্যকে অপসারণ করতে হবে।
অবিলম্বে বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের ঘোষণা প্রত্যাহার করে ছাত্রশিবির-বিভিন্ন জঙ্গীগোষ্ঠী এবং এদের লালন-পালনকারী জড়িত শিক্ষকদের চিহ্নিত করে বহিষ্কার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মো. আল মামুনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন- সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক ইয়াসির আরাফাত তূর্য, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সোহেল রানা, সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক সোহেল মিয়া, সাবেক যুগ্মআহবায়ক মাসুদ রানা, আজমুল জিহাদ, জিয়া হলের সভাপতি মাহিমসহ প্রমুখ নেতারা।
ওডি/আরএআর
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড