• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বশেমুরবিপ্রবির সাবেক ভিসির ভাতিজার পদত্যাগ

  বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি

১৩ অক্টোবর ২০১৯, ১৭:৫৩
বশেমুরবিপ্রবি
সাবেক ভিসি নাসিরের ভাতিজা খোন্দকার মাহমুদ পারভেজ (ছবি : সম্পাদিত)

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক (আইআর) বিভাগের চেয়ারম্যান খোন্দকার মাহমুদ পারভেজ পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন।

রবিবার (১৩ অক্টোবর) বিকাল ৪টার সময় তিনি পদত্যাগ পত্র জমা দেন বলে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. নুরউদ্দিন আহমেদ।

এর আগে রবিবার সকাল ১০টা থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নামে বিভাগটির শিক্ষার্থীরা। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্বৈরাচারী আচরণ এবং অনৈতিকভাবে শিক্ষার্থীদের নম্বর কম দেয়ার অভিযোগ তুলে সকাল থেকে ক্লাস বর্জন করে বিভাগের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে তারা।

বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, খোন্দকার পারভেজ সাবেক উপাচার্য খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের ভাতিজা। ২০১৭ সালে সর্বপ্রথম সেকশন অফিসার হিসেবে বশেমুরবিপ্রবিতে যোগদান করেন তিনি। পরবর্তীতে অনার্স মাস্টার্সে দ্বিতীয় শ্রেণি থাকা সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে প্রভাষক পদে যোগদান করেন। এরপর মাত্র দেড় বছরেই সহকারী অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। প্রথমদিকে শিক্ষার্থীদের প্রতি স্নেহপূর্ণ আচরণ করলেও চেয়ারম্যান হওয়ার পর স্বেচ্ছাচারী হয়ে ওঠেন এই শিক্ষক। কথায় কথায় শিক্ষাজীবন নষ্ট করে দেওয়ার হুমকি দিতে শুরু করেন তিনি। নিজের ক্ষমতা প্রদর্শনের জন্য অ্যাসাইনমেন্ট ও পরীক্ষায় অকারণেই নম্বর কম দেন।

আইআর বিভাগের শিক্ষার্থী অভি রহমান বলেন, ‘তিনি সম্প্রতি একটি কোর্সের অ্যাসাইনমেন্টে ৩৪ জনকে শূন্য দিয়েছেন। আমরা যখন কারণ জানতে চেয়েছি তিনি বলেছেন তার ইচ্ছে হয়েছে তাই শূন্য দিয়েছে। একজন শিক্ষক কীভাবে এমন হতে পারে! তার আচরণে মনে হয়েছে আমরা তার খেলার পুতুল।’

আরেক শিক্ষার্থী সম্রাট জানান, ‘তিনি ভিসির ভাতিজা হিসেবে অবৈধভাবে নিয়োগ পেয়েছেন। ক্লাসেও ঠিকভাবে পড়াতে পারেন না। উইকিপিডিয়া দেখে দেখে বানান করে পড়ান। এছাড়া কোনো বিষয়ে প্রশ্ন করলেই রেগে যান, হুমকি দেন শিক্ষাজীবন নষ্ট করে দেওয়ার।’

এ দিকে এ সকল অভিযোগ অস্বীকার করে খোন্দকার মাহমুদ পারভেজ জানিয়েছেন, তার অনার্স-মাস্টার্সে দ্বিতীয় শ্রেণি রয়েছে সত্যি কিন্তু তার নিয়োগ অবৈধ নয়। কারণ নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্য প্রার্থীদের ক্ষেত্রে দুটি শর্ত শিথিল যোগ্য রয়েছে।’

বশেমুরবিপ্রবিতে তার পিএইচডি চলমান থাকায় এবং রবীন্দ্র জার্নালে চারটি প্রকাশনা থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় তাকে অধিকতর যোগ্য প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

আন্দোলন শুরুর দিকে আন্দোলন স্থলে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. রাজিউর রহমান। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের অভিযোগগুলো লিখিতভাবে জমা দিতে বলেন এবং আইনি প্রক্রিয়ায় অভিযোগগুলো প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেন শিক্ষার্থীদের।

এ দিকে প্রক্টরের আশ্বাসে লিখিত অভিযোগে ৩ দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে আন্দোলন প্রত্যাহার করেন শিক্ষার্থীরা। তারা জানান, তিন দিনের মধ্যে চেয়ারম্যানের পদ থেকে মাহমুদ পারভেজ পদত্যাগ না করলে তারা আরও কঠোর আন্দোলনে যাবে। কিন্তু এরই মধ্যে বিকালে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন খোন্দকার পারভেজ।

আরও পড়ুন :

১. ৩৫ জনকে অ্যাসাইনমেন্টে শূন্য দিলেন সাবেক ভিসির ভাতিজা

ওডি/এমএ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড