• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ইবির হলগুলোতে নেই পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা

  আবু সালেহ্ শামীম, ইবি প্রতিনিধি

১৩ অক্টোবর ২০১৯, ১০:০৯
ইবি
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ছবি : সংগৃহীত)

নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা। আবাসিক হলগুলোতে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার সল্পতাকে দুষছেন তারা।

গেল শুক্রবার (১১ অক্টোবর) বিকাল ৪টা, শহীদ জিয়াউর রহমান হলের মূল গেটে সাইকেলযোগে কয়েকজন স্কুল পড়ুয়া ছেলে এসে নামল। এরপর তারা কোনোরকম অনুমতির তোয়াক্কা না করে হলের ভেতরে ঢুকে পড়ল। পিছু নিয়ে দেখা গেল গেস্টরুমে ইন্টারনেট ব্যবহার তাদের উদ্দেশ্য। কথা বলে জানা যায়, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংলগ্ন শেখপাড়া থেকে এসেছেন, ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য তারা প্রায়ই এখানে আসে এমনটাও জানান তারা।

এছাড়া হলগুলোর সামনে একটু খেয়াল করলেই দেখা যায় ভ্যানওয়ালা, হকাররা অবাধে ঢুকে পড়ছেন হলের ভেতরে। শুধু জিয়া হলেই নয়, বিনা বাধায় বহিরাগতদের অনুপ্রবেশের এমন চিত্র ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় প্রতিটি হলে। কে, কখন, কোথায় যাচ্ছে তার ওপর নেই সামান্য নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারি। আর এই সুযোগে ঘটছে চুরির মতো ঘটনা।

শিক্ষার্থীদের শঙ্কা বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে এর দায়ভার কে নেবে। হলে কোনো ধরনের অনভিপ্রেত পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে পরবর্তী সময়ে সিসি ক্যামেরা দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এমন অবস্থাও নেই। তারা ভীতসন্ত্রস্ত বলে জানিয়েছেন একাধিক শিক্ষার্থী। এ সমস্যা প্রতিরোধ ও প্রতিকারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানায় তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রশাসন ভবন এবং অনুষদগুলোতে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা থাকলেও এগুলো কতোখানি সচল আর কার্যকর এ বিষয়ে সন্দিহান সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

এ দিকে আবাসিক হলগুলো সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নতুন পুরাতন পাঁচটি ছাত্র হলের দুয়েকটিতে সিসি ক্যামেরা থাকলেও অধিকাংশ হল অরক্ষিত। এমনকি যেসব হলে সিসি ক্যামেরা আছে সেসব হলের সবগুলো ব্লক সিসি ক্যামেরার নজরদারিতে নেই বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটলে অপরাধীর পার পেয়ে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।

অপরদিকে ছাত্রী হলগুলোতেও নেই পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা। তিনটি ছাত্রী হলে প্রায় কয়েক হাজার ছাত্রীর বসবাস। তবে হলগেট আর নিচতলা ছাড়া এসব হলের কোথাও সিসি ক্যামেরা নেই বলে জানা গেছে। ফলে অরক্ষিত এসব হলে চুরির ঘটনা দৈনন্দিন ব্যাপার বলে জানিয়েছেন একাধিক ছাত্রী।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান, বিভিন্ন সময় বাইরে থেকে চোর, টোকাই ঢুকে পড়ার ঘটনা রয়েছে। এছাড়া ছাত্রী হল এলাকায় প্রায় প্রতিদিন স্থানীয়দের দ্রুতগতির মোটরবাইক ছোটানো, ছাত্রীদের প্রতি অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির খবরও শোনা যায় মাঝেমধ্যে। হল এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতাভুক্ত না থাকায় তারা উদ্বিগ্ন।

প্রগতিশীল শিক্ষকদের মতে, সমস্যা বলে কয়ে আসে না। হলের কিছু জায়গা সিসি ক্যামেরাভুক্ত থাকলেও বাকি জায়গাগুলোতে দুর্ঘটনা ঘটলে এর তথ্য প্রমাণাদি কিছুই পাওয়া যাবে না। শিক্ষার্থীদের পূর্ণ নিরাপত্তা বিধানের জন্য অতিদ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তারা।

এ বিষয়ে প্রক্টর ও প্রাধ্যক্ষ কাউন্সিল সূত্রে জানা যায়, বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বহিরাগত রুখতে জিরো টলারেন্স। ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তা দেওয়ার কথা বিবেচনা করে প্রতিটি হলের প্রতি ফ্লোরে সর্বত্র সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। বহিরাগতদের হলে অবস্থানের কোনো সুযোগ নেই। মাস্টার্স পরীক্ষা শেষে ১৫ দিনের বেশি কেউ হলে অবস্থান করতে পারবে না বলেও জানা গেছে।

এ বিষয়ে ইবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন উর রশিদ আসকারী বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে সদা বদ্ধপরিকর, ইবি শিক্ষার্থীদের অধিকতর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে করতে যা করার আমরা করছি। এ সময় তিনি বলেন, ইবিতে টর্চার সেল নামে কিছু থাকলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তড়িৎ গতিতে ব্যবস্থা নেবে। রাজনৈতিক এজেন্ডা ব্যবহার করে ইবিতে কোনো অপকর্মকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।

ওডি/আরএআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড