• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ইবি প্রক্টরের অপসারণ দাবিতে অবরুদ্ধ উপাচার্য

  ইবি প্রতিনিধি

২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ২২:৩৬
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
ছাত্রলীগের বিদ্রোহীদের বিক্ষোভ (ছবি : দৈনিক অধিকার)

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে সদ্য যোগদানকৃত প্রক্টরের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সাত দিনের মধ্যে ইবি ক্যাম্পাসকে মাদক, অ-ছাত্র ও অবৈধ ছাত্র মুক্ত করার প্রত্যয় নিয়ে তিনি প্রক্টর হিসেবে যোগদান করেন। এর আরে গত ৮ সেপ্টেম্বর থেকে আগামী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তাকে এ দায়িত্ব প্রদান করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

কিন্তু প্রক্টর হিসেবে যোগদানের ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই বিভিন্ন অভিযোগ এনে প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবুরের অপসারণ চেয়েছেন ছাত্রলীগের বিদ্রোহী ও পদ বঞ্চিত গ্রুপের নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে সারাদিন উত্তপ্ত ছিল ক্যাম্পাস। অপরদিকে প্রক্টর মাহবুবুরের পূর্ণ মেয়াদে নিয়োগ চেয়ে আগামী কাল সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে মানববন্ধন ডেকেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, ইবি ক্যাম্পাসকে মাদক, অ-ছাত্র ও অবৈধ ছাত্র মুক্ত করার প্রত্যয় নিয়ে শনিবার থেকেই কাজ শুরু করে দিয়েছেন প্রক্টর ড. মাহবুব। তারই অংশ বিশেষ শনিবার রাতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আবাসিক হলের সামনে বসে সকলের সহযোগিতা চান এবং কিভাবে ক্যাম্পাস থেকে মাদক নির্মূল করা যায় সে ব্যাপারে সবার কাছ থেকে বিভিন্ন পরামর্শ নেন। পাশাপাশি ক্যাম্পাসের কোথাও কেউ যদি মাদকের আভাস পায় তাহলে যেনো অবশ্যই প্রশাসনকে জানানো হয়। কিন্তু ৭ দিনের মধ্যে মাদক মুক্ত করার ঘোষণা শুনে মাদকাসক্ত শিক্ষার্থী ও মাদক ব্যবসায়ীদের মাঝে আতংক বিরাজ করছে।

শনিবার প্রক্টর হিসেবে যোগদানের দিনেই ছাত্রলীগের পদ বঞ্চিত ও বিদ্রোহী গ্রুপের নেতাকর্মীরা প্রক্টরের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দেয়। রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপাচার্যের কার্যালয়ে গিয়ে প্রক্টরের পদত্যাগের দাবি জানায়। কিন্তু আন্দোলনকারীদের কাছে কিছুদিন সময় চায় প্রশাসন।

তখন প্রশাসন ভবন থেকে বের হয়ে বিদ্রোহী গ্রুপের নেতা কর্মীরা প্রক্টরকে সময় না দিয়ে তাৎক্ষণিক পদত্যাগ চেয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক তালাবন্ধ করে কয়েক ঘণ্টা আটকিয়ে রাখে এবং প্রক্টরের পদত্যাগের দাবিতে নানা বিষাদাগারমূলক স্লোগান দিতে থাকেন। এতে দুপুরের শিফটের কোনো গাড়ি ক্যাম্পাস থেকে বের হতে পারেনি, এতে ভোগান্তিতে পড়েন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাবৃন্দ। তারা ভাড়া করা গাড়িতে নিজ নিজ গন্তব্য স্থলে যায়।

পরে দুপুর ৩ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক ছেরে প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নেয় আন্দোলনকারীরা। এরপর প্রক্টরকে অপসারণ করা না পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবে বলেও ঘোষণা দেয়। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত উপাচার্য প্রশাসন ভবনে অবরুদ্ধ অবস্থায় আছেন। প্রশাসন ভবনের দুই প্রধান ফটক তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। ভিতরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহিনুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ, সাংবাদিক বৃন্দ অবস্থান করছেন।

তাদের দাবি, ২০১৪ সালে বর্তমান প্রক্টরের নির্দেশে পুলিশ ছাত্রলীগের ওপর গুলি চালায়। এছাড়াও নিয়োগ বাণিজ্যের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা আছে। এদিকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি প্রক্টর মাহবুবুর রহমান গত দুই মেয়াদে শৃঙ্খলার সঙ্গে সুন্দর একটি ক্যাম্পাস উপহার দিয়েছেন। তাই তাকে তৃতীয় মেয়াদে প্রক্টর হিসেবে বহাল রাখার জন্যে আগামীকাল সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে প্রশাসনিক ভবনের সামনে মানববন্ধনের ডাক দেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমানকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘প্রশাসনের অনুরোধে ইবি ক্যাম্পাস থেকে ৭দিনের মধ্যে মাদক, অছাত্র ও অবৈধ ছাত্র মুক্ত করার প্রত্যয় নিয়ে স্বল্পমেয়াদী পুনঃ প্রক্টরের দায়িত্ব গ্রহণ করার কারণে তারা আজকে এই বিক্ষোভ মিছিল করছে, তারা যদি আনিত অভিযোগের একটি প্রমাণ করতে পারে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কাজ থেকে অব্যাহতি নিব।’

উল্লেখ্য, অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান আগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট, ছাত্র উপদেষ্টা ও দুই মেয়াদে প্রক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি প্রগতিশীল শাপলা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য এবং শিক্ষক সমিতির কার্যকরী সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. রাশীদ আসকারী বলেন, ‘অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবুর রহমান দীর্ঘকাল এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর পদে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং তার ভালো অভিজ্ঞতাও রয়েছে। এই ক্রান্তিকালীন মূহুর্তে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্ব দিয়েছি। তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ নিয়ে আসা হয়েছে সংশ্লিষ্ট তদন্ত কমিটি মাধ্যমে তা প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে অভিযুক্ত বলা ঠিক হবে না। যদি তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রমাণিত হয় তাহলে তাঁকে শুধু প্রক্টর পদ না থেকে চাকরি থেকেও অব্যাহতি দেয়া হবে।’

ওডি/এমএ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড