আরিফুল ইসলাম আরিফ, জাবি প্রতিনিধি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের ‘দুর্নীতির’ অভিযোগ এবং আন্দোলনের মধ্যেই ‘ফোনালাপ ফাঁস’ নতুন মাত্রা যোগ করেছে। গত রবিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদ্য পদচ্যুত সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর ক্যাম্পাসে এখন উন্নয়ন প্রকল্পে ‘দুর্নীতি’ নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
সোমবার প্রকাশ্যে ক্যাম্পাসে শোডাউন করেছে শাখা ছাত্রলীগের ‘বিদ্রোহী গ্রুপের শতাধিক নেতাকর্মী। ‘উপাচার্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সম্মানহানির’ অভিযোগ তুলে ‘ফোনালাপ ফাঁসের’ ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন নেতাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে এমন আশঙ্কা থেকেই এ শোডাউন করা হয়েছে বলে বিদ্রোহী গ্রুপের একাধিক নেতা নিশ্চিত করেছেন।
এ নিয়ে পুরো ক্যাম্পাসে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো বিবৃতি প্রদান করেনি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং উপাচার্য পন্থি শিক্ষকরা বলেছেন এই ফোনালাপ ফাঁস উপাচার্য বিরোধী পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র এবং উপাচার্যকে বিতর্কিত করার ষড়যন্ত্র।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় শতাধিক নেতাকর্মী নিয়ে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের নেতৃত্বে শোডাউন করেছে ছাত্রলীগের ‘বিদ্রোহী গ্রুপ’।
শোডাউন শেষে মুরাদ চত্বরে সাংবাদিকদের দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘আপনাদের টাকার বিষয়ে যদি কোনো আগ্রহ থাকে তাহলে আমাদের উপাচার্যের ছেলে টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকে এবং ড্রপ হওয়া পর্যন্ত তার ফোন কলের রেকর্ড যদি আপনারা সংগ্রহ করেন তাহলে সব খোলাসা হয়ে যাবে। বিশেষ করে ৯ তারিখ (আগস্ট) আমরা যে মিটিংটা করেছি ৯ তারিখের আগে এবং পরে উনার ফোনের রেকর্ডটা যদি আপনারা সংগ্রহ করেন তাহলে সব কিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে।’
এ দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে জনসংযোগ অফিস এবং উপাচার্য পন্থি শিক্ষকদের সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ’ থেকে পাঠানো পৃথক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গোলাম রাব্বানী ও সাদ্দাম হোসাইনের ফোনালাপ উপচার্যবিরোধী এবং উপাচার্যকে বিতর্কিত করার ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন মহাপরিকল্পনার নির্মাণ কাজের টাকা পয়সার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী এবং জাবি ছাত্রলীগের নেতা সাদ্দাম হোসাইন এবং হামজা রহমান অন্তরের ফোনালাপে উপাচার্যকে জড়িয়ে গত ১৫ সেপ্টেম্বর বিভিন্ন গণমাধ্যমে যে ফোনালাপ প্রকাশিত হয়েছে, তা অসত্য এবং উদ্দেশ্যমূলক।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দৃঢ়ভাবে জানাচ্ছেন যে, উপাচার্যের সঙ্গে টাকা ভাগের কোনো আলাপ হয়নি। তিনি কাউকেই অর্থ প্রদান করেননি। গোলাম রাব্বানী উপাচার্যকে বিতর্কিত করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এই ফোনালাপের গল্প তৈরি করেছেন।’
অপরদিকে উপাচার্য পন্থী শিক্ষকদের সংগঠন বলেছে, ‘আমরা অনেক আগে থেকেই বলেছি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে সুযোগ হিসেবে নিয়ে উপাচার্যকে পদত্যাগে বাধ্য করে নিজেদের মতলব হাসিলের জন্য একটি গোষ্ঠী চক্রান্তে লিপ্ত। এ গোষ্ঠীরই পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র ফোনালাপ সূত্র তৈরি করে উপাচার্যকে দুর্নীতির জন্য দায়ী করা।’
ওডি/এমএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড