• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে মেস মালিকরা

  আবু সাঈদ জনি, বেরোবি প্রতিনিধি

০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৮:২৫
বেরোবি
বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মেস (ছবি : সংগৃহীত)

এক দশক পেরিয়ে গেলেও উত্তরবঙ্গের প্রাণের বিদ্যাপীঠ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) শিক্ষার্থীদের জন্য তৈরি হয়নি পর্যাপ্ত আবাসন ব্যবস্থা। ফলে শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন সর্দারপাড়া, চকবাজার, খামারমোড় ও লালবাগ এলাকায় মেস ও ফ্ল্যাট বাসা ভাড়ায় থাকতে হচ্ছে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মেস মালিকরা স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের। বাড়ি ভাড়া নীতিমালার কোনো তোয়াক্কা না করে ইচ্ছে অনুযায়ী বাড়ি/ মেস ভাড়া নির্ধারণ করছে তারা।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছয়টি অনুষদের ২১টি বিভাগের প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। তাদের জন্য রয়েছে মাত্র তিনটি আবাসিক হল। এর মধ্যে ছাত্রদের জন্য দুইটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও শহীদ মুখতার ইলাহী হল এবং ছাত্রীদের জন্য শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল। ছাত্রদের জন্য নির্মিত আবাসিক হলের দুই-তৃতীয়াংশ সিট ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের দখলে। এমতাবস্থায় আবাসন সঙ্কট ও রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত না থাকার কারণে আবাসিক হলে জায়গা পাচ্ছে না সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিভিন্ন মেসে বাধ্য হয়ে ভাড়া দিয়ে থাকছে তারা।

অন্য দিকে বাড়ি ভাড়া নীতিমালা আইন ১৯৯১ কাগজে কলমে লিপিবদ্ধ থাকলেও এসব নীতিমালার তোয়াক্কা করছে না রংপুর সিটি কর্পোরেশন এলাকার আওতাধীন এসব মেস মালিকরা। এমতাবস্থায় এক ধরনের অসহায়ত্ব নিয়ে মেসে থাকতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় প্রায় দুই শতাধিক মেস রয়েছে। যেগুলোর অধিকাংশেরই নেই ন্যূনতম কোনো সুযোগ-সুবিধা। পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা অস্বাস্থ্যকর, হালকা বৃষ্টিতে পানি জমে যায়। নিয়মিত পানির ট্যাংক পরিষ্কার করা হয় না এবং বিভিন্ন ছাত্রাবাসের সামনে ময়লার স্তূপ জমে থাকতে দেখা যায়। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত ভাড়া। এক্ষেত্রে একই এলাকায় বিভিন্ন মেসে ভাড়ার ব্যবধান চোখে পড়ার মতো। এ সমস্ত মেসগুলোর ভাড়ার সঙ্গে রংপুর শহরের বাড়ি ভাড়ার বিশাল ফারাক। শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা না করেই মেস মালিকরা প্রতি বছর বাড়িয়ে দিচ্ছে সিটের (মেসের) ভাড়া। ফলে বাড়তি মেস ভাড়া মেটাতে হিমশিম খেতে হয় নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে ওঠে আসা সাধারণ শিক্ষার্থীদের।

ছাত্রদের চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া গুণতে হচ্ছে ছাত্রী মেসগুলোতে। বিশ্ববিদ্যালয় পার্শ্ববর্তী সেবা ছাত্রী মেসের শিক্ষার্থীরা জানায়, এখানে আমরা সিট ভাড়া দিচ্ছি ১৫০০-১৬০০ টাকা। যা ইউনিট প্রতি দাঁড়ায় ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা। লাভলী আক্তার নামক এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, সন্ধ্যায় একটু লেট করে মেসে ফিরলেই মেস মালিক খুব খারাপ ব্যবহার করেন। মাঝে মধ্যে অভিভাবকদের ফোন দিয়ে অভিযোগ করা হয়। ফলে কোনো অপরাধ না করেও বাবা-মায়ের চোখে অপরাধী হতে হয়।

সরদার পাড়া এলাকার বিভিন্ন ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলে, এখানে বিভিন্ন অজুহাতে চাঁদাবাজি করা হয়। কিছুদিন পরপর ফুটবল, ক্রিকেট টুর্নামেন্টের নাম করে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণের চাঁদা প্রত্যেক মেস থেকে নেওয়া হয়। রাফসান জনি নামক এক শিক্ষার্থী বলেন, তিন বছর আগে এক হাজার টাকা দিয়ে মেসে উঠেছিলাম যা এখন ১৩০০ টাকা। অথচ কোনো প্রকার সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মেস মালিক জানান, মেস মালিক সমিতি না থাকার কারণেই একেক মেসে একেক ধরনের ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। সমিতি না থাকায় মালিকরা কোনো নিয়মের তোয়াক্কা করে না, ফলে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। তবে মেয়েদের মেসে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা দেওয়া হয় বলে ভাড়া একটু বেশি নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র তাবিউর রহমান প্রধান বলেন, মেয়েদের জন্য শেখ হাসিনা হল তৈরি করা হচ্ছে। অল্প কিছু দিনের মধ্যেই এটির কাজ শেষ হবে। এতে করে মেয়েদের আবাসিক সমস্যাটা অনেকটাই লাঘব হবে। আর ছেলেদের হলের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে।

ওডি/আরএআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড