চবি প্রবিনিধি
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মধ্যরাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ছাত্রলীগের দুই গ্রুপ বিজয় ও সিএফসির মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত পাঁচ জন কর্মী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
শনিবার (৩১ আগস্ট) দিবাগত রাত ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী হলের সামনে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
আহতরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ১০-১১ শিক্ষাবর্ষের মো. ইলিয়াছ, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ওবায়দুর রহমান লিমন, লোক প্রশাসন বিভাগের ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের নিলয় হাসান, পরিসংখ্যান বিভাগের ১০-১১ বিভাগের মাহফুজুর রহমান, ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের ১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের প্রিয়াম রায় প্রান্ত।
জানা গেছে, কিছুদিন আগে সোহরাওয়ার্দী হলে সিএফসি গ্রুপের কর্মীদের রুম দখলে নেয় বিজয় গ্রুপের কর্মীরা। এ সময় তারা হল থেকে বিতাড়িত হয়। পরে শনিবার রাতে সিএফসি গ্রুপের কর্মীরা তাদের রুম ফের দখলে নিলে দুই গ্রুপে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এ সময় ব্যাপক ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে বিজয় গ্রুপকে সোহরাওয়ার্দী হল থেকে বিতাড়িত করে আলাওল হলের দিকে সিএফসি গ্রুপ ধাওয়া দেয়। এ সময় সিএফসি গ্রুপ আলাওলের সামনে অবস্থান নিলে দুই পক্ষের মধ্যে থেমে থেমে ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে বিজয় গ্রুপের নেতা ও সাবেক শাখা ছাত্রলীগের যুগ্মসম্পাদক এইচ. এম তারেকুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের নির্দেশে এই অতর্কিত হামলা চালানো হয়। তাকে আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করতে চেয়েছি। কিন্তু সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে রাজনীতি করার মন মানসিকতা তার নেই। তার মতো একজন অছাত্রের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের রাজনীতি কখনো সফল হবে না। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি এবং দ্রুত তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করার জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কাছে দাবি জানাচ্ছি।
শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল বলেন, বিজয় গ্রুপের নেতা ইলিয়াস হিযবুত তাহেরীর সঙ্গে যুক্ত এবং কিছু দিন আগে শাটল ট্রেনে পোস্টার লাগানোর কাজে যুক্ত ছিলেন। তিনি বিভিন্ন সময় অস্ত্র ঠেকিয়ে নেতাকর্মীদের হুমকি ধমকি দিতেন। রাতে হলে ছাত্রলীগ কর্মীদের অস্ত্র ঠেকালে তাকে প্রতিহত করেন। কমিটির শুরু থেকে তিনি ঝামেলা করে আসছেন। ইলিয়াস ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না। তাকে আমরা দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।
এ দিকে রাতের আঁধারে কে বা কারা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন পুলের গাড়িগুলোর চাকার বাতাস ছেড়ে দিয়েছে এবং কিছু গাড়ির স্টার্টিং সংযোগে সুপারগ্লু লাগিয়ে দিয়েছে। ফলে কোনো শিক্ষক বাস ক্যাম্পাস থেকে ছেড়ে যায়নি। পাশাপাশি বটতলী স্টেশনে বিশ্ববিদ্যালয়গামী শাটল ট্রেনের হোস পাইপ কেটে দেওয়া হয় এবং সহকারী লোকো মাস্টার অপহরণ করা হয়। তাই কোনো শাটল ট্রেনও বিশ্ববিদ্যালয় রুটে চলাচল করেনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন দপ্তর প্রশাসক অধ্যাপক ড. মো. রাশেদ উন নবী এবং ষোলশহর স্টেশন মাস্টার তন্ময় চৌধুরী।
শিক্ষকবাস বন্ধ এবং শাটলট্রেন বন্ধ থাকায় অনেক বিভাগেই বন্ধ রয়েছে ক্লাস পরীক্ষা। ক্যাম্পাসে তেমন একটা চোখে পড়ছে না শিক্ষার্থীদের উপস্থিতও। এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর প্রণব মিত্র চৌধুরী দৈনিক অধিকারকে বলেন, বাস এবং ট্রেন বন্ধ থাকায় ক্লাসই-পরীক্ষায় কিছুটা বিঘ্ন ঘটেছে। আমরা কথা বলেছি সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে। দ্রুত সবকিছু স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।
ওডি/আরএআর
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড