ক্যাম্পাস ডেস্ক
বাজারে বিক্রি হওয়া সব ব্র্যান্ডের ডিটারজেন্টে ক্যানসার সৃষ্টিকারী উপাদান তৈরিতে ভূমিকা রাখে। এমনটাই দাবি করছেন গবেষক মো. নাহিন মোস্তফা নিলয়। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী।
সম্প্রতি তার করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, সব ব্র্যান্ডের ডিটারজেন্টে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর ‘ফ্লুরোসেন্ট হোয়াইটেনিং এজেন্ট’ নামের পদার্থের অতিমাত্রায় উপস্থিতি পাওয়া গেছে। কাপড়ের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির জন্য ডিটারজেন্টে ব্যবহৃত এই উপাদান এলার্জি, চর্মরোগ, জিনগত পরিবর্তন, কিডনি রোগ ঘটায়। এমনকি এটি অতিবেগুনি রশ্মির সঙ্গে বিক্রিয়া করে ক্যানসার সৃষ্টিকারী উপাদান তৈরিতেও ভূমিকা রাখে।
এ ব্যাপারে গবেষক মো. নাহিন মোস্তফা নিলয় সাংবাদিকদের বলেন, গবেষণার জন্য বাজারে বিক্রি হওয়া ১০টি ডিটারজেন্ট ব্র্যান্ড নিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে। জনপ্রিয় ও বহুল ব্যবহৃত ব্র্যান্ডসহ অধিকাংশ ডিটারজেন্টেই ফ্লুরোসেন্ট হোয়াইটেনিং এজেন্টের পরিমাণ এবং প্রবলতা আদর্শিক পরিমাণের চেয়ে বেশি পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, ডিটারজেন্টে ‘ফ্লুরোসেন্ট হোয়াইটেনিং এজেন্ট’-এর প্রবলতা স্পেক্ট্রোফটোমিটার ও থ্রি-ডি এক্সাইটেশন এমিশন ম্যাট্রিক্সের সাহায্যে নির্ণয় করা হয়েছে।
নাহিন মোস্তফা আরও বলেন, অধিকাংশ ডিটারজেন্ট ফ্লুরোসেন্ট হোয়াইটেনিং এজেন্ট হিসেবে টিনোপোল নামের রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করে। এটা কাপড়কে সাদা ও উজ্জ্বল করতে সহায়তা করে। বাসাবাড়ি ও শিল্পকারখানায় কাপড় ধোয়ার টিনোপোল যুক্ত পানি পরবর্তীতে নদীনালা ও জলাশয়ের পানিতে মিশে যায়। পদ্মা নদী এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জলাশয়ের পানিতে ফ্লুরোসেন্ট হোয়াইটেনিং এজেন্টের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।
এছাড়া এই রাসায়নিক পদার্থ এতটাই ক্ষতিকর যে চূড়ান্ত পানি শোধনাগারেও তা সম্পূর্ণরূপে দূর করা যায় না। চূড়ান্ত পর্যায়ে পানি শোধনের জন্য ব্যবহৃত রাসায়নিক পদার্থের সঙ্গেও এটি বিক্রিয়া করে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী পদার্থ তৈরি করে ফেলে বলে জানান তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অধীনে ও অর্থায়নে পরিচালিত এ গবেষণাটির তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন জাবির পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শফি মুহাম্মদ তারেক।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. শফি মুহাম্মদ তারেক জানান, ডিটারজেন্টে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর পদার্থ থাকতে পারে তা আগে মানুষ বিবেচনা করেনি। সেই অর্থে গবেষণাটির প্রাথমিক ফল খুব গুরুত্বপূর্ণ। মানুষ এতে সচেতন হবে। গত মাসে ইউজিসিতে গবেষণা প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।
ওডি/আরএআর
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড