• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

জগন্নাথ হলে সক্রিয় ছিনতাই চক্র, অনিরাপদ ঢাবি ক্যাম্পাস

  ঢাবি প্রতিনিধি

২১ জুলাই ২০১৯, ১৯:৪৬
আহত শিক্ষার্থী
হামলায় আহত শিক্ষার্থী (ছবি : সংগৃহীত)

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে একের পর এক ছিনতাই, চুরি ও মারধরের ঘটনা ঘটছে। এসব ঘটনায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থাকা শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে একটি চক্র জড়িত।

শনিবার (২০ জুলাই) রাত ৯ টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে অবস্থান কৃত ছিনতাই চক্রের কবলে পড়েন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আহমেদ মামুন। এ সময় ছিনতাইকারীরা তার মোবাইল, মানিব্যাগ ও ঘড়ি ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করলে পাশে থাকা ঢাবির সলিমুল্লাহ মুসলিম (এস এম) হলের কয়েকজন শিক্ষার্থী বাধা দেন। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়।

এক পর্যায়ে ছিনতাই চক্রের সদস্যরা ঢাবির জগন্নাথ হল থেকে ৩০-৪০ জন শিক্ষার্থী ফোন দিয়ে এনে এসএম হলের শিক্ষার্থীদের রড, স্ট্যাম্প ও চেয়ার দিয়ে ব্যাপক মারধর করে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী নাজিমউদ্দীন সাইমুন, সাজ্জাদ ও পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী আকরাম হোসেন আহত হন। এদের মধ্যে গুরুতর আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি আছেন নাজিমউদ্দীন সাইমন।

জানা গেছে, ঢাবির জগন্নাথ হলে সংযুক্ত আইন বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী সুজয় বসু ও আরও কয়েকজনের একটি চক্র এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত। ইতোপূর্বে সুজয় বসুর বিরুদ্ধে মোটরসাইকেল ছিনতাইসহ প্রক্টর বরাবর একাধিক অভিযোগের খবর পাওয়া গেছে। সুজয় বসু ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাসের অনুসারী বলে জানা যায়।

পরে খবর পেয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ১ নম্বর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন বিন সাত্তারসহ এসএম হলের ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে যান। উভয় পক্ষের মাঝে তিন দফায় ধাওয়া- পাল্টা ধাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম ও পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

এ বিষয়ে হামলার শিকার নাজিমউদ্দীন সাইমুন বলেন, ‘রাত ৯ টার দিকে আমরা কয়েকজন বন্ধু শহীদ মিনারে আড্ডা দিচ্ছিলাম। হঠাৎ দেখি কয়েকজন ছেলে একটা লোকের সঙ্গে বাক বিতণ্ডা করছে। পরে আমরা এগিয়ে আসলে তারা আমাদের চলে যেতে বলে। এক পর্যায়ে ওরা ৩০-৪০ জন এসে রড, স্ট্যাম্প ও চেয়ার দিয়ে আমাদেরকে এলোপাথাড়ি মারধর করে। এতে আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাই।’

এ ঘটনার বিষয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন বিন সাত্তার বলেন, ‘আহমেদ মামুন আমার কাজিন। সে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। ঢাবি ক্যাম্পাসে ঘুরতে এসে ছিনতাইয়ের কবলে পড়লে আমি ঘটনাস্থলে যাই। বিষয়টি মীমাংসা করতে চাইলেও জগন্নাথ হলের ওই ছিনতাই চক্রটি উদ্ধত আচরণ করে।’

তিনি বলেন, ‘প্রক্টরিয়াল টিম এসে পরিস্থিতি শান্ত করলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বলে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছেন না তারা। এছাড়া রাজনৈতিক আশ্রয়ে ওরা ক্যাম্পাসে প্রায় সময়ই ছিনতাই ও চুরি-ডাকাতির মতো অসামাজিক কাজ করে যাচ্ছে।’

এ বিষয়ে ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস বলেন, ‘আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। যদি দোষ প্রমাণিত হয় তাহলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কখনো অনৈতিক কাজকে সমর্থন করেনি আর কখনো করবেও না।’

ঘটনার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড.একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘একটা ইন্সিডেন্টের খবর পেয়েছি। প্রক্টরিয়াল টিম সেখানে গিয়েছেন। তারপর দুই পক্ষের একটি মিউচুয়াল এর মাধ্যমে যার যার হলে ফিরে গেছে। জগন্নাথ হলের প্রভোস্ট মহোদয়ের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে, তিনি বিষয়টি দেখবেন।’

ক্যাম্পাসে অহরহ ছিনতাইয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ক্যাম্পাসে ছিনতাইয়ের ঘটনায় ছাত্রের জড়িত থাকা বিষয়টি অপ্রত্যাশিত। যারা শিক্ষার্থীদের জীবনমানের ওপর হামলা করে, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হতে পারেনা। এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, আমরা তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিবো। গত এক সপ্তাহে আমরা এ ধরনের চারজনকে থানায় পাঠিয়েছি। তারা সবাই এজাহার ভুক্ত আসামি।’

ওডি/এমএ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড