• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজের ১২ লাখ টাকা আত্মসাৎ

  নুরুজ্জামান খান, রাবি প্রতিনিধি

১৪ জুলাই ২০১৯, ১৫:৪৪
ইউনাইটেড টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটিউট
ইউনাইটেড টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটিউট (ছবি : দৈনিক অধিকার)

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অধীনস্থ ইউনাইটেড টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটিউটের বিএসসি (ইঞ্জিনিয়ারিং) কোর্সের ৩০ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ভর্তি, নিবন্ধন ফিস, সেমিস্টার ও পরীক্ষা ফিস বাবদ প্রায় ১২ লাখ টাকা আদায় করলেও বিষয়টি জানে না বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এমনকি ওই শিক্ষার্থীদের নিবন্ধন ফিস বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা না দেওয়ায় পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছেন না তারা। এতে বিপাকে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা।

ইন্সটিটিউট সূত্র জানায়, পবা উপজেলায় অবস্থিত ইনস্টিটিউটে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগে ৮ জন, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) ৭ জন ও সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ১৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হন। শিক্ষার্থীদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ভর্তি বাবদ ১০ হাজার টাকা, সেমিস্টার ফিস বাবদ ১৮ হাজার, পরীক্ষার ফিস বাবদ ৭ হাজার এবং রেজিস্ট্রেশন বাবদ পাঁচ হাজারসহ ৪০ হাজার টাকা করে আদায় করা হয়। ৩০ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রায় ১২ লাখ টাকা আদায় করা হলেও তাদের রেজিস্ট্রেশনের কোনো টাকা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শকের দপ্তরে জমা পড়েনি। ফলে তারা কেউই পরীক্ষা দিতে পারছেন না। গত ২৭ জুন থেকে রাবি অধীনস্থ অন্য ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলোর একই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা শুরু হয়েছে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানান, ইনস্টিটিউটে তাদের নিয়মিত ক্লাস হচ্ছে। অন্যান্য কলেজে পরীক্ষা শুরু হলেও তাদের না হওয়ায় ইনস্টিটিউটের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চাইলে তারা এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেহেদী হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। শিক্ষার্থীরা মেহেদীকে ফোন করলে তিনি ফোন রিসিভি করেননি। ফলে গত ২ জুলাই ভুক্তভোগীরা বাধ্য হয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শকের দপ্তরে যোগাযোগ করে জানতে পারেন বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের রেজিস্ট্রেশন হয়নি। রেজিস্ট্রেশন ফিস জমা না পড়ায় তারা পরীক্ষা দিতে পারছেন না।

ইনস্টিটিউটের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী রোমানা খাতুন বলেন, ‘রেজিস্ট্রেশন ফিস ও অন্যান্য ফিস বাবদ ৪০ হাজার টাকা দিয়েছি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে শুনরছি রেজিস্ট্রেশনের জন্য আমাদের কোনো টাকা জমা পড়েনি। কলেজ পরিদর্শক বললেন দুই বছর ধরে এখানের বিএসসি নবায়নের ফিস জমা পড়েনি। তারা ইনস্টিটিউট তুলে দেবেন। তাহলে আমাদের দায় কে নেবে?’

তিনি আরও বলেন, আমরা সবাই টাকা ফেরত চেয়েছি কিন্তু কর্তৃপক্ষ টাকা দিচ্ছে না। শুনেছি ব্যবস্থাপক বিভিন্ন জনের কাছ থেকে টাকা আত্মসাৎ করে পলাতক রয়েছে। তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা রয়েছে।’

সিভিল ইঞ্জিনিয়রিং বিভাগের মারুফ হাসান বলেন, ‘ভর্তি, রেজিস্ট্রেশন ও পরীক্ষার ফিস বাবদ দেওয়া টাকা ফেরত চাইলে কর্তৃপক্ষ দেওয়ার আশ্বাস দিচ্ছে তার বেশি কিছুই করছে না।’

এ বিষয়ে জানতে ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেহেদী হাসানকে ফোন করলে তার নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। পরে রাবির কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক এম. মজিবুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ওই ইন্সটিটিউট গত তিন বছর বিএসসি শাখার কোনো নবায়ন ফিস জমা দেয়নি। তারা শিক্ষার্থী ভর্তি করালেও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রেশন হয়নি। ফলে তাদের পরীক্ষা নেওয়ার সুযোগ নেই। আমরা ওই ইউনাইটেড ইন্সটিটিউটের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। তাদের অনুমোদন বাতিল করা হবে।’

মেহেদীর বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে নগরীর শাহ মখদুম থানার ওসি এসএম মাসুদ পারভেজ বলেন ‘তার বিরুদ্ধে মামলা নেই। চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে উল্লেখ করে একজন লিখিত অভিযোগ করেছেন। ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরাও তাদের নিকট থেকে টাকা নিয়েছে এমন অভিযোগ দিয়েছেন। আমরা তদন্ত করছি। প্রমাণ পেলে ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’

ওডি/এসএসকে

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড