• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বিতর্কিত ধারা বাতিলে জাবিতে সাংবাদিকদের মানববন্ধন

  জাবি প্রতিনিধি

০৮ জুলাই ২০১৯, ১৮:০১
মানববন্ধন
জাবিতে সাংবাদিকদের মানববন্ধন (ছবি : দৈনিক অধিকার)

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বিতর্কিত ও নিপীড়নমূলক ছাত্র শৃঙ্খলা বিধি ৫ এর (ঞ) ও (থ) নং ধারা বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকরা।

সোমবার (৮ জুলাই) দুপুর ২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিক’ দের ব্যানারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মাহমুদের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আচরণবিধি অংশে উল্লিখিত ৫ (ঞ) এবং ৫ (থ) উপধারা দুটি বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৯ (চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা ও বাক স্বাধীনতা) এবং অনুচ্ছেদ ৪০ (পেশা বৃত্তির স্বাধীনতা) এর পরিপন্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন কোনো পরিস্থিতির উদ্ভব হয়নি যেখানে ঢালাওভাবে উপধারায় উল্লিখিত কর্মকাণ্ড সংগঠিত হতে পারে। উপরন্তু, অসত্য, তথ্য বিকৃতি, অশালীন বার্তা বা অসৌজন্যতামূলক বার্তার কোনো সংজ্ঞা কিংবা ব্যাখ্যা না থাকার ফলে উপধারা দুটি নিপীড়নমূলক হয়ে উঠতে পারে এবং উঠবে এটাই স্বাভাবিক।’

জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী শাহিনুর রহমান শাহিন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তচিন্তার বিকাশ এবং লালন-পালনের যথাযথ স্থান। এই উপধারা দুটি ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে ভীতি ও শঙ্কা তৈরি করবে, যা শুভ নয়। ক্যাম্পাসে কর্মরত সংবাদকর্মীদের কাজের ক্ষেত্র সংকুচিত করবে এবং সাংবাদিকরা নিগ্রহের শিকার হতে পারেন।’

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মাদ দিদার বলেন, ‘এটি ‘‘দুরভিসন্ধিমূলক’’ ধারা। যা শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের প্রতিবাদী কণ্ঠস্বরকে চেপে ধরতে সাহায্য করবে। অবিলম্বে ধারা দুটি বাতিলের জোর দাবি জানাচ্ছি।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি আশিকুর রহমান বলেন, ‘এখানে আমরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রতিধ্বনি দেখতে পাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব নিবর্তনমূলক তৎপরতা রয়েছে সেগুলোর বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের অভিব্যক্তিকে এটা সংকুচিত করবে। যেহেতু প্রশাসন তাদের মতো করেই সত্য-অসত্য প্রতিপাদন করবে। ফলে এটার অপব্যবহারের সম্ভাবনা রয়েছে।’

সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদ জাবি শাখার সভাপতি শাকিলুজ্জামান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো সাংবাদিককে শাস্তি দিতে পারে না। যদি কেউ ‘মিথ্যা’ কিংবা ‘বিকৃত’ তথ্যে প্রকাশ করেন, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উচিত প্রচলিত আইনের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানানো।’

জাবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি তারিক প্লাবন বলেন, ‘ধারা দুটি সংযোজন করে প্রশাসন কর্তৃত্ব পরায়ণ মানসিকতার জানান দিচ্ছে। এটা অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার গণমাধ্যম কর্মী ও প্রতিবাদী শিক্ষার্থীদের থামিয়ে দেওয়ার প্রয়াস। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো মহান প্রতিষ্ঠানে এমন নিবর্তনমূলক নীতিমালা লজ্জাকর। প্রশাসনকে অবশ্যই এটি বাতিল করতে হবে।’

এ সময় বিভিন্ন পত্রিকায় কর্মরত প্রায় অর্ধশতাধিক সাংবাদিক ও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্যে, গত ৫ এপ্রিল অনুষ্ঠিত বিশেষ সিন্ডিকেট সভায় ধারা দুটি অনুমোদন পেয়েছে। জানাজানি হওয়ার পর এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের ভেতরে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত গণমাধ্যম কর্মী, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকেই মনে করছেন, ধারা দুটি স্বাধীন মতপ্রকাশ ও মুক্ত সাংবাদিকতা চর্চাকে রুদ্ধ করার জন্যই প্রণয়ন করা হয়েছে।

সংশোধিত বিধিতে ধারা দুটি লঙ্ঘন করার শাস্তির কথা বলা হয়েছে- লঘু শাস্তি হিসেবে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা, সতর্কীকরণ এবং গুরু শাস্তি হিসেবে আজীবন বহিষ্কার, বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার, সাময়িক বহিষ্কার ও পাঁচ হাজার টাকার ঊর্ধ্বে যেকোনো পরিমাণ জরিমানা করা হবে।

ওডি/এমএ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড