ক্যাম্পাস ডেস্ক
সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি বিভাগের মধ্যে ৫টি বিভাগকে অবৈধ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এই ঘোষণার পরপরই ঐ সকল বিভাগের প্রায় ১০০০ হাজার শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন অনিশ্চয়তার মুখে। তাদের দাবি, ইউজিসি শিক্ষার্থীদের জীবন অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছে।
এর আগে গত ১৮ জুন পত্রিকায় ‘গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান অবস্থা সংক্রান্ত গণ বিজ্ঞপ্তি’ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
ইউজিসি সূত্রে জানা যায়, নির্ধারিত প্রোগ্রামসমূহে মহামান্য হাইকোর্ট ডিভিশনের ছয় মাসের স্থগিতাদেশ থাকার জন্য (রিট পিটিশন নং ৭১৯৬/২০১৭) কমিশনের ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছিল। বর্তমানে উক্ত স্থগিতাদেশের কার্যকারিতা ভ্যাকেট হয়ে যাওয়ায় প্রোগ্রামসমূহ অনুমোদিত/বৈধ বলে বিবেচিত হবে না।’ তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈধ অন্যান্য প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বাঁধা নেই।
তবে গণ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি নির্ধারিত নিয়ম কানুন মেনেই বিভাগগুলো খোলার আবেদন করা হয়েছিলো। সর্বোচ্চ আদালতও বারবার বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে রায় দিয়েছে। আদালতের নির্দেশের ভিত্তিতে ২০১২ সাল থেকে বিভাগগুলো পরিচালিত হয়ে আসছে।
গত মাসে ইউজিসির ওয়েবসাইটে বিশ্ববিদ্যালয়টির বিবিএ, এনভায়রনমেন্ট সায়েন্স, এমবিবিএস, বিডিএস এবং ফিজিওথেরাপি বিভাগকে অবৈধ ঘোষণা করে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। যার ফলে নতুন শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী হারাতে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়টি। এমনকি বিগত শিক্ষাবর্ষের তুলনায় নতুন শিক্ষাবর্ষে কম সংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৯৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকালীন বিভাগগুলোর অনুমোদন নেওয়া হয়। কিন্তু শুরু থেকে সব বিভাগ চালু করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে ২০১২ সালের পর থেকে একে একে বিভাগগুলো চালু করতে গেলে ইউজিসি বাধা প্রদান করে। ২০১০ সালের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনে ইউজিসি এই বাধা দেয়। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিভাগ চালুর জন্য পুনরায় আবেদন করে। কিন্তু এরপর ইউজিসি আর অনুমোদন দেয় নি। এরপর প্রোগ্রাম পরিচালনে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হয় কর্তৃপক্ষ। এরপর হাইকোর্টের নির্দেশে এ সকল প্রোগ্রাম চলতে থাকে।
এ ব্যাপারে ফিজিওথেরাপি তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রী বলেন, ‘আমাদের জীবন অনিশ্চয়তার দিকে যাচ্ছে। জীবনের রঙ্গিন স্বপ্নগুলা এখন সাদাকালো মনে হয়। দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত।’
বিবিএ বিভাগের এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ‘সিদ্ধান্ত পরিবর্তনে আমরা কয়েক দফায় আন্দোলনও করেছি। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শুধু আশ্বাস দেয়। মনে হচ্ছে বিভাগটি বন্ধই হয়ে যাবে। আমরা এমনটা চাই না।’
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (চলতি দায়িত্ব) অধ্যাপক ডা. লায়লা পারভীন বানুকে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের পরিচালক ড. মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ অনুযায়ী নতুন বিভাগ খোলার শর্ত পূরণ না হওয়ার কারণেই প্রোগ্রামসমূহকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের দায় বিশ্ববিদ্যালয়ের, আমাদের না।’
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি বোর্ডের অন্যতম সদস্য ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘ইউজিসি চরম অন্যায় করেছে। আমরা সব নিয়ম মেনে বিভাগগুলো খুলেছি। কিন্তু ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান মান্নান সাহেব খামখেয়ালি করে অনুমোদন আটকে দেন। আমাদের নিজস্ব ৩০ একর জমিতে বিশাল ক্যাম্পাস, সার্বক্ষণিক ২৫০জন শিক্ষক, নির্বাচিত ছাত্র সংসদ, খেলাধুলার বিশাল মাঠ আছে।’
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘ইউজিসির বর্তমান চেয়ারম্যান অত্যন্ত ভালো মানুষ। আমার বিশ্বাস, বিভাগগুলোর কার্যক্রম নিয়ে যে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে তার সমাধান তিনি করবেন।’
ওডি/এমএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড