ক্যাম্পাস ডেস্ক
১৬ দফা দাবিতে ৫ম দিনের মতো আন্দোলনে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১৯ জুন) সকাল সাড়ে ১০টায় আজকের দিনের আন্দোলন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে অবস্থান নেয় আন্দোলনকারীরা।
এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবনে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
সূত্র জানায়, ‘প্রশাসনের কালো হাত ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’, ‘প্রহসনের প্রশাসন মানি না, মানি না’, ‘স্বৈরাচারী প্রশাসন মানি না, মানব না’, ‘স্বৈরাচারের ঠিকানা, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে হবে না’, ‘আমাদের দাবি মানতে হবে, মানতে হবে’, ‘হৈ-হৈ, রৈ-রৈ ভিসি স্যার গেল কই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দিতে শহীদ মিনারের সামনে প্রায় আধা ঘণ্টা অবস্থান করে বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা। পরে তারা উপাচার্যের ভবনের সামনে প্রায় এক ঘণ্টা অবস্থান করার পর মিছিল নিয়ে স্লোগান দিতে দিতে পলাশী সড়কের ওপর অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। এ সময় দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবে বলে ঘোষণা দেয় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনের মুখপাত্র হাসান সারোয়ার সৈকত সাংবাদিকদের জানান, আমাদের যৌক্তিক আন্দোলনকে বুয়েট শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে সমর্থন জানানো হয়েছে। অধ্যাপক ডা. এ কে এম মাকসুদ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
সেখানে উল্লেখ করা হয়, বর্তমান উপাচার্যের কর্মকাণ্ডে আমরা শিক্ষকরা সন্তুষ্ট নই। শিক্ষার্থীরা যেসব দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে তা যৌক্তিক। তাদের আন্দোলনের সঙ্গে বুয়েট শিক্ষকরা সংহতি প্রকাশ করেছে।
শুধু তাই নয়, দেশের বিভিন্ন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরাও বুয়েট শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বলে দাবি করছে আন্দোলনকারীরা।
বুয়েট আন্দোলনের মুখপাত্র মেকানিক্যাল বিভাগ শেষবর্ষের ছাত্র হাসান জানান, দাবি আদায় ছাড়া আমরা ক্লাসে ফিরে যাব না। আমরা গত পাঁচ দিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া দেওয়া হয়নি। এ কারণে আমরা বাধ্য হয়েই বুধবার রেজিস্ট্রার ভবনে তালা লাগিয়ে দিয়েছি।
তিনি আরও জানান, আমাদের আন্দোলনকে বুয়েট শিক্ষক সমিতি সমর্থন জানিয়েছেন। যৌক্তিক আন্দোলন বলেই তারা এতে সংহতি প্রকাশ করেছেন। বিভিন্ন সময়েও আমরা এসব দাবিতে আন্দোলন করেছি, আমাদের শুধু আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তবে এবার দৃশ্যমান বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- বুয়েট গেটের জন্য সিভিল-আর্কিটেকচার ডিপার্টমেন্টের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কমিটি গঠন করতে হবে ও ডিজাইনের জন্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা আয়োজন করার অফিসিয়াল নোটিশ দিতে হবে, বিতর্কিত নতুন ডিএসডাব্লিউকে (ছাত্রকল্যাণ পরিচালক) অপসারণ করে ছাত্রবান্ধব ডিএসডাব্লিউ নিয়োগ দিতে হবে, ছাত্রী হলের নাম ‘সাবেকুন নাহার সনি হল’ হিসেবে নামকরণ করতে হবে, ১০৮ ক্রেডিট অর্জনের পর ডাবল সাপ্লি দেওয়ার যে পদ্ধতি গত টার্মে চালু হয়েছিল সেটা পুনর্বহাল রাখতে হবে, আবাসিক হলগুলোর অবকাঠামোগত যেসব কাজ উপাচার্যে অফিসে আটকে আছে সেটা ক্লিয়ার করতে হবে, সিয়াম-সাইফ সুইমিংপুল কমপ্লেক্স স্থাপনের জন্য উপাচার্যের সিগনেচারে নোটিশ দিতে হবে, নির্মাণাধীন টিএসসি ভবন ও নেম ভবনের কাজ শুরু করতে হবে, নিয়মিত শিক্ষক মূল্যায়ন প্রোগ্রাম চালু করতে হবে, বুয়েটের যাবতীয় লেনদেনের ডিজিটালাইজেশান প্রক্রিয়ার অফিশিয়াল উদ্যোগ নিতে হবে, নির্বিচারে ক্যাম্পাসের গাছ কাটা বন্ধ করতে হবে, কেন গাছ কাটা হয়েছে সেটার ব্যাখ্যা দিতে হবে, যতগুলো গাছ কাটা হয়েছে তার দ্বিগুণ গাছ উপাচার্যকে উপস্থিত থেকে লাগাতে হবে, গবেষণায় বরাদ্দ বাড়াতে হবে, প্রাতিষ্ঠানিক মেইল আইডি দিতে হবে, বুয়েট ওয়াইফাই আধুনিকায়ন করতে হবে, ব্যায়ামাগার আধুনিকায়ন করতে হবে, বুয়েট মাঠের উন্নয়ন করতে হবে এবং পরীক্ষার খাতায় রোলের পরিবর্তে কোড সিস্টেম চালু করতে হবে।
ওডি/আরএআর
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড