বুয়েট প্রতিনিধি
১৬ দফা দাবিতে টানা তৃতীয় দিনের আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। কিন্তু শিক্ষার্থীদের অহিংস এবং যৌক্তিক দাবিতে পরিচালিত এই আন্দোলন ও উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বুয়েট কর্তৃপক্ষকে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা যায় নি। প্রশাসন ছিলো নীরব!
সোমবার (১৭ জুন) সকাল ১১টা থেকেই শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে জড়ো হতে থাকে। সাড়ে ১১ টার দিকে তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে মিছিল শুরু করে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গা প্রদক্ষিণ করে উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন।
এ সময় তারা বিভিন্ন স্লোগানে স্লোগানে দাবি আদায়ের ব্যাপারে ও কর্তৃপক্ষের টনক না নড়ার ব্যাপারটি তুলে ধরেন। আমাদের দাবি আমাদের দাবি, মানতে হবে মানতে হবে; প্রশাসনের কালো হাত, ভেঙ্গে দাও গুড়িয়ে দাও; স্বৈরাচারীর ঠিকানা, এই বুয়েটে হবে না; হৈ হৈ রৈ রৈ, ভিসি স্যার গেলো কই- স্লোগানে স্লোগানে শিক্ষার্থীরা তাদের কথাগুলো তুলে ধরেন।
তথ্যসূত্রে জানা যায়, আন্দোলনের তৃতীয় দিনেও শিক্ষার্থীদের সাথে উপাচার্য ডা. সাইদুর রহমান দেখা করেন নি। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি দিতে উপাচার্য অফিসে গেলেও সেখানে উপাচার্য মহোদয়ের দেখা মেলেনি। উল্টো অফিসে ভেতর থেকে তালা লাগানো ছিলও বলেও শিক্ষার্থীরা দাবি করেন।
পরে তারা ১৬ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপিটি সহকারী ডিএসডব্লিউ মোস্তফা আলীর হাতে তুলে দেন। আন্দোলনের নেতৃত্ব দানকারী ব্যাচ ১৫ এর পক্ষ থেকে বলা হয়, আমাদের দাবিগুলি যৌক্তিক হলেও কর্তৃপক্ষ আমাদের গুরুত্ব দিচ্ছেন না। দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। কাল থেকে আন্দোলন আরও তীব্র হবে। আমরা আন্দোলন করলেও আজ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে প্রশাসনিক কাজ বন্ধ করিনি। এজন্য ৬ নম্বর গেট খোলা রেখেছি। কিন্তু দাবি না মানা হলে ৬ নম্বর গেট এবং উপাচার্য ভবনের গেটেও কাল থেকে তালা ঝুলবে।
তবে শিক্ষার্থীদের দাবি না মানা হলে কাল (মঙ্গলবার) থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল প্রশাসনিক কাজও বন্ধের হুমকি দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীরা ১৬ দফা দাবি আদায়ে গত শনিবার (১৫ জুন) থেকে আন্দোলন করে যাচ্ছেন। তাদের দেওয়া তিন দিনের আল্টিমেটামের আজ ছিল তৃতীয় তথা শেষ দিন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিকাল পর্যন্ত তাদের অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রাখে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- বুয়েট গেটের জন্য সিভিল-আর্কিটেকচার ডিপার্টমেন্টের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কমিটি গঠন করতে হবে ও ডিজাইনের জন্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা আয়োজন করার অফিসিয়াল নোটিশ দিতে হবে, বিতর্কিত নতুন ডিএসডাব্লিউকে (ছাত্রকল্যাণ পরিচালক) অপসারণ করে ছাত্র বান্ধব ডিএসডাব্লিউ নিয়োগ দিতে হবে, ছাত্রী হলের নাম ‘সাবেকুন নাহার সনি হল’ হিসেবে নামকরণ করতে হবে, ১০৮ ক্রেডিট অর্জনের পর ডাবল সাপ্লি দেওয়ার যে পদ্ধতি গত টার্মে চালু হয়েছিল সেটা পুনর্বহাল রাখতে হবে, আবাসিক হলগুলোর অবকাঠামোগত যেসব কাজ উপাচার্যে অফিসে আটকে আছে সেটা ক্লিয়ার করতে হবে, সিয়াম-সাইফ সুইমিংপুল কমপ্লেক্স স্থাপনের জন্য উপাচার্যের সিগনেচারে নোটিশ দিতে হবে, নির্মাণাধীন টিএসসি ভবন ও নেম ভবনের কাজ শুরু করতে হবে, নিয়মিত শিক্ষক মূল্যায়ন প্রোগ্রাম চালু করতে হবে, বুয়েটের যাবতীয় লেনদেনের ডিজিটালাইজেশান প্রক্রিয়ার অফিশিয়াল উদ্যোগ নিতে হবে, নির্বিচারে ক্যাম্পাসের গাছ কাটা বন্ধ করতে হবে, কেন গাছ কাটা হয়েছে সেটার ব্যাখ্যা দিতে হবে, যতগুলো গাছ কাটা হয়েছে তার দ্বিগুণ গাছ উপাচার্যকে উপস্থিত থেকে লাগাতে হবে, গবেষণায় বরাদ্দ বাড়াতে হবে, প্রাতিষ্ঠানিক মেইল আইডি দিতে হবে, বুয়েট ওয়াইফাই আধুনিকায়ন করতে হবে, ব্যায়ামাগার আধুনিকায়ন করতে হবে, বুয়েট মাঠের উন্নয়ন করতে হবে এবং পরীক্ষার খাতায় রোলের পরিবর্তে কোড সিস্টেম চালু করতে হবে।
ওডি/এমএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড