বশেমুরকৃবি প্রতিনিধি
অতিরিক্ত জরিমানা আদায়, বিভিন্ন বাড়তি ফি আদায়ের প্রতিবাদে আন্দোলনে নেমেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরকৃবি) শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনরতদের দাবি বিশ্ববিদ্যালয়টির নারী শিক্ষার্থীদের হলগুলোতে আটকে রেখে আন্দোলনে অংশ নিতে দেয়া হচ্ছে না।
রবিবার (২৬ মে) সকাল ১০টা থেকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ৩য় দিনের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে আন্দোলন শুরু করে। শিক্ষার্থীরা জানান, হঠাৎ করেই বশেমুরকৃবি প্রশাসন ঘোষণা দিয়েছে যদি কোনো শিক্ষার্থী ৮০% এর নিচে ক্লাসে উপস্থিত থাকে তাহলে তাকে জরিমানা দিয়ে চূড়ান্ত পরীক্ষায় বসতে হবে। শ্রেণীকক্ষে ৭০-৭৯% উপস্থিতি হলে ২০০০টাকা এবং ৬০-৬৯% উপস্থিতি হলে ৫০০০ টাকা জরিমানা ধার্য করা হয়েছে। যা একজন শিক্ষার্থীর জন্য অনেক বেশি।
জানা গেছে, ৮০% ক্লাসে উপস্থিতি না হলে জরিমানা করার বিষয়টি যুক্তিযুক্ত মনে হয়নি বশেমুরকৃবির শিক্ষার্থীদের। তাই তারা শিক্ষকদের সঙ্গে এ ব্যাপারে সুরাহা করতে গেলেও শিক্ষকরা কোন কথা বলেনি। তাই শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছে।
আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করে বলেন, সকালে আন্দোলন শুরু করার পর প্রশাসন বিভিন্নভাবে আন্দোলন বানচাল করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। মেয়েদের আবাসিক হল থেকে বের হতে দেওয়া হচ্ছে না। তাদেরকে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তাদের উদ্ধার করতে গেলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে প্রশাসন।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, দেশের ১৩ তম এই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়টি স্বায়ত্তশাসনের নামে শিক্ষার্থীদের প্রতি স্বৈরাচারী আচরণ করে যাচ্ছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হয়েও এখন পর্যন্ত কোর্স ক্রেডিট সিস্টেমে বছরে তিনটি টার্ম শেষ করে। প্রতি টার্ম শুরুর ১৭ দিনের মাথায় ১ম মিড, ১ম মিড শেষ হবার ১৫ দিনের মাথায় ২য় মিড, আবার ২য় মিড শেষ হবার ২৭ দিনের মাথায় ফাইনাল পরীক্ষায় বসতে হয় শিক্ষার্থীদের। এই মিডের মধ্যেও শিক্ষার্থীদের ক্লাস, ল্যাব ক্লাস, কুইজ পরীক্ষা যথারীতি চলতে থাকে। পাশাপাশি ৮০% ক্লাসে উপস্থিত না থাকলে চূড়ান্ত পরীক্ষায় বসতে দেয়া হয় না।
জরিমানার চাপ ও প্রতিবাদ (ছবি : দৈনিক অধিকার)
শিক্ষার্থীরা জানান, ৪ বছরে ২৪০ ক্রেডিট পড়ার কথা অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চিন্তাই করতে পারেন না। সেখানে স্নাতক পর্যায়ে চারটি অনুষদের মধ্যে কৃষি ও কৃষি অর্থনীতি অনুষদে চার বছরে ২৪০, ফিশারিজ অনুষদ ২৩০ এবং ভেটেরিনারি অনুষদ পাঁচ বছরে ২৮৩ ক্রেডিট পড়ানো হয়।
তাদের অভিযোগ, বছরে তিনটি টার্মের (প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির মত) শুরুতে প্রতি স্টুডেন্টের কাছে ফি বাবদ প্রায় ১২ হাজার টাকা নেয় প্রশাসন। তাই এ সকল স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত প্রতিরোধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে তিন দফা দাবি উত্থাপন করেছে।
শিক্ষার্থীদের ৩ দফা দাবি গুলো হলো-
১. ৮০% এর ক্লাসের উপস্থিতি ধরে যে জরিমানা ধরা হয়েছে সেটা বাতিল করতে হবে এবং পরীক্ষা দেওয়ার সর্বনিম্ন উপস্থিতি হার ৬০% করতে হবে। ২. অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে মিল রেখে এনরোলমেন্ট ফি ১০০০-১২০০ টাকার মধ্যে রাখতে হবে। ৩. ২টি মিড পরীক্ষার একটি বাদ দিতে হবে এবং পরীক্ষার পর কোন ক্লাস-ল্যাব দেয়া যাবে না।
উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীরা গত তিন দিন যাবত ক্লাস, পরীক্ষা ও ল্যাব বর্জন করে আসছে। এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আগামীকাল এ বিষয়ে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই সঙ্গে তারা ক্লাস, পরীক্ষা ও ল্যাব বন্ধ ঘোষণা করেছে।
ওডি/এমএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড