• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

‘আমরা তো অধিভুক্তির জন্য আন্দোলন করিনি’

  মো. রাকিবুল হাসান তামিম, ঢাকা কলেজ প্রতিনিধি

২৯ এপ্রিল ২০১৯, ১২:৩৫
সাত কলেজ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজ (ছবি : সংগৃহীত)

২০১৭ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন থেকে শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী সাতটি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত করা হয়। অধিভুক্ত করার পর থেকেই নানা জটিলতার মুখোমুখি হতে হয় অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের। পরীক্ষার দাবিতে রাস্তায় আন্দোলনে নেমে চোখ হারাতে হয় তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী সিদ্দিকুরকে।

এরপর সাম্প্রতিক সময়ে সাত কলেজে সেশনজট নিরসন, ত্রুটিমুক্ত ফল প্রকাশ, স্বতন্ত্র প্রশাসনিক ভবনসহ পাঁচ দফা দাবিতে আবারও আন্দোলনে নামে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।

গত ২৩ ও ২৪ এপ্রিল আমরণ অনশন, মানববন্ধন, মিছিল এবং রাস্তা অবরোধের পর ঢাবি কর্তৃপক্ষ শিগগরই এ সকল সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেয়। এর প্রেক্ষিতে রবিবার (২৮ এপ্রিল) সাত কলেজের অধ্যক্ষদের সঙ্গে বৈঠক করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। বৈঠকে বেশ কিছু সমস্যার সমাধানে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় যদিও এখনো এই ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এ সকল সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু বকর বলেন, সাত কলেজের সকল প্রতিনিধি একসঙ্গে বসে পরবর্তী কার্যক্রমের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে এবং আগামীকাল সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত প্রতিক্রিয়া এবং কর্মসূচি সম্বন্ধে জানানো হবে। তবে শেষ পর্যন্ত আজকের বৈঠক বা সিদ্ধান্ত সমূহের কোনো লিখিত বক্তব্য না পাওয়ায় সোমবারের সংবাদ সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে।

তবে সাম্প্রতিক সময়ের ঢাবি অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন কতটুকু ফলপ্রসূ হলো এই ব্যাপারে আন্দোলনের সমন্বয়ক ঢাকা কলেজের স্নাতকের (২০১৪-১৫ সেশনের) বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আবু বকর কথা বলেন দৈনিক অধিকারের ঢাকা কলেজ প্রতিনিধির সঙ্গে।

আন্দোলনর সার্বিক ব্যাপারে আবু বকর বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পড়াশোনার মান উন্নয়নের জন্য অধিভুক্ত হবার পর থেকে নানা অসঙ্গতি নিয়ে বারবার দাবি আদায়ের জন্য কিছু দিন পরপর আমাদের রাস্তায় নামতে হচ্ছে, এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। এতে করে জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। কিন্তু আমরা একপ্রকার বাধ্য হয়েই রাস্তায় নেমেছি। এভাবে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবনে অনিশ্চিত নেমে আসা বা সেশনজটের শিকার হবেন, তা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা চাই আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার সুষ্ঠু পদ্ধতি।

অনেক ক্ষেত্রে পরীক্ষার হলে গিয়ে প্রশ্নপত্র পাবার পর আমরা জানতে পারি যে কোন পদ্ধতি বা প্যাটার্নে আমরা পরীক্ষা দিতে যাচ্ছি। নেই কোনো সুনির্দিষ্ট সিলেবাস বা দিক নির্দেশনা। এভাবে তো আসলে চলতে পারে না। আমরা প্রশাসনের নিকট সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা আশা করছি।

আন্দোলন কতটুকু ফলপ্রসূ হলো এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা আশা করি আন্দোলনে যে সকল দাবি উপস্থাপন করা হয়েছে, সেগুলো দ্রুতই সমাধান হবে। আসলে এই সকল সমস্যার সমাধান হলেই বলতে পারব আন্দোলন সার্থক হয়েছে।

আপনারা কী অধিভুক্তি বাতিল হোক এমনটা ভাবছেন? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রশি-টানাটানির মধ্যে পড়ে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এর দায় কে নেবে? আমরা এমনিতেই অনেক পিছিয়ে গিয়েছি। আমরা তো অধিভুক্তির জন্য আন্দোলন করিনি। প্রশাসন স্বপ্রণোদিত হয়ে এটি করেছে। আর এখন আমরা অতিভুক্তির বাতিলও চাই না। এই মুহূর্তে আমরা চাচ্ছি না আমাদের সময় আরও নষ্ট হোক। বরং সমস্যার সমাধানে পদক্ষেপ গ্রহণ করার মাধ্যমে আমাদের পড়াশোনার সুষ্ঠু স্বাভাবিক পদ্ধতি নিশ্চিত করা হোক।

সর্বোপরি আপনি কি মনে করছেন? আপনাদের পাঁচ দফা দাবি মেনে নিলেই চলমান সংকট নিরসন হবে? জবাবে তিনি বলেন, আমরা বার বার একটি কথাই বলছি যে আমরা চাচ্ছি আমাদের পড়াশোনার মানোন্নয়ন হোক। আমাদের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- সময়মতো পরীক্ষা নেওয়া ও ফল প্রকাশ করা, যে পরীক্ষায় গণহারে অকৃতকার্য করানো হয়েছে, সেই পরীক্ষার উত্তরপত্র পুনরায় মূল্যায়ন করা ও শিক্ষা বর্ষপঞ্জি তৈরি করা। এসব দাবির কোনোটাই অযৌক্তিক নয়। এর পাশাপাশি আরও কিছু বিষয় এ পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার। যেমন- কলেজগুলোতে অনেক সময় নিয়মিত ক্লাস হয় না। শিক্ষকরা পড়ানোর ব্যাপারে আন্তরিক নয়। অবকাঠামোগত উন্নয়ন, লাইব্রেরিতে বইয়ের সংখ্যা বৃদ্ধি করা সহ নানাবিধ সুযোগ তৈরি করে দেবার মাধ্যমে আমাদের পড়াশোনার সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে। তবেই অধিভুক্ত সাত সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন সফল হবে।

ওডি/আরএআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড