চবি প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকীর সূচনালগ্ন উপলক্ষে চবির বঙ্গবন্ধু চেয়ার, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের যৌথ উদ্যোগে পাঁচ দিনব্যাপী 'বঙ্গবন্ধু বইমেলা-১৯' এর শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে।
রবিবার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে বইমেলার উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী।
উদ্বোধন শেষে বুদ্ধিজীবী চত্বরে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী।
উদ্বোধনী বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, ‘এই বই মেলার মাধ্যমেই বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকীর কর্মসূচি আমরাই প্রথম সূচনা করলাম। বঙ্গবন্ধু কী পরিমাণ বই প্রেমিক ছিল তা আমরা বঙ্গবন্ধুর 'কারাগারের রোজনামচা' পড়লেই বুঝতে পারি।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ১৯৪৮ সাল থেকে যুদ্ধ শুরু করে ভাষা আন্দোলন করেন। জেলে বসে অনশন করেন। সমস্ত সুখ শান্তি বিসর্জন দিয়ে তিনি বঙ্গবন্ধু হয়েছেন। তাইতো ফিদেল কাস্ত্রো বলেন 'আমি হিমালয় দেখি নি, বঙ্গবন্ধুকে দেখেছি'।’
তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের অনেক কিছুই জানতে হবে। যার সব কিছু ইন্টারনেটে নাই। থাকলেও নিজস্ব উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে একেক জন একেকভাবে লেখেছে। তাই সেগুলোকে গুরুত্ব না দিয়ে আমাদের প্রকৃত তথ্য জানতে বই পড়তে হবে। তাদের বই পড়তে হবে যারা মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানে, অংশগ্রহণ করেছে। এই বই মেলার মধ্য দিয়ে আমরা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বছরব্যাপী অনুষ্ঠানে প্রবেশ করেছি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে আমাদেরও বই পড়তে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ ছিল বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ভাষণ।’ তিনি যুক্তি দেখিয়ে বলেন বিশ্বের অন্যান্য নেতাদের ভাষণ ছিল লিখিত। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর বক্তব্য লিখিত ছিল না। বঙ্গবন্ধুর নাম ভাঙিয়ে যারা দুর্নীতি করে তাদের বিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকার পরামর্শ দেন।
রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কেএম নুর আহমদের সভাপতিত্বে এবং আয়োজনটির সমন্বয়ক ও যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাধব দীপের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন- চবি জীব বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের অধ্যাপক ড. আওরঙ্গজেব, আইটি অনুষদের ডিন শংকর লাল সাহা এবং সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন।
আলোচনা সভায় মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত ও গবেষক ড. ভূঁইয়া ইকবাল ও আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মহীবুল আজিজ।
এ সময় বক্তারা বলেন, ‘বই মেলা আমাদের প্রাণের মেলা কিন্তু আমাদের কতগুলো দিক সতর্কতার সাথে দেখতে হবে। বর্তমানে উপযুক্ত সম্পাদক, প্রুফ রিডারের অভাবে বইয়ের মান রক্ষা করা সম্ভব হয় না।’ তিনি বলেন, ‘প্রতিবছর প্রচুর বই প্রকাশ হয় কিন্তু পাঠক সে অনুযায়ী বই পড়ে না। আমাদের পাঠক বান্ধব লাইব্রেরি, প্রকাশনী করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলা একাডেমি ১০০টি বই প্রকাশ করতে চাচ্ছে। যদি মান রক্ষা করতে পারে তাহলে সেটা হবে আমাদের জন্য অনেক বড় পাওয়া।’
উল্লেখ্য, গত বছর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির আয়োজনে বইমেলা হলেও চবিতে এটিই প্রথম বঙ্গবন্ধু বইমেলা। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষকের গবেষিত জার্নাল ও অনুষদ ভিত্তিক জার্নালসহ বিভিন্ন রেফারেন্সের বই পাওয়া যাবে। এ বইমেলায় দেশের স্বনামধন্য প্রায় ৪৪টি প্রকাশক অংশগ্রহণ করেছে। এতে বিভিন্ন তরুণ লেখক ও বিশিষ্ট জনদের লেখা বই ও জার্নালসহ চবি শিক্ষার্থীদের লেখা বইও পাওয়া যাচ্ছে।
ওডি/এমএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড