• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ইবিতে ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রির দাবিতে অনশন, পুলিশি হেফাজতে ২২

ডিন ও ছাত্র উপদেষ্টা অবরুদ্ধ

  ইবি প্রতিনিধি

২৪ এপ্রিল ২০১৯, ১৫:০৬
ইবি
ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রির দাবিতে শিক্ষার্থীদের অনশন (ছবি : দৈনিক অধিকার)

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রির দাবিতে আন্দোলন করে আসছে প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের অংশ হিসেবে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বেলা ১১টা থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচি ঘোষণা করে শিক্ষার্থীরা এবং পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবনের করিডোরে অবস্থান নেয়।

অনশনে দুই শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে যায়, তারপরেও প্রশাসন এবং অনুষদের ডিন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা না করায় ক্ষুব্ধ হয়ে দুপুর ২টায় অনুষদের ডিন অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেয় তারা। এতে অফিসের ভেতরে আটকা পড়েন অফিস সহকারী আবদুল মমিন ও পিয়ন বাদল।

রাতেও আন্দোলনকারীদের একাংশ সেখানে অবস্থান করতে থাকে এবং তাদের অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে রাত সাড়ে ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্ম্মণ ও অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মমতাজুল ইসলাম আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে যান।

দীর্ঘক্ষণ কথা বলার পরও সন্তোষজনক ফল না আসায় একপর্যায়ে ছাত্র উপদেষ্টা ও ডিনকেও অবরুদ্ধ করে রাখে তারা। একই সঙ্গে কলাপসিবল গেটে তালা ঝুলিয়ে দেয়।

পরে ডিন ও ছাত্র উপদেষ্টাকে উদ্ধার করতে রাত ১টার দিকে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আনিছুর রহমান, সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান ও কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক আহসান-উল হক আম্বিয়া সেখানে উপস্থিত হন। তারা রাত ৪টা পর্যন্ত দফায় দফায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সমঝোতা করতে ব্যর্থ হন।

পরে রাত সাড়ে ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা, ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ রতন শেখ, কুষ্টিয়া অতিরিক্ত ডিএসবি মোস্তাক, ডিএসবি মোস্তাফিজুর রহমান এবং কুষ্টিয়া মিরপুর জোনের এএসপি ফারজানা ইসলামের নেতৃত্বে কলাপসিবল গেটের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে ছাত্র উপদেষ্টা ও দুই কর্মচারীকে উদ্ধার করার চেষ্টা করেন।

এ সময় আন্দোলনকারীরা কলাপসিবল গ্যাটের সারিবদ্ধভাবে অবস্থান নিয়ে ব্যারিকেড দিয়ে তাদের আটকানোর চেষ্টা করে স্লোগান দিতে থাকে।

তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্তব্যরত প্রতিনিধিদল ও পুলিশের সঙ্গে চরম অসৌজন্যমূলক আচরণ করে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।

একপর্যায়ে পুলিশ- আরিফুল ইসলাম, তারিক, রাজ, মাহাদী, রিয়াদ, অভি, দেলাওয়ার, হাফিজ, সাব্বিরসহ ২২ শিক্ষার্থীকে আটক করে। অন্যদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। আটকদের কুষ্টিয়া পুলিশি হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

শিক্ষার্থীদের গ্রেফতারের বিষয়ে জানতে চাইলে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রতন শেখ বলেন, শিক্ষার্থীরা প্রযুক্তি ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মমতাজুল ইসলাম ও ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্ম্মনকে জিম্মি করে রাখে। জিম্মি থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়েছে এবং তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

ভুক্তভোগী শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান বলেন, মঙ্গলবার রাত ৯টা থেকে ভোর রাত সোয়া ৪টা পর্যন্ত পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবনের ডিন অফিসে অনুষদের ডিন ও ছাত্র উপদেষ্টাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বহুবার কথা বলেও তাদের সমঝোতায় আনা সম্ভব হয়নি তখন পুলিশি সহায়তায় তালা ভেঙে ডিন ও ছাত্র উপদেষ্টা উদ্ধার করা হয়। এ আন্দোলনকে উস্কানিমূলক, অন্যদিকে প্রবাহিত এবং শিক্ষকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের প্রেক্ষিতে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয়।

জানা যায়, গত বছরের ১২ নভেম্বর ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, ফলিত রসায়ন ও ক্যামিকৌশল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সমন্বয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ চালু করা হয় এবং ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে উক্ত বিভাগের শিক্ষার্থীদের ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। কিন্ত শিক্ষার্থীরা ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষ থেকেই ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি চায় এবং আন্দোলনে শুরু করে।

ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি না থাকায় চাকরি ক্ষেত্রে আমাদের নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি আমাদের ন্যায্য অধিকার। এ দিকে, আজ বুধবারেও গ্রেফতার হওয়া শিক্ষার্থীদের মুক্তির দাবিতে প্রশাসন ভবনের সামনে আমরণ অনশনে বসে আছে শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের কয়েকজন প্রতিনিধি উপাচার্যের কার্যালয়ে উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাত করেন পরে শিক্ষার্থীদের উপাচার্য বলেন, শিক্ষার্থীদের সকল বিষয়ে আমরা সহানুভূতিশীল তাদের আচরণের ওপর নির্ভর করবে আমাদের সহানুভূতি তারা গ্রহণ করবে কি না।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমরণ অনশন চালিয়ে যাব।

ওডি/আরএআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড