• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩২ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় পুলিশে সোপর্দ!

  অধিকার ডেস্ক

২২ এপ্রিল ২০১৯, ২৩:০৪
টিএসসি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র (ছবি : সংগৃহীত)

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) নিজ বান্ধবীর যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় অভিযোগকারীদের উল্টো থানায় দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

সোমবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে এই ঘটনা ঘটে। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী সুমনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগকারীদের সূত্রে জানা যায়, সোমবার দুপুরে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির দুই ছাত্রী তাদের এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে আসে। তাদের বন্ধুর আসতে দেরি হওয়ায় তারা সেখানে অপেক্ষা করছিলেন। হঠাৎ তারা দেখতে পায় মাঝ বয়সী এক লোক তাদের দেখে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করছেন। তখন ঐ ছাত্রীরা তার পরিচয় জানতে চায় এবং এমন কর্মকাণ্ড করার কারণ জানতে চায়। এ সময় তাদের সঙ্গে থাকা এক বন্ধু টিএসসির দোকানদারদের কাছে ঐ লোকের পরিচয় বা অবস্থান সম্পর্কে জানতে চায়। এ সময় ঐ লোক পালানোর জন্য দৌড় দেয়।

ভুক্তভোগী এক ছাত্রী জানান, তাকে পালাতে দেখে আমরা দৌড়ে গিয়ে তাকে ধরে ফেলি। এরপর কয়েকটি চড়-থাপ্পড় দেই। এর মধ্যে ওই লোকের পক্ষ হয়ে কিছু লোক এসে আমাদের নানাভাবে হেনস্থা করে ও বিভিন্ন অভিযোগ দিতে থাকে। পরে এক লোকের নির্দেশে প্রক্টরিয়াল টিমের মাধ্যমে পুলিশ আমাদের থানায় নিয়ে আসে। ওসি আসার পর তিনি জানতে চান আমরা অভিযোগ দেব কি না। কিন্তু আমরা এ বিষয়ে আর ঝামেলা পোহাতে চাই নি। কিন্তু সেখানে আমরা ভুক্তভোগী হয়েও প্রথমেই হেনস্থার শিকার হয়েছি!

যৌন হয়রানিকারী ঐ ব্যক্তির নাম তাজুল ইসলাম। তিনি বাঁশখালীর বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এবং একই সঙ্গে চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর একান্ত সচিব (পিএস) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ঘটনার পর তাজুল ইসলাম তার পরিচিত ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী সুমনকে জানান। কিছুক্ষণ পর সুমন কয়েকজন লোক নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। এর আগে ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা উপস্থিত হন। তারা তাজুল ইসলাম ও ওই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে রিয়াজ উদ্দিন সুমনও ওই দুই ছাত্রীর থেকে ঘটনাটি শোনেন। ঘটনাটি শুনে তিনি ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ওই তিন শিক্ষার্থীকে থানায় দিতে বলেন। এরপর প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা তাদের টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে নিয়ে যান। সুমনের নির্দেশে ওই তিন শিক্ষার্থীকে পুলিশের গাড়িতে তুলে দেন। এরপর সুমন ইউপি চেয়ারম্যান তাজুল ইসলামকে নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত তাজুল ইসলাম বলেন, 'আমি টিএসসিতে দাঁড়িয়ে প্যান্টের পকেটে হাত রেখে ফোনে কথা বলতেছি। কথা শেষে আমি টিএসসির বাইরের দিকে যেতে থাকলে তারা পিছন থেকে আমাকে ডেকে মারধর করেন। তারা আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছেন তা সত্য নয়।'

এ ব্যাপারে রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী সুমন বলেন, 'ওই লোক আমার এলাকার। তিনি একজন চেয়ারম্যান ও সম্মানিত ব্যক্তি। তার নামে বহিরাগত ওই তিন শিক্ষার্থী যে অভিযোগ করেছে তার সত্য-মিথ্যা কতটুকু জানি না! তবে তারা তাকে মারধর করেছে। এটা খুবই খারাপ করেছে তারা। এজন্যই তাদের পুলিশে দেওয়া হয়েছে।'

এ দিকে এ ঘটনায় অভিযুক্ত ও ভুক্তভোগী সবাইকে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রাব্বানী।

এ ব্যাপারে শাহবাগ থানার ওসি (তদন্ত) আরিফুর রহমান জানান, 'আমরা ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানি না। ঢাবি প্রক্টরিয়াল বডি আমাদের ফোন করে দুজন শিক্ষার্থীকে পাঠিয়ে দেয়। আমরা তাদের কাছে জানতে চাই আপনাদের কোনো অভিযোগ আছে কি-না। তারা কোনো অভিযোগ জানান নি। এরপর আমরা ঢাবি কর্তৃপক্ষকে ফোন দিয়ে এ কথা জানালে তারা জানান অভিভাবক ডেকে তাদের ছেড়ে দিতে। এরপর অভিভাবক ডেকে ওই শিক্ষার্থীদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।'

ওডি/এমএ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড