জিটিসি প্রতিনিধি
১৭ এপ্রিল। ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ শুরুর তিন সপ্তাহের মাথায় নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে মেহেরপুরের বৈদ্যনাথ তলায় শপথ গ্রহণ করে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার। এই সরকারের নেতৃত্বেই পরিচালিত হয় মুক্তিযুদ্ধ, ৯ মাসের সংগ্রামের মধ্যদিয়ে আসে চূড়ান্ত বিজয়।
সারাদেশের ন্যায় রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজে যথাযথ মর্যাদায় দিবসটি পালন করা হয়। বুধবার (১৭ এপ্রিল) সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে জাতীয় সঙ্গীত ও পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আশরাফ হোসেন। এছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন কলেজের উপাধ্যক্ষ মোসা. আবেদা সুলতানা, কলেজের ২২ বিভাগীয় প্রধান সহ শিক্ষকবৃন্দ।
মুজিব নগর সরকারের গুরুত্ব ও ইতিহাস তুলে ধরে কলেজের অধ্যক্ষ তার বক্তব্যে বলেন, 'দেশের ভেতর যখন প্রতিরোধ লড়াই চলছে তখন ৭০ এর নির্বাচনে বিজয়ী আওয়ামী লীগের নেতারা স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠনে তৎপর। বঙ্গবন্ধুর পূর্ব নির্দেশ অনুযায়ী সীমান্তে পৌঁছে সংগঠিত করেন জনপ্রতিনিধিদের। মাত্র দুই সপ্তাহের প্রচেষ্টায় ১০ই এপ্রিল গঠিত হয় প্রবাসী সরকার। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি, সৈয়দ নজরুল ইসলামকে উপ-রাষ্ট্রপতি ও তাজউদ্দিন আহমেদকে প্রধানমন্ত্রী, এম মনসুর আলীকে অর্থমন্ত্রী, এই এইচ এম কামারুজ্জামানকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং খন্দকার মোস্তাক আহমেদকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী করে সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সরকার ঘোষণা করা হয়। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে সৈয়দ নজরুল ইসলাম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ১৭ এপ্রিল প্রায় ৫০জন বিদেশী সাংবাদিক ও হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে বাংলাদেশের মুক্তাঞ্চল মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলার আম বাগানে আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করে এই সরকার। যা পরবর্তীতে পরিচিত হয় মুজিবনগর সরকার নামে। এই মুজিব নগর সরকারের কারণেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ পরিচালনা সহজ হয়েছে আর আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা। তাই আমাদের প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম পর্যন্ত এর ইতিহাস জানতে হবে।
কলেজের উপাধ্যক্ষ বলেন, 'ইতিহাসে ১৭ এপ্রিল এক অবিস্মরণীয় দিন। শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের মাধ্যমে পাকিস্তানি শোষক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে মুক্তিসংগ্রামের যে পথ চলা শুরু হয় তা ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে মুজিব নগর সরকারের মাধ্যমে। আমাদের যারা শিক্ষার্থী আছে তাদের অনেক সচেতন হতে হবে। মনে রাখতে হবে জাতির মহানায়ক শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা গড়ার জন্য নতুন প্রজন্মকেই এগিয়ে আসতে হবে।'
এছাড়াও বক্তারা ঐতিহাসিক এ দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ চার জাতীয় নেতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন এবং তাঁদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন। স্মরণ করেন মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহিদ এবং ২ লাখ নির্যাতিত মা-বোনকে। শ্রদ্ধার সঙ্গে আরও স্মরণ করেন মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখা কূটনীতিকদেরকে।
ওডি/এমএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড