আরিফুল ইসলাম আরিফ
প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে এ বছর 'এক্সিলেন্স ইন এডুকেশন অ্যাওয়ার্ড' পেয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ইংরেজি বিভাগের ৩৮তম আবর্তনের শিক্ষার্থী মো. মামুনুর রশীদ। গত ৫ এপ্রিল জাতিসংঘের সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত ২০তম সিটওন সম্মেলনে তিনি এই অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন।
মো. মামুনুর রশীদ তার শিক্ষা বিষয়ক প্রজেক্ট 'শেপিং দ্য ইয়ুথ উইথ এমপ্যাথি এডুকেশন' এর জন্য এ বছর সম্মাননা পেলেন। তার এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। মামুনুর রশীদ বর্তমানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব ল্যাঙ্গুয়েজেস- এ শিক্ষকতা করছেন।
তিনি জানান, তাঁর এই প্রকল্পটি পুরস্কৃত হয়েছে কারণ এই প্রকল্পটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে সহমর্মিতা চর্চার একটি কার্যোপযোগী মডেল উদ্ভাবন করেছে। এই মডেলটি ইতোমধ্যে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অফ ল্যাঙ্গুয়েজেসের ইংরেজি ভাষা শিক্ষার ক্লাসগুলোতে প্রয়োগ করা হচ্ছে এবং অনেক প্রশংসিত হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা তাদের চারপাশের বৈষম্যের শিকার হওয়া মানুষ, তাদের জগত নিজের অনুভূতির মাধ্যমে বোঝার চেষ্টা করে, তাদের প্রতি আমাদের আচরণ কেমন হওয়া উচিৎ এবং তাদের উন্নয়নে কী করা যায় তা নিয়ে ভাবে, কথা বিস্তারিত আলোচনা করে।'
মো. মামুনুর রশীদ বলেন, 'আমাদের সবার মধ্যে সহমর্মিতা চর্চার প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি। দূর থেকে অন্যের প্রতি সমবেদনা জানানো খুব সহজ কিন্তু সহমর্মিতা জানানোর জন্য অন্যকে বুঝতে হয়, তার অনুভূতি নিজে অনুভব করতে হয়। অন্যের জগতটা তার চোখ দিয়ে দেখতে পারলে আমাদের আচরণেও পরিবর্তন আসা স্বাভাবিক। বিশ্বজুড়েও যত যুদ্ধ, ঘৃণা, নাশকতা, উদ্বাস্তু সংকট এসবের পিছনেও আমাদের অন্যের প্রতি অনুভূতিশারতা অনেকাংশে দায়ী। আমি বিশ্বাস করি বিশ্বজুড়ে আমাদের তরুণদের মধ্যে অন্যকে বোঝার চর্চাটি অনুশীলন করা উচিৎ কারণ তারাই ভবিষ্যতের অভিভাবক।'
মো. মামুনুর রশীদ আরও বলেন, 'আমার মনে হয় ভালো শিক্ষার্থীর থেকে ভালো মানুষ হওয়া জরুরি। খুব ভালো রেজাল্ট করে কেউ যদি অমানবিক হয়, নিজের চারপাশের মানুষের অবস্থা বুঝে তাকে সম্মান দিতে না পারে, সহনশীল না হয় বা কথা বলার জায়গা না দেয় তাহলে সেটা আসলে ব্যর্থতাই। আরেকজনের অবস্থায় নিজেকে দেখতে পারাটা আসলে একদিনে তৈরি হয় না। এটা চর্চার ব্যাপার। অন্যের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি সম্মান জানানো, অন্যের দৃষ্টিকোণ থেকে ভাবতে পারা এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ মানবিক গুণ যা মানুষ হিসেবে প্রত্যেকের থাকা উচিত বলে আমার মনে হয়।'
প্রসঙ্গত, জাতিসংঘ বিষয়ক শিক্ষা এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সমস্যার সমাধান উদ্ভাবন করা শিক্ষাবিদদের সিটওন (দ্য কমিটি অন টিচিং অ্যাবাউট দ্য ইউনাইটেড নেশনস) প্রতি বছর এই স্বীকৃতি দেয়। এ বছর বাংলাদেশ ছাড়াও, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনকারী আরও দুজন শিক্ষাবিদ ভারত এবং অস্ট্রেলিয়ার।
ওডি/এমএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড