ইবি প্রতিনিধি
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ৪র্থ আন্তর্জাতিক ফোকলোর সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার (১৩ এপ্রিল) টিএসসিসির বীরশ্রেষ্ট হামিদুর রহমান মিলনায়তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগ, ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসন, ঝিনাইদহ পৌরসভা, লৌকিক কলকাতা ও বাংলাদেশ ফোকলোর রিসার্চ সেন্টার, রাজশাহী ব্শ্বিবিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে এই আন্তর্জাতিক ফোকলোর সম্মেলন-২০১৯ সম্পন্ন হয়।
সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহা. সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হারুন-উর-রশিদ আসকারী বলেন, সারাবিশ্বে ২০৫ মিলিয়ন বাঙালি আছে তাদের প্রাণের সংস্কৃতি বাঙালি সংস্কৃতি। বাংলাদেশেও রয়েছে ৪০-৫০টি জাতিসত্ত্বা যারা সকলে মিলে রাষ্ট্র বিনির্মাণ করছে।
তিনি বলেন, বিশ্ব এখন হুমকির মুখোমুখি প্রতিদিনই কোনো না কোনো দেশে জঙ্গীবাদী হামলার সম্মুখিন হচ্ছে। এতে করে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটছে। আমরা ৯/১১ দেখেছি তথাকথিত জিহাদী জঙ্গীবাদের উত্থান দেখেছি। অন্যদিকে, আইএসএস মোকাবেলার নামে বিশ্বব্যাপী ইসলাম ফোবিয়া সৃষ্টি করা হচ্ছে। তাই চূড়ান্তভাবে আমরা শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করব এ জন্য পরমত ও পরধর্ম সহি হতে হবে।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল ও চৌকস নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ সকল প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে একের পর এক সাফল্য ছিনিয়ে আনছে। অচিরেই ভিশন ২০-২১ এবং রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়িত হলে দেশ উন্নত দেশের কাতারে পৌঁছে যাবে।
সম্মেলনে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন বলেন, শিক্ষা মানুষকে উদার করে এবং মানুষের জানবার দিগন্তকে প্রসারিত করে। পাশাপাশি মানুষকে আলোকিত করে।
তিনি বলেন, একটি ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করতে পারেন এর উজ্জল উদাহরণ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় এবং বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হারুন-উর-রশিদ আসকারী।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. এইচ. এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমাদের অরিজিন কী তা বের করে নিয়ে আসে ফোকলোর। তাই জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে মানুষ হিসেবে ভালোবাসতে হবে।
অপর বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শাহিনুর রহমান বলেন, একজন ফোকলোরিস্ট সব থেকে বেশি মানবতাবাদী। তাই ফোকলোর বিভাগের শিক্ষার্থী হওয়া গর্বের বিষয়। মহাবিশ্বের এমন কিছু নেই যা ফোকলোর সঙ্গে যায় না, সব কিছুই ফোকলোর সঙ্গে সম্পর্কিত।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা নতুন দেশ ও নতুন পতাকা পেয়েছিলাম। তিনি অসাম্প্রদায়িক ধারার বাংলাদেশ সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. সেলিম তোহা বলেন, বাংলার জনজাতি ও সংস্কৃতি প্রথম চিনেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাই দেশ স্বাধীন হবার পর পরই তিনি উপলব্ধি করেছিলেন দেশের জন্য জরুরিভাবে সংবিধান প্রনয়ন করতে হবে। যেখানে রাষ্ট্র পরিচালনার মুলনীতি ও সংস্কৃতি রক্ষার কথা বলা হয়েছে।
তিনি মোবাইল ও আকাশ সংস্কৃতির যুগে পারিবারিক ও সামাজিক মুল্যাবোধ যেন ধ্বংস না হয় সেজন্য ফোকলোর চর্চার মাধ্যমে আমাদের ইতিহাস, মুল্যবোধকে আরও সমৃদ্ধ করবার জন্য উপস্থিত সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
এছাড়া, অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- ঝিনাইদহ পৌরসভার শেয়র সাইদুল করিম মিন্টু, আমেরিকার নিউ মেক্সিকো বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক ডেমন জোসেফ মন্টিক্লার, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক সনৎ কুমার নস্কর ও ভারতের ডায়মন্ড হারবার উইমেন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক তপন মণ্ডল প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফোকলোর বিভাগের প্রভাষক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান। ৪র্থ আন্তর্জাতিক ফোকলোর সম্মেলন-২০১৯ এ মুখ্য আলোচকের বক্তব্য রাখেন কলকাতার রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এমিরেটস বরুন কুমার চক্রবর্তী।
সম্মেলনে বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় সভাপতি, বিভিন্ন হলের প্রভোস্ট, প্রক্টর, ছাত্র-উপদেষ্টা ও শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
ওডি/আরএআর
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড