• বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বৈশাখের রং লেগেছে জাবির চারুকলায়

  আরিফুল ইসলাম আরিফ, জাবি প্রতিনিধি

০৯ এপ্রিল ২০১৯, ১৩:১৫
জাবি
বৈশাখ উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে (ছবি : দৈনিক অধিকার)

বিগত বছরের জরা ও গ্লানি মুছে দিতে আগমনের প্রতীক্ষায় বাংলা নববর্ষ ১৪২৬। পহেলা বৈশাখ তথা নববর্ষ মানেই যে বাঙালির প্রাণের উৎসব। আর এ উৎসবে নিজেদের রাঙাতে প্রায় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।

পহেলা বৈশাখ উদযাপন উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এ বছরও বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এ মঙ্গল শোভাযাত্রাকে সামনে রেখে বিরাট কর্মযজ্ঞে ব্যস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তারা। কেউ বানাচ্ছেন বিভিন্ন প্রাণির মুখোশ, কেউ কার্টুন, কেউবা বাঁশের ঢোল-তবলা। আবার কেউ তাতে আলতো করে দিচ্ছে রংয়ের ছোঁয়া। একটাই লক্ষ্য বর্ণিল আয়োজনে প্রাণের বৈশাখ উদযাপন।

জাবি

বানাচ্ছেন বিভিন্ন প্রাণির মুখোশ (ছবি : দৈনিক অধিকার)

সোমবার (৮ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন কলাভবনে ঢুকতেই সেই ব্যস্ততা চোখে পড়ে। সারা বিভাগেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে দলগতভাবে বা একা কাজ করে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। আর সবসময় উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ধরনের নির্দেশনা দিচ্ছে বিভাগের শিক্ষকরা।

বিভাগীয় শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্ষবরণের সব প্রস্তুতি প্রায় শেষের দিকে। প্রথমদিনে বৈশাখ বরণেই থাকছে মঙ্গল কামনায় শোভাযাত্রার আয়োজন। এ বছর মঙ্গল শোভাযাত্রায় থাকবে লোকজ সঙ্গীতের বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র যেমন- ঢোল, তবলা, একতারা, ডুগডুগি। এছাড়া, মাছ, টেপা পুতুল, পেঁচা, বাঘ থাকছে এবারের মূল আকর্ষণে।

জাবি

গ্রাম-বাঙ্গলার মানুষের প্রকৃত চিত্র (ছবি : দৈনিক অধিকার)

হারাতে বসা লোকজ ঐতিহ্য সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করার লক্ষ্যে এই আয়োজন। সঙ্গে গ্রাম-বাঙলার মানুষের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরতে কৃষক, কামার, কুমার, মোড়ল, বর-বউ, জেলে রূপে সাজ শোভাযাত্রাকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করবে।

এ প্রসঙ্গে চারুকলা বিভাগের শিক্ষক ময়েজ উদ্দিন বলেন, ‘বাঙালির একমাত্র সর্বজনীন উৎসব হলো নববর্ষ। এটা শুধু আমাদেরই উৎসব। তাই তো একে বরণে এত প্রস্তুতি, এত যজ্ঞ। আমাদের জীবনের যে স্বাভাবিক গতি আছে, পাখির মাধ্যমে তা রূপায়ণ করার চেষ্টা চলছে।’

জাবি

নানা রঙের মুখোশ বানানোর কাজ চলছে (ছবি : দৈনিক অধিকার)

পাশাপাশি নানা রঙের ও নানা ধরনের মুখোশ বানাতে ব্যস্ত আরেকদল শিক্ষার্থী। এছাড়া, বিভাগের মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য সরা। সেগুলোতে রঙতুলির মাধ্যমে নানা অবয়ব ফুটিয়ে তুলছেন অনেকে। এগুলোর কোনোটিতে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে কাকতাড়ুয়ার প্রতিচ্ছবি, কোনো কোনোটিতে পল্লীবধূর মুখচ্ছবি। রয়েছে নানা ধরনের প্রাণির প্রতিচ্ছবি।

জাবি

মাছের প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তোলার প্রচেষ্টা (ছবি : দৈনিক অধিকার)

চারুকলা বিভাগের ৪৪তম আবর্তনের শিক্ষার্থী জুলফিশা রাবেয়া মুমু বলেন, ‘আসলে প্রাণের বৈশাখ তথা নববর্ষের আগমন বলেই সবাই এত পরিশ্রম করে যাচ্ছি। সারাবছরই একটা টার্গেট থাকে যে কবে পহেলা বৈশাখ আসবে আর আমরা সবাই একসাথে কাজ করব। এছাড়া, চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী হওয়ায় এ প্রেরণা আরও জোরালোভাবে কাজ করে।’

জাবি

আমাদের জীবনের যে স্বাভাবিক গতি আছে, পাখির মাধ্যমে তা রূপায়ণ করার চেষ্টা (ছবি : দৈনিক অধিকার)

আয়োজনের কাজে ব্যস্ত ৪৩তম আবর্তনের শিক্ষার্থী ইয়াসমিন আকতার বলেন, ‘আমাদের কাজ প্রায় শেষের দিকে এবারের আয়োজনে আমরা চারটি মোটিভ তৈরি করেছি। হারাতে বসা লোকজ ঐতিহ্য সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করার লক্ষ্যেই আমাদের আয়োজন। কষ্ট হলেও এসব কাজ করতে খুব ভালো লাগে।’

পুরোদমেই চলছে প্রস্তুতি, এখন অপেক্ষা শুধুই নতুন বছরের।

ওডি/আরএআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড