• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

শেকৃবিতে জনবল নিয়োগে উপাচার্যের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

  শেকৃবি প্রতিনিধি

১৪ মার্চ ২০১৯, ১২:৫৫
শেকৃবি
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (ছবি : সংগৃহীত)

বহুল আলোচিত রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) শিক্ষক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ জনবল নিয়োগে বেশ কয়েকটি অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদের বিরুদ্ধে।

জানা গেছে, বিজ্ঞাপনে উল্লেখ না থাকার পরও একটি ইনস্টিটিউটে ৫ জন লোকবল নিয়োগ দেওয়া, শিক্ষক নিয়োগে ২১ জনকে অপেক্ষমান তালিকায় রাখা, বিজ্ঞাপিত চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত জনবল নিয়োগ দেওয়া, অপেক্ষাকৃত বেশি রেজাল্টধারীদের বঞ্চিত করে কম রেজাল্টধারীদের নিয়োগ দেওয়া, মাস্টার্স সম্পন্ন করা প্রার্থী বাদ দিয়ে স্নাতক সনদধারীদের নিয়োগ প্রদান ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষক ও নিয়োগ প্রত্যাশী।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর শেকৃবির চারটি অনুষদে সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষক পদে ৭৫ জন শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এর মধ্যে- কৃষি অনুষদে ৩০ জন, অ্যানিম্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদে ২০ জন, ফিসারিজ অনুষদে ১৮ জন এবং অ্যাগ্রিবিজনেস ম্যানেজমেন্ট অনুষদে ৭ জন শিক্ষক নিয়োগ প্রদান করা হবে বলে জানায় বিজ্ঞপ্তিতে। বিভিন্ন বিভাগের মৌখিক পরীক্ষা শেষে গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর ১০১ জনকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের জন্য সুপারিশ প্রদান করা হয়। যা বিজ্ঞাপিত চাহিদার চেয়ে ২৬ জন বেশি। এর মধ্যে- ২১ জনকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) অনুমোদনের অপেক্ষায় রাখা হয়। যা ইউজিসির আইনের পরিপন্থি। ফলে ইউজিসি কর্তৃপক্ষ অপেক্ষমান এই ২১ জন প্রার্থীর নিয়োগের অনুমোদন দিতে নারাজ।

এ বিষয়ে জানতে ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের বলেন, ইউজিসির আইনে কোনো কন্ডিশনাল (শর্ত সাপেক্ষে) নিয়োগ দেওয়া যায় না। যাদেরকে অপেক্ষমান তালিকায় রাখা হয়েছে তাদের নিয়োগ দিতে হলে আমাদের কাছে অনুমতি নিতে হবে, কিন্তু এটা ইউজিসির আইনে না থাকায় আমরা তাদেরকে অনুমতি দেব না।

এ দিকে, বিজ্ঞাপনে ইনস্টিটিউট অব সিড টেকনোলজিতে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে কোনো উল্লেখ না থাকলেও ৪ জন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ি যত সংখ্যক পদে নিয়োগ দেওয়ার কথা তত সংখ্যক পদেই নিয়োগ দিতে হবে।

কৃষি রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, অ্যাপিয়ার্ড সনদ দিয়ে আবেদনকারীদের অনেককে ভাইভা কার্ড দেয়নি, কিন্তু পোল্ট্রি সায়েন্স বিভাগে সহকারি অধ্যাপক পদে মাকসুদা বেগমকে অ্যাপির্য়াড সনদ দিয়ে আবেদন করার পরেও তাকে ভাইবা র্কাড দেওয়া হয়েছে। ভাইবার আগের দিন মাকসুদা বেগমের পিএইচডির ফল বের হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।

সূত্র জানায়, কৃষিতত্ত্ব বিভাগে নিয়োগ বোর্ডে এক্সপার্ট হিসেবে উপাচার্যের জামাতা ঐ বিভাগের অধ্যাপক ড. মির্জা হাসানুজ্জামানকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। অভিযোগ আছে উপাচার্য তার আপন ভাগ্নে মো. মাহবুব আলমকে সহকারী অধ্যাপক পদে নিয়োগ প্রদানের জন্য জামাতাকে এক্সপার্ট হিসেবে নিয়োগ দেন। একইভাবে কৃষি অনুষদের ৩টি বিভাগে প্রভাবশালী শিক্ষকের আরও ৩ জন আত্মীয়কে নিয়োগ প্রদানের অভিযোগ রয়েছে।

জানা যায়, অ্যাগ্রিবিজনেস ম্যানেজমেন্ট অনুষদের ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ফাইন্যান্স বিভাগে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা যোগ্য প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ড. আনোয়ারুল হক বেগের মেয়ে তাহরিমা হক বেগকে প্রভাষক পদে নিয়োগ প্রদান করা হয়। তাহরিমা হক আশা ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছে বলে জানা যায়।

এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ও শিক্ষক সমিতিরি সভাপতি উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, শেকৃবির নিয়োগ বিধিমালায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) নিয়োগ বিধি অনুসরন করার কথা রয়েছে। ঐ বিধির আলোকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি অটোমেটিকভাবে বাদ হয়ে যাওয়ার কথা।

এ প্রসঙ্গে উপাচার্য ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকরা সাক্ষাৎ করলে তিনি বলেন, ‘অমার সময় নেই। নিয়োগ নিয়ে কোনো কথা বলার দরকার নেই। এক পর্যায়ে তিনি রেগে গিয়ে বলেন, ‘আই ডোন্ট ফিল অ্যানি নিড টু টক উইথ ইউ। এই হলো কথা।’ এরপর তিনি রুম থেকে তাদের বের করে দেন বলে অভিযোগ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকরা।

আরএআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড