• রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১  |   ৩০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

সেশনজটের আশঙ্কা

যবিপ্রবিতে শিক্ষকদের লাগাতার কর্মসূচি, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি

  যবিপ্রবি প্রতিনিধি

২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ২০:৫৯
যবিপ্রবি
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ছবি : দৈনিক অধিকার)

শিক্ষককে প্রাণনাশের হুমকি ও মানববন্ধনে হামলায় জড়িতের শাস্তির দাবিতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) শিক্ষক সমিতি। দাবি আদায়ে টানা দেড় মাস কর্মসূচি পালন করছে তারা। কিন্তু দাবি আদায় না হওয়ায় প্রতিনিয়ত দুপুর দেড়টার পর থেকে ক্লাস বর্জন কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষকরা।

ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ বিভাগের চেয়ারম্যান গণ পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। শিক্ষকদের এ ধারাবাহিক কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বাড়ছে সেশনজটের আশঙ্কা।

ঠিকমতো ল্যাব ও ক্লাস না হওয়ায় নির্দিষ্ট সময়ে কোর্স শেষ হওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন শিক্ষার্থীরা। ভবিষ্যতের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে দ্রুত শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিতের দাবিও জানিয়েছেন শিক্ষার্থীদের।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, 'দ্রুত সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি। দুপুরের পর ক্লাস বর্জনে শিক্ষার্থীদের সমস্যা একটু হবে। সেটি পরে অতিরিক্ত ক্লাসের মাধ্যমে পূরণ করা হবে। কোর্স সম্পন্ন করেই শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে শিক্ষক শিক্ষার্থী উভয়ের উপর একটু চাপ পড়বে।

এর আগে গত ৮ ও ৯ জানুয়ারি ক্যাম্পাসে র‍্যাগিং বিরোধী পোস্টার লাগানো নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. ইকবাল কবীর জাহিদকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। ঘটনার প্রতিবাদে ১২ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করেন। সেখানে হামলা চালিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচিতে বাধা দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় শিক্ষার্থী।

শিক্ষককে প্রাণনাশের হুমকি ও মানববন্ধনে হামলার প্রতিবাদে শিক্ষকরা প্রতিদিন বেলা ১২টা থেকে দুঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করে আসছিলেন কিন্তু সর্বশেষ ১৯ ফেব্রুয়ারি ৫৩তম রিজেন্ট বোর্ডের সভায় শিক্ষক লাঞ্ছনাকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় শিক্ষকরা নতুন কর্মসূচি পালন করছেন। তারা প্রতিদিন বেলা দেড়টা থেকে ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করছেন। এছাড়াও ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০ বিভাগীয় চেয়ারম্যান গণ পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মনিরুল ইসলাম জানান, 'শিক্ষকদের কর্মসূচির কারণে আমাদের ঠিকমতো ক্লাস হচ্ছেনা। অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী পরীক্ষা হওয়ার কথা। সেই হিসেবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোর্স সম্পন্ন করতে পারব কিনা সেই সংশয়ে রয়েছে। যদি ওই সময়ের মধ্যে শেষ করতে হয়, তবে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবার চাপ পড়বে।'

ইংরেজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী শরিফা সুলতানা বলেন, 'অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী যদি পরীক্ষা না হয় তাহলে শিক্ষার্থীদের পক্ষে সময় এবং পড়াশোনা দুটোর সামঞ্জস্য করা কঠিন হয়ে পড়বে।'

ক্লাস বর্জনের বিষয়ে জানতে চাইলে দুঃখ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ হাসিনা হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়রা আজমিরা এরিন বলেন, 'আমরা কখনই ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের পক্ষে ছিলাম না। আমাদের যে দাবি দাওয়া ছিল তার অধিকাংশই আমাদের উপাচার্য স্যার মেনে নিয়েছেন আর বাকিগুলো মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন শিক্ষকের বিপক্ষে না, আমরা শুধু প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তি ও ছাত্রলীগকে নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগালিকারী ড. ইকবাল কবির জাহিদ স্যারের এমন আচরণের বিপক্ষে। যেখানে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট ও রিজেন্ট বোর্ডের সবাই সিদ্ধান্ত নিয়ে এক ছাত্রকে বহিষ্কার করেছেন, সেখানে কেন শিক্ষকগণ এ বিচার মানছেন না এটা আমার বোধগম্য নয়। আর এভাবে যদি ক্লাস না হয় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার সেশনজট শুরু হয়ে যাবে।'

ক্লাস পরীক্ষা না নেওয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. ইকবাল কবির জাহিদ জানান, 'আমরা চাইও না শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হোক। কিন্তু আমাদের সাথে যে ধরনের অনিয়ম ও আচরণ করা হয়েছে তার বিচার যতক্ষণ না পাচ্ছি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে আমরা শিক্ষকদেরকে ক্লাসে ফিরে যাবার জন্য অনুরোধ করতে পারি না। আর আমরা সুষ্ঠু বিচার পেলে শিক্ষকদেরকে অনুরোধ করব তারা যেন বাড়তি ক্লাস নিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পূরণ করে দেন।

অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী পরীক্ষার বিষয়ে তিনি বলেন, 'অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে কি না সেটা এখনও বলা যাচ্ছে না।'

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড