• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

মশার কামড়ে অতিষ্ঠ জাবি শিক্ষার্থীরা

  আরিফুল ইসলাম আরিফ

১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৮:০৬

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) অতিরিক্ত হারে বেড়েই চলছে মশার উপদ্রব। দিন দিন মশার ভয়াবহ উপদ্রবে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যার পর আবাসিক হলগুলোতে মাত্রাতিরিক্ত মশার উৎপাত দেখা দেয়। মশার উপদ্রবে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা থেকে শুরু করে হলে অবস্থান করাও কঠিন হয়ে পড়ছে। আর এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা মশার ভয়াবহ উপদ্রবে মশাবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। কয়েল কিংবা অ্যারোসলে কাজ না হওয়ায় রাতের পাশাপাশি দিনেও মশার জ্বালায় হল রুমে মশারী টাঙ্গিয়েও পার পাচ্ছেন না তারা। প্রতিদিন সকাল, বিকাল কিংবা রাত সবসময় শিক্ষার্থীদের এখন লড়তে হচ্ছে মশার সঙ্গে। রাত আর দিন এখন মশার ভয়াবহ উপদ্রব ছড়িয়ে পড়েছে ক্যাম্পাসের সর্বত্রে। ড্রেন, নর্দমা ও জলাশয়গুলোতে অতিরিক্ত আবর্জনার কারণে মশার উপদ্রব অতিমাত্রায় হচ্ছে বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, দিনের বেলায় যেমন তেমন, সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসলেই শুরু হয় মশার ভয়াবহ আক্রমণ। পুরো ক্যাম্পাসের অধিকাংশ জায়গায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা দুর্বল। ড্রেন, লেকগুলো অপরিস্কার। তাছাড়া যেখানে সেখানে পড়ে আছে ময়লা। ফলে যত্রতত্র ময়লা-আর্বজনার স্তূপ সৃষ্টি হচ্ছে। এতে করে দিন দিন মশার প্রকোপ বেড়েই চলছে। মশা নিধনের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত বিশেষ কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না।

উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আবু হাসান ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, পুরো ক্যাম্পাস এখন মশার রাজ্যে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন মশার কামড়ে অতিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছি। মশার উপদ্রবে পড়ালেখা করতে পারছি না। পড়তে বসলেই মশার কামড়, তখন বইয়ের সঙ্গে লড়াই না করে মশার সঙ্গে লড়াই করতে হয়।

আইন ও বিচার বিভাগের অনুপ রায় বলেন, মশার কামড়ে অতিষ্ঠ আমার ক্যাম্পাস জীবন। মশার কামড়ে রাতে ঘুমাতেও পারি না। কী দিন কী রাত সারাক্ষণ মশার অত্যাচার। মশা পড়াশোনায় বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মশার উপদ্রব থেকে দ্রুত বাচঁতে চাই। সেজন্য আমি প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

প্রশাসনের নানা গাফিলতির বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘প্রশাসনের অবহেলা, অসচেতনতায় ক্যাম্পাসে এরকম মশার উপদ্রব। লাইব্রেরিতে পড়তে বসলেই মশার কামড়। হল রুমেও শান্তি নেই, লাইব্রেরিতেও শান্তি নেই। যেখানেই যাই চারিদিকে মশা আর মশা। এভাবে তো ক্যাম্পাসে থাকা দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সারা ক্যাম্পাস ময়লা-আর্বজনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। ড্রেন, লেক, পুকুরগুলো অপরিষ্কার। ক্যাম্পাসের কোথাও পরিষ্কার জায়গা খুঁজে পাওয়া যাবে না। দ্রুত এ অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে চাই আমরা। এভাবে আর চলতে পারে না। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

এ বিষয়ে বাংলাদেশের মশা গবেষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশার বলেন, ‘ক্যাম্পাসে বর্তমানে যে পরিমাণ মশা আছে আগামী মার্চ-এপ্রিল মাস পর্যন্ত আরও কয়েকগুণ বাড়বে। শুধু বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে না সমগ্র বাংলাদেশে এই সময়ে মশার প্রকোপ চরমে। বর্তমানে ক্যাম্পাসে কিউলেক্স মশা খুব বেশি। এর কামড়ে যদিও গোদ রোগ হয়, কিন্তু ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় এ রোগটা হয় না। তবে একেবারে হবে না এমন না। এখন থেকে কার্যকরী উদ্যোগ নিলে সেই সম্ভাবনা কমে যাবে।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (এস্টেট) মো. নূরুল আমিন বলেন, ‘টাকা এবং লোকবলের অভাবে আমরা বছরে দুই বারের বেশি ওষুধ প্রয়োগ করতে পারছি না। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফান্ড এবং লোকবল দেওয়া হলে আমরা আরও কার্যকরী উদ্যোগ নিতে পারব। আমরা এর মধ্যে মশা নিধনে কার্যক্রম শুরু করেছি। আজকেও দুইটা হলে মেডিসিন দেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সবগুলো হলে দেওয়া হবে।’

লেখক : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

আরও পড়ুন : ২২ ফেব্রুয়ারি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে বশেফমুবিপ্রবি'র ভর্তি পরীক্ষা

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড