• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ডাকসু নির্বাচন নিয়ে ঢাবি শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা

  মো. শাহ নেওয়াজ

১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৩:৩৬
ঢাবি
ডাকসু ভবন (ছবি : সংগৃহীত)

দীর্ঘ ২৮ বছর পর আগামী ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন। ইতোমধ্যে ডাকসু নির্বাচনের তফসিলও ঘোষণা করা হয়েছে। এ নির্বাচন নিয়ে ঢাবি ক্যাম্পাসে বিরাজ করছে চরম উত্তেজনা। নির্বাচনকে ঘিরে অনেকে প্রকাশ করছেন তাদের আশা প্রত্যাশার কথা।

আসন্ন ডাকসু নির্বাচন নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এ আশা প্রত্যাশা নিয়ে প্রতিবেদন লিখেছেন দৈনিক অধিকারের ঢাবি প্রতিনিধি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হস্পিটালিটি ম্যানেজম্যান্টের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী জি.এম. সাব্বির বলেন, দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে বন্ধ থাকার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের জন্য ১১ মার্চ তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যেও শুরু হয়েছে নানা আলোচনা। ডাকসু অচল থাকায় শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে কেউ কথা বলতে পারেনি। ডাকসুর ফি সচল থাকলেও শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানে তেমন কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। তাই এবারের ডাকসু নির্বাচন অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

প্রতিষ্ঠার শতবর্ষের দ্বারপ্রান্তে এলেও আবাসন সমস্যা বেড়ে প্রকট আকার ধারণ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তা, অ্যাকাডেমিক বিষয়, খাবারের মান, শিক্ষক নিয়োগ, পরিবহনসহ শিক্ষার্থীদের নানা সমস্যার সমাধান হবে বলে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা মনে করি।

ডাকসু

জি.এম. সাব্বির

এ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা পাবে। বিশেষ করে আবাসন সমস্যা, ক্যান্টিনে খাবারের মান, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে ডাকসু অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ডাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে ছাত্র রাজনীতির নিয়মতান্ত্রিক ধারা ফিরে আসবে। হলের সিট সংকট এই সমস্যা বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব থেকে বড় সমস্যা তাই এই সমস্যা সমাধানে ডাকসুর ভূমিকা অপরিসীম। সুষ্ঠুভাবে ভোট হওয়ার পাশাপাশি নির্বাচিতরা ক্যাম্পাসের সমস্যা সমাধানে আন্তরিক হবেন। শিক্ষার্থীদের দাবি বুঝতে চেষ্টা করবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী মাসুদ রানা বলেন, ডাকসু নির্বাচন ও হল সংসদ নির্বাচনে এমন প্রার্থীকেই চাই যার ভাবমূর্তি, ইমেজ সবার কাছে গ্রহণযোগ্য, যাকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভালোবাসে, পছন্দ করে। নির্বাচিত হয়ে তিনি সাধারণ শিক্ষার্থীদের চাওয়া- পাওয়ার প্রতি গুরুত্ব দেবেন, শিক্ষার্থীদের প্রতিটি সমস্যাকে সমাধান করবেন।

ডাকসু

মাসুদ রানা

আরবী বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী হযরত আলী বলেন, ইংরেজিতে আমরা প্রায়ই একটা কথা বলে থাকি, ‘সামথিং ইজ বেটার দ্যান নাথিং।’ এবারের ডাকসু নির্বাচনকে আমি এভাবেই দেখছি। একটু ভেঙ্গে বলি, ১৯৯০ সালের ডাকসু নির্বাচন এবং ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনকে কোনোভাবেই এক করে দেখা সম্ভব নয়। তাই ডাকসুকে নিয়ে প্রত্যাশাটায় ও নিশ্চয়ই ভিন্নতা থাকবে।

ঢাবির একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসাবে ডাকসু নির্বাচনের পর সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হবে তাদের নিজেদের ভোটে প্রাপ্ত ছাত্র-প্রতিনিধিরা। অন্ততপক্ষে ছাত্রদের মনের কথা শোনার মতো কিছু লোক পাওয়া যাবে এবং জবাবদিহিতারও একটা ক্ষেত্র তৈরি হবে। আর জবাবদিহিতার ক্ষেত্র তৈরি হলে ঢাবির সমস্যাগুলোও দূর হবে, হয়তো বা কিছু সময় লাগবে। তাই আমার চাওয়া হবে, আগে সুষ্ঠুভাবে ডাকসু নির্বাচন হওয়া। ডাকসু নির্বাচন সুষ্ঠু হলে ঢাবির সমস্যা দূরীকরণের উপায় সময়ই আমাদের বলে দেবে।

ডাকসু

হযরত আলী

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী আল আমিনুর রহমান বলেন, সামনে আসছে ডাকসু নির্বাচন। এই নির্বাচনে উপাচার্যসহ হল সংসদের যারা নির্বাচিত হবেন তাদের কাছে আমার প্রত্যাশা হলো- ক্যাম্পাসে যে সন্ধাকালীন কোর্স চালু আছে তা বন্ধ করা। কেননা এই সন্ধাকালীন কোর্সে যে শিক্ষকরা ক্লাস নেন তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সকালের ক্লাসগুলাতে ভালো করে পড়াতে পারেন না। আরও একটা প্রত্যাশা হলো ক্যাম্পাসের সকল হলের ক্যান্টিনগুলার খাবারের মান উন্নত করা।

ডাকসু

আল আমিনুর রহমান

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী মুহা. উবাইদ বলেন, অবশেষে সকল বাধা বিপত্তি পেরিয়ে প্রায় আড়াই যুগ পর সবার প্রত্যাশা ডাকসু নির্বাচন পূরণের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। মূলত ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পরের বছর যাত্রা করে ডাকসু, কিন্তু বিভিন্ন বাধা বিঘ্নতার ফলে এ নির্বাচন স্থগিত হয়ে যায়।

ডাকসু

মুহা. উবাইদ

সর্বশেষ ডাকসুর নির্বাচন হয় ১৯৯০ সালে, কিন্তু দীর্ঘ প্রায় ২৮ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ডাকসু নির্বাচন। এ নির্বাচনে যারা গদিতে বসবে তারা যাতে সৎ, আদর্শ, দেশপ্রমিক, ত্যাগী হয় তার প্রতি দৃষ্টি রাখাও আমাদের এবং প্রশাসনের ন্যায্য দাবি। আর সেই নির্বাচন যাতে অবাধ, সুষ্টু, নিরপেক্ষ অংশগ্রহণমূলক, গণতান্ত্রিক, সকলের নিকট গ্রহনযোগ্য ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয় সেটাই আমার কাম্য এবং ঢাবি প্রসাশনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কেউ যাতে কোনো অরাজকতা সৃষ্টি না করতে পারে তার প্রতি ও প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি।

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী নাজমুল কায়েস সিয়াম বলেন, দীর্ঘ ২৮ বছর পর ডাকসু নির্বাচন হতে যাচ্ছে বিধায় স্বাভাবিক ভাবেই এটা নিয়ে প্রত্যাশার পারদ অনেক বেশি।

ডাকসু

নাজমুল কায়েস সিয়াম

একটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে ডাকসু ফিরে আসুক এবং ছাত্ররা ফিরে পাক তাদের অধিকার। আবাসন সংকট সমাধান, গবেষণা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি, শিক্ষার মান বৃদ্ধি প্রভৃতি নিয়ে ছাত্র সংগঠনগুলো কথা বলুক, ফিরে আসুক ঢাবির সোনালী সময়।

লেখক : শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড