চুয়েট প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) তড়িৎ ও কম্পিউটার কৌশল(ইসিই) অনুষদের আয়োজনে ইলেকট্রিক্যাল, কম্পিউটার এবং টেলিকমিউনিকেশন বিষয়ে তিন দিনব্যাপী ২য় আন্তজার্তিক সম্মেলন সম্পন্ন হয়েছে। পর্যটন নগরী কক্সবাজারের হোটেল লং বিচ অডিটোরিয়ামে গেল বৃহস্পতিবার (৭ ফেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হওয়া এ সম্মেলন শেষ হয় শনিবার (৯ ফেব্রুয়ারি)।
সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। বৃহস্পতিবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, তথ্য-প্রযুক্তি নির্ভর ডিজিটাল অর্থনীতির সম্ভাবনাময়ী বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আগামীর জ্ঞানভিত্তিক ডিজিটাল বাংলাদেশ তৈরির জন্য ইতোমধ্যে সরকার জনসংখ্যাকে দক্ষ মানব সম্পদে পরিণত করার লক্ষ্যে নানা উদ্যোগ হাতে নিয়েছে। বৈশ্বিক সূচকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিসহ যে কোনো খাতে দেশ এখন ক্রমান্বয়ে দিনদিন উন্নতির পথে। এ ধরনের সম্মেলন কেবল চুয়েটকে নয় বরঞ্চ বিশ্বের বুকে বাংলাদেশকে তুলে ধরতে সহায়তা করবে।
এছাড়া, সহজ-সাবলীল ভাষায় সহজে সকলের বোধগম্য ও বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করতে পারে এমন পাঠদান ব্যবস্থা ও বাংলা ভাষায় প্রযুক্তি চর্চার জন্য গবেষকদের আহ্বান জানান তিনি।
শুক্রবার সমাপনী অনুষ্ঠানে সম্মেলনের টেকনিক্যাল কমিটির চেয়ারম্যান এবং চুয়েটের সিএসই বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহম্মদ মশিউল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এছাড়া, বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান, চুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম এবং আইইইইর বাংলাদেশ শাখার চেয়ার অধ্যাপক ড. সেলিয়া শাহনাজ।
চুয়েটের ইইই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. রকি বৈদ্য ও সিএসই বিভাগের প্রভাষক ফারজানা ইয়াসমিনের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন কনফারেন্সের টেকনিক্যাল কমিটির সেক্রেটারি এবং চুয়েটের ইটিই বিভাগের শিক্ষক ড. মো. আজাদ হোসাইন। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন জাপানের সাইতামা ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. ইয়োশোনারি কুনো এবং দক্ষিণ কোরিয়ার উলসান ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. কাংইয়োন জো। স্পন্সর প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে বক্তব্য রাখেন বিটিসিএলের জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী খান আতাউর রহমান সান্টু।
সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, সম্ভাবনাময়ী-পরিশ্রমী ও উদ্ভাবনী তরুণ শক্তিকে কাজে লাগিয়ে আমরা মেধাভিত্তিক অর্থনৈতিক ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই। তথ্যপ্রযুক্তি ভিত্তিক যে কোনো উদ্ভাবনকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে সচেষ্ট। বিশ্বমানের প্রতিভা তৈরির লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আমরা বিশ্বমানের পরীক্ষাগার গড়ে তুলব। আমরা একটি ‘ভারচুয়াল ইউনিভার্সিটি অব মাল্টিমিডিয়া অ্যান্ড ইনোভেশন’ নামে বিশ্বমানের একটি ভার্চুয়াল বিশ্ববিদ্যালয় গড়ব, যার কোনো স্ব-শারিরীক ক্যাম্পাস থাকবে না, ডিজিটালি সব পরিচালিত হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেন, তথ্য-প্রযুক্তিখাতকে বাংলাদেশ সরকার অগ্রাধিকার দিয়ে সফলতার সাথে এগিয়ে যাচ্ছে। গেল ১০ বছরে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। এখন ট্রাফিক জ্যামে বসেই দেশে-বিদেশে যোগাযোগ করা যায়, দাপ্তরিক অনেক কাজ করা যায়। আগামী দিনে এই সাফল্য আরও বিপুল বিস্তৃতি এ বিশ্বাস এখন সকলের।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ে চুয়েট নানা অগ্রগতি লাভ করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় চুয়েটে নির্মিত হচ্ছে দেশের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের প্রথম আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর। এ ধরনের গৌরবময় সম্মেলন আয়োজন চুয়েটের পাশাপাশি দেশের চিত্রও বৃদ্ধি করতে পারে বলে আমরা আশাবাদী।
এই আর্ন্তজাতিক সম্মেলনে বাংলাদেশসহ যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নেপাল, ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, সোমালিয়া থেকে ইলেকট্রিক্যাল, ইলেকট্রনিক, কম্পিউটার সায়েন্স, টেলিকমিউনিকেশন প্রভৃতি বিষয়ে শীর্ষস্থানীয় অ্যাকাডেমিশিয়ান, সায়িন্টিস্ট, রিসার্চার, স্কলারস, ডিসিশন মেকার্সরা অংশ নেয়।
প্রসঙ্গত, এই কনফারেন্সে ৮১২টি প্রবন্ধ জমা পড়ে। যা দেশের যে কোনো কনফারেন্সের জন্য সর্বোচ্চ। এতে রেজিস্ট্রার্ড অংশগ্রহণকারী ছিলেন ২৭০ জন।
আরও পড়ুন : শাবিপ্রবিতে বিডিএফ-আইএলও বিভাগীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা ও কর্মশালা
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড