• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

২৩ বছরে পদার্পণ করল মাভাবিপ্রবি

  মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধি

১২ অক্টোবর ২০২১, ১২:২৪
মাভাবিপ্রবি
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ফাইল ছবি)

বাংলাদেশের অন্যতম বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত টাঙ্গাইল জেলায় অবস্থিত মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (মাভাবিপ্রবি) ২৩তম বছরে পদার্পণ করেছে।

মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর স্বপ্নের এই বিশ্ববিদ্যালয়টির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয় ১৯৯৯ সালের ১২ অক্টোবর। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এটি শুধু একটি বিশ্ববিদ্যালয়ই নয় বরং কৃষক শ্রমিক জনতার প্রিয় ব্যক্তিত্ব মজলুম জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংগ্রামকে ধারণ করে রাখা একটি প্রতিষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয়টি ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠা হলেও এর পেছনে রয়েছে সুদুরপ্রসারি ইতিহাস।

মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে অগ্রণী ভুমিকা পালন করেন। তিনিই ১৯৫৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কাগমারী সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন। কিন্তু বিভিন্ন কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করতে পারেননি, অবশেষে ১৯৭০ সালে সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করেন। ১৯৭০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর মাওলানা ভাসানী ‘আমার পরিকল্পনায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়’ শিরোনামে লিখিত নিবন্ধের মাধ্যমে তার প্রস্তাবিত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের চূড়ান্ত প্রস্তাব করেন। তিনি জীবদ্দশায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়ন করে যেতে পারেননি, কিন্তু তিনিই মূলত বিশ্ববিদ্যালয় কাজ শুরু করে যান।

মজলুম জননেতার মৃত্যুর পর ১৯৮২ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপ্রধান ভাসানীর শিক্ষা বিস্তারের একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য একটি ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করা হলেও রাজনৈতিক নানা জটিলতায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়ে ওঠেনি।

পরবর্তীতে ১৯৯৬ সালে সরকারি উদ্যোগে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলসমূহে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষা বিস্তারের প্ররিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। এর অংশ হিসাবে টাঙ্গাইলে একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়। এরই ধারাবাহিকতায় সাবেক স্বরাষ্ট্র এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রী আব্দুল মান্নানের নেতৃত্বে ট্রাস্টির তৎকালীন চেয়ারম্যান জনাব আজিজ-উল-হক, ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর এস এইচ কে ইউসুফজাই, সদস্যসচিব সৈয়দ ইরফানুল বারী, টাঙ্গাইল পৌরসভার তৎকালীন চেয়ারম্যান মো. সামসুল হক ও অত্র এলাকার গণ্যমান্য বাক্তিদের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় অনেক বাধা বিপত্তি পেরিয়ে সন্তোষে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সুপারিশ পেশ করেন। ফলস্রুতিতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১২ অক্টোবর ১৯৯৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

পরবর্তী সরকার অধ্যাপক ড. মোঃ ইউসুফ শরীফ আহমেদ খানকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেন। ২০০৩ সালের ২৫ অক্টোবর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষায়তনিক কার্যক্রম শুরু হয়।

কম্পিউটার সায়েন্স এ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের অধীনে কম্পিউটার সায়েন্স এ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ইনফরমেশন এ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি- বিভাগ দুটি নিয়ে এর দাফতরিক কার্যক্রম শুরু হয়।

বর্তমানে ৭০.৬৯ একরের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬টি অনুষদের অধীনে ১৮টি বিভাগ রয়েছে। প্রতিবছর স্নাতক পর্যায়ে এখানে ৮১৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৫ হাজার।

এই বিশ্ববিদ্যালয়টি টাঙ্গাইলের সদর উপজেলার উত্তর-পশ্চিমে মাওলানা ভাসানীর স্মৃতিবিজড়িত সন্তোষে অবস্থিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ছয়টি অনুষদ, প্রশাসনিক ভবন, সাতটি আবাসিক শিক্ষার্থী হল (২টি নির্মানাধীন), কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, খেলার মাঠ, চিকিৎসাকেন্দ্র, ব্যায়ামাগার, বঙ্গবন্ধুর মুর‍্যাল, শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিস্তম্ভ, প্রত্যয় '৭১ ভাস্কর্য, শহীদ মিনার, মুক্তমঞ্চ ইত্যাদি অবস্থিত।

এছাড়া ক্যাম্পাসের অধিভুক্ত জায়গার ভেতরই মাওলানা ভাসানীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে নির্মিত ঐতিহাসিক দরবার হল, প্রখ্যাত সুফি সাধক পীর শাহ্ জামানের নামানুসারে পীর শাহ্ জামান দীঘি, মাওলানা ভাসানীর মাজার, ভাসানী জাদুঘর একটি মসজিদসহ আরো বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই অধিভুক্ত জায়গা ছাড়াও সন্তোষের অদূরে রথখোলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-সম্পত্তি রয়েছে।

শিক্ষা ও গবেষণায় রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঈর্ষনীয় অর্জন। ইতোমধ্যে শিক্ষা ও গবেষণায় আন্তর্জাতিক সম্মেলন, সেমিনারসহ বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে এ বিশ্ববিদ্যালয়। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক গবেষক হিসেবে স্থান পেয়েছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ জন গবেষক।

ওডি/নিমি

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড