• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ভাড়া না দেওয়ায় গেটে মেস মালিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের তালা!

  জাককানইবি প্রতিনিধি

২৭ জুন ২০২০, ২০:৩১
জাককানইবি
ছবি : সংগৃহীত

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার অনিশ্চয়তায় ও অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে মেস ছাড়তে গিয়ে মেস মালিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের বাধার মুখে পড়েছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাককানইবি) ফোকলোর বিভাগের এক শিক্ষার্থী।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) মেসে আসলে তাৎক্ষণিক ভাড়া দিতে না পারায় মেসে প্রবেশ করতে দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন চাঁদের হাটের ক্ষনিকা ছাত্রাবাসের মালিক, ফোকলোর বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. সাইফুল ইসলাম।

করোনা চলাকালীন ৪ মাসের ভাড়া পরিশোধ করতে না পারলে মেসে ঢুকতে না দেওয়ার জন্যে মেসের কেয়ারটেকারকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানায় অভিযোগকারী শিক্ষার্থী। যার সত্যতা নিশ্চিত করেছে মেসের কেয়ারটেকার আব্দুল আজিজ।

একই বিভাগের ওই শিক্ষার্থী অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে মেস ছাড়ার কথা মুঠোফোনে বললে মেস মালিক শিক্ষক ড. মো. সাইফুল ইসলাম জানান, পুরো টাকা পরিশোধ করে জিনিস নিয়ে যাও তার আগে নয়। উক্ত শিক্ষক ওই শিক্ষার্থীর মা কে ফোন দিয়ে ৪ মাসের ভাড়া পরিশোধ করতে বলেন।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, স্থানীয় প্রশাসন ও মেস মালিকদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৩৩ শতাংশ ভাড়া মওকুফের কথা বললে তিনি বলেন এটা কোনো ভাবে সম্ভব নয়। আমি তোমায় পরে জানাচ্ছি। মালিককে না জানিয়ে রাতে কেয়ারটেকার শিক্ষার্থীকে থাকতে দেয়। ওই শিক্ষার্থী পরদিন শুক্রবার (২৬ জুন) বিকাশে টাকা উত্তোলন করতে গেলে কেয়ারটেকার সেই তালা পরিবর্তন করে ফেলে। পুরো ভাড়া না দিলে কোনোভাবেই যেতে দিতে না করেছে স্যার- এমনটাই জানিয়েছে কেয়ারটেকার। তাৎক্ষনিক ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধানকে জানায়। এরপর ৬৭ শতাংশ ভাড়া পরিশোধ করে মেস ছেড়ে দেয় ওই শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত শিক্ষকের সঙ্গে মুঠোফোনে সংলাপের অডিও বার্তা রয়েছে উক্ত শিক্ষার্থীর কাছে।

এ বিষয়ে প্রক্টর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান বলেন, ‘আমি অভিযোগকারী শিক্ষার্থীকে বলেছি নোটিশ মোতাবেক ৬৭ শতাংশ ভাড়া পরিশোধ করে মেস ছেড়ে দিতে।’

অভিযোগের বিষয়ে ফোনে জানতে চাইলে ফোকলোর বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান ও সহকারী অধ্যাপক ড. মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমি বাইরে, এ নিয়ে এখন কথা বলতে পারবো না।’ পরবর্তী সময়ে আবার জানতে চাইলেও তিনি এড়িয়ে যান।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এমন ঘটনা ঘটে থাকলে তা লজ্জার ও নিন্দনীয়। অফিশিয়ালি কেউ অভিযোগ করলে আমাদের সংগঠনের ফোরামে আলোচনা করে ব্যবস্থা নিবো। শিক্ষার্থীদের প্রতি আমাদের আন্তরিক হওয়া উচিত।’

আরও পড়ুন : ৪৩৩ কোটি টাকার বাজেট পেল রাবি

ফোকলোর বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সাকার মুস্তাফা বলেন, ‘সামাজিক মাধ্যমে ক্ষণিকা মেস সংক্রান্ত যে সংবাদটি দেখেছি, তা যদি সত্য হয়, তবে বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক ও অমানবিক। আমি মনে করি, এই মহামারির সময়ে আমাদের আরও বেশি সংযত, ধৈর্যশীল ও মানবিক আচরণ করা উচিত। আর শিক্ষক হিসেবে আমাদের দায়বোধ আরও বেশি বলেই মনে করি। এই ঘটনাকে বিভাগের বিষয় দিয়ে বিবেচনা করা ঠিক হবে না। মেস মালিক অন্য বিভাগের শিক্ষকও হতে পারতেন, এমনটি আছেও। সুতরাং, বিষয়টি উক্ত মেস মালিক ও শিক্ষার্থীর মধ্যকার সমস্যা। সে জন্যে প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতা নেওয়া যেতে পারে।’

ঘটনাটি ফেসবুকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গ্রুপে জানাজানি হওয়ার পরে সমালোচনার ঝড় উঠছে। বিভিন্ন কমেন্ট ও স্ট্যাটাসে এমন ঘটনাকে লজ্জার ও নিন্দনীয় অবহিত করে শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান। তরু শাহরিয়ার স্বর্গ নামের বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এক শিক্ষার্থী কমেন্টে লিখেন, ‘আমিও এ শিক্ষকের মেসে কিছুদিন ছিলাম, তার আচরণ অসুস্থ ব্যক্তির ন্যায়। পরীক্ষার সময় আমাকে মেস থেকে চলে যেতে বাধ্য করেন তিনি।’

আজিজুল ইসলাম আজিজ নামের অপর এক শিক্ষার্থী লিখেন, ‘একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিজের মেসে ভাড়া এক টাকা ছাড় দিতে রাজি হয় না!! আরতো মেস মালিক। আগে শিক্ষকদের কথা চিন্তা করেন, তারা কি আমাদের অভিভাবক না ব্যবসায়ী এটাই জানার বিষয়।’

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড