মামুন সোহাগ, জিটিসি প্রতিনিধি
রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজের ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে গেছে জেকেজি হেলথ কেয়ারের কর্মীরা। ২৩ জুন তাদের প্রতিষ্ঠানের পাঁচজন কর্মকর্তা গ্রেফতার হওয়ার পরে তারা রাতেই কলেজ ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যায়।
এ বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তাদের তারা কিছু জানায়নি। বিষয়টি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে জানিয়েছেন তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ মো. আশরাফ হোসেন। বুধবার (২৪ জুন) সরেজমিনে এ সব তথ্য পাওয়া যায়।
এদিন তিতুমীর কলেজ ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখা যায় জেকেজি হেলথকেয়ারের কোনো কর্মী সেখানে নেই। সেখানে কিছু পোশাক বাদে আর অন্য কিছু নেই।
কলেজের কর্মচারী মো. মুসা দৈনিক অধিকারকে বলেন, ‘ তাদের মালিক আর কর্মকর্তাদের গ্রেফতারের খবর শুনে তারা রাতেই এখান থেকে পালিয়ে যায়। আমরা সকালে এসে দিকে আর কাউকে দেখিনি। আমাদের এইদিকে আসা নিষেধ কিন্তু কাউকে না দেখে এদিকে আসি। এসে দেখি রুমগুলোর মধ্যে কিছু কাপড়-চোপড় ছাড়া আর কিছু নেই।’
তিনি বলেন, ‘শুনছি তারা কোথাও কোনো জায়গা পাচ্ছিল না প্রশিক্ষণের জন্য। পরে আমাদের এখানে আসে। দেশের উপকারের কথা বিবেচনা করে তাদের এখানে ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। পরে তারা আমাদের ওপরেই হামলা করে এই মাসের শুরুর দিকে। তাদের চেয়ারম্যান, মালিক সবাই ছিল সেদিন রাতে। গত শুক্রবারও দেখা যায় তারা তিনটা খাসি জবাই করে এখানে পার্টি করে। এখনো সেখানে লাকড়ি পড়ে আছে। ময়লা পড়ে আছে। প্রশিক্ষণ নিতে আমরা কখনো কাউকে দেখিনি। অথচ কাল যখন তাদের কর্মকর্তারা গ্রেফতার হয় তখন এরা রাতেই পালিয়ে যায়।’
এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ মো. আশরাফ হোসেন দৈনিক অধিকারকে বলেন, ‘২৩ জুন তারা কাউকে কিছু না জানিয়ে চলে গেছে। আমি এ বিষয়টি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মহোদয়কেও জানিয়েছি। এছাড়াও আমাদের সচিব মহোদয় এবং ডিজি মহোদয়কে জানিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘এর আগে এই মাসের শুরুর দিকে যখন আমার কলেজ কর্মচারীদের উপরে হামলা করে তখনও আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলাম। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককেও জানিয়েছিলাম। তারা রাতের আধারেই আমার এখানে আমাদের কর্মচারীদের ওপর হামলা করে। যেখানে তাদের মালিক আরিফুল চৌধুরী ছিলেন। চেয়ারম্যান সাবরিনা আরিফ চৌধুরীও সেদিন কলেজ ক্যাম্পাসে ছিলেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশের স্বার্থেই তাদের আসলে কলেজ ক্যাম্পাসে প্রশিক্ষণের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখানে প্রায় প্রতিদিন সন্ধ্যার পরেই সাউন্ড সিস্টেমসহ গান বাজনার আসর বসতো। এ বিষয়ে এখানকার স্থানীয়রাও অভিযোগ দিয়েছিল রোজার মাসে ও পরবর্তী সময়েও। সন্ধ্যা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত চলতো এমন। যেদিন হামলা করে তার পর দিন এখান থেকে তারা সাউন্ড সিস্টেম সরিয়ে নিয়ে যায়। হয়তোবা তদন্ত হবে ভেবেই এমনটা করে তারা।’
আরও পড়ুন : গবিতে সেমিস্টার ফির জন্য চাপ, বিপাকে শিক্ষার্থীরা
অধ্যাপক আশরাফ বলেন, ‘তারা যদি সৎ হতো তবে তাদের উচিত হতো অন্তত ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যাওয়ার আগে আমাকে বা স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে জানানো। আমাকে জানায় নাই। আমি তাই আজ সকালে সবাইকে জানিয়ে দিয়েছি।’
এ দিকে বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আজম মিয়া দৈনিক অধিকারকে বলেন, ‘আমাদের কাছে তাদের চলে যাওয়া বিষয়ে কোনো তথ্য নেই।’
উল্লেখ্য, ২ জুন রাতে জেকেজি হেলথকেয়ারের কর্মীরা তিতুমীর কলেজের কর্মচারীদের ওপর হামলা করে বলে অভিযোগ করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় তিতুমীর কলেজের কর্মচারীরা আহত হয় বলে জানা যায়। একই ঘটনায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করে জেকেজি হেলথকেয়ার কর্তৃপক্ষও।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড