যবিপ্রবি প্রতিনিধি
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টার থেকে নিজস্ব জিনোম সিকুয়েন্স মেশিনের সাহায্যে তরুণ শিক্ষক ও গবেষকদের অক্লান্ত বাংলাদেশের প্রথম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে তিনটি করোনাভাইরাসের পূর্ণাঙ্গ জীবন রহস্য উন্মোচন করা হয়েছে।
বুধবার (২৪ জুন) বিকেলে যবিপ্রবির বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব অ্যাকাডেমিক ভবনের গ্যালারিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও জিনোম সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন করোনাভাইরাসের জীবন রহস্য উন্মোচনের এ ঘোষণা দেন।
অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, জিনোম সিকুয়েন্সগুলো ইতোমধ্যে বিশ্বখ্যাত জিনোম ডাটাবেজ সার্ভার জিআইএসএআইডি-তে জমা দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সাহায্য নিয়ে জিনোম সিকুয়েন্স করেছে, সেখানে অপেক্ষাকৃত নবীন বিশ্ববিদ্যালয় হলেও নমুনা প্রসেসিং, ভাইরাস শনাক্ত, নিউক্লিক এসিড পৃথকীকরণ থেকে শুরু করে জিনোম সিকুয়েন্স পর্যন্ত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-ছাত্ররা নিজেরাই করেছে। ঢাকার বাইরে এই প্রথম কোনো ল্যাবে করোনাভাইরাসের জিনোম সিকুয়েন্স করা সম্ভব হলো।
অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘নড়াইল, ঝিনাইদহ ও বাগেরহাটে সংক্রমণ সৃষ্টিকারী ভাইরাস থেকে এই জিনোম সিকুয়েন্সগুলো করা হয়েছে। এই সিকুয়েন্সগুলো বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে সংক্রমিত ভাইরাসের প্রথম জিনোম সিকুয়েন্স, যার মাধ্যমে এই অঞ্চলে সংক্রমিত ভাইরাসের গতিপ্রকৃতি, তা কোথা থেকে ছড়ালো ইত্যাদি বিষয়ে ধারণা পাওয়া যাবে। এই জিনোম সম্পর্কিত বিশ্লেষণ আমাদের গবেষকরা করছেন এবং এ অঞ্চলের ভাইরাসের বৈশিষ্ট্য নিয়ে গবেষণা প্রবন্ধ শিগগিরিই আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশের জন্য পাঠানো হবে। ভবিষ্যতে এই ল্যাবেমেটাজেনোম করার মাধ্যমে রোগীদের সংক্রমণের তীব্রতার কারণও জানা যাবে।’
যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন আরও বলেন, ‘যবিপ্রবিতে একটি অত্যাধুনিক অ্যানিম্যাল হাউস ও গ্রিন হাউস তৈরি করা হচ্ছে। ফলে ভবিষ্যতে বিএসএল-৩ ল্যাবরেটরি স্থাপন করে দুরারোগ্য ব্যাধি প্রতিরোধে ভ্যাকসিন তৈরিসহ আরও উচ্চমানের গবেষণা করতে আমাদের গবেষক দল প্রস্তুত রয়েছে।’
আরও পড়ুন : ৪৬ বিশ্ববিদ্যালয়ে সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা অনুমোদন
অধ্যাপক ড. আনোয়ার আরও জানান, আমি এবং অধ্যাপক ড. মো. আনিছুর রহমান যখন প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে অর্থ প্রদানের জন্য যাই, তখন প্রধানমন্ত্রী আমাদের জিনোম সেন্টারের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং করোনাভাইরাস পরীক্ষা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের করোনাভাইরাস পরীক্ষণ দলের সদস্যরা পালাক্রমে ২৪ ঘণ্টা নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। ফলে আগের চেয়ে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- গবেষক দলের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল কবীর জাহিদ, ড. মো. নাজমুল হাসান, ড. তানভীর ইসলাম, ড. সেলিনা আক্তার, ড. শিরিন নিগার, ড. হাসান মোহাম্মদ আল-ইমরান, অভিনু কিবরিয়া ইসলাম, প্রভাষ চন্দ্র রায়, এ. এস. এম. রুবাইয়াত-উল-আলম, মো. সাজিদ হাসান।
এ ছাড়া সংবাদ সম্মেলনে যবিপ্রবির প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. দীপক কুমার মন্ডল, সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মো. হায়াতুজ্জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড