• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

শিক্ষকরা উদ্যোগ নিলেই ফল প্রকাশ সম্ভব

  ক্যাম্পাস ডেস্ক

০৭ জুন ২০২০, ২১:১৮
রাবি
ছবি : সংগৃহীত

করোনায় দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস সীমিত পরিসরে প্রশাসনিক কার্যক্রম চালু করেছে। যেহেতু প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে সেহেতু আটকে থাকা ফল প্রকাশের উদ্যোগী হতে পারে বিভাগগুলো, বলছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষকরা। তবে এ ব্যাপারে একটু ছোট উদ্যোগ জরুরি বলে দাবি তাদের।

রেজাল্ট আগের মতোই তৈরি করতে হবে। কিন্তু রেজাল্ট তৈরির আগে যেসব পদক্ষেপগুলো নেওয়া জরুরি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফারুক সরকার টুকু বলেন, ‘ফল আগের মতোই এক্সেল বা অন্য পদ্ধতি ব্যবহার করে করতে হবে। কোনগুলোর খাতা আটকে ছিল সেগুলোর খোঁজ নিতে হবে চালু করতে হবে মার্কস আনতে হবে। বাসায় বসে থাকলে তো হবে না।’

রেজাল্ট একটা নিয়মিত কাজ। সেটা করে ফেললে সবার জন্য ভালো। অফিস খুলেছে অথচ আমরা বাড়িতে আছি। ক্লাস নেই কিন্তু রেজাল্টের কাজ তো করতে পারি। এজন্য অ্যাকাডেমিক কমিটির মিটিং দরকার। সেটা তো জুম অ্যাপ এ করে ফেলা যায়। রেজাল্ট দিলে সেশনজট দূর করার পরিকল্পনা নেওয়া যাবে বলে মত দেন এই অধ্যাপক।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বলছেন, ফল প্রকাশের জন্য বিভাগীয় অ্যাকাডেমিক কমিটির সভা ডাকা জরুরি। দরকারি সভাগুলো অনলাইনে সেরে নিয়ে ফল প্রকাশের উদ্যোগ নিলে শিক্ষার্থীদের সেশনজট লাঘব হবে।

তারা বলছেন, সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস খোলা হলো। প্রশাসন যদি জুম অ্যাপে অ্যাকাডেমিক কমিটির মিটিং করাসহ অন্যান্য দরকারি যোগাযোগের স্বীকৃতি দিয়ে দেয় তাহলে অনেক বিভাগ তাদের আটকে থাকা রেজাল্ট প্রস্তুত করতে পারে বা রেজাল্টের কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। এই মহামারীতে এসএসসির রেজাল্ট হলো। আমরাও চেষ্টা করে দেখি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কয়েকটি বিভাগ ফল প্রকাশের জন্য কিছু দরকারি সভা সেরে ফেলেছেন এবং অতি শিগগিরই ফল প্রকাশের আশ্বাস দিয়েছেন।

ফল প্রকাশের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সভাপতি ড. বিমল কুমার প্রামাণিক বলেন, যেসব বিভাগে একেবারেই পরীক্ষা সম্পন্ন তারা চাইলেই ফল প্রকাশ করতে পারেন। আমার বিভাগের সব পরীক্ষা কমপ্লিট ছিল কিন্তু জেনারেল ভাইভার জন্য রেজাল্ট আটকে আছে। বেশির ভাগ বিভাগেই অর্ধেক কিংবা আংশিক রেজাল্ট এসব কারণে আটকে আছে।

তবে, শিক্ষকদের সদিচ্ছা থাকলেই রেজাল্ট প্রকাশ সম্ভব জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা তো শিক্ষকদের চাপ দিতে পারছি না। ক্যাম্পাস খুললেই রেজাল্ট প্রকাশের নির্দেশনা দেওয়া আছে।’ তাছাড়া, প্রশাসনিকভাবে নির্দেশ এলেই রেজাল্ট প্রকাশ করা সম্ভব বলে মনে করছেন তিনি।

রাবির রেজাল্টে দীর্ঘসূত্রিতার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় অর্থনীতি বিভাগের সভাপতি ড. কে বি এম মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষকদের সদিচ্ছা থাকলে ফল প্রকাশ করা সম্ভব। করোনাকালে এসএসসির রেজাল্ট প্রকাশ হলেও রাবির রেজাল্ট প্রকাশ হয়নি কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এসএসসিতে একজন এক্সামিনার থাকে। আর আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ জন খাতা মূল্যায়ণ করেন। দুইজন দেখার পর নম্বরের তারতম্য বেশি হলে তৃতীয়জন আবার সেই খাতা দেখেন। আর ওই তৃতীয় এক্সামিনারের জন্য প্রশাসনের অনুমোদনের প্রয়োজন পড়ে। প্রতি বিভাগেই এরকম সমস্যা ২/১টা থেকেই যায়। যাতে করে আমাদের ফল প্রকাশে দীর্ঘ সময় লেগে যায়।’

আর এই সময়ে রেজাল্ট প্রকাশের অন্যতম অন্তরায় অধিকাংশ শিক্ষক ঝুঁকি নিয়ে আসতে চায় না।পরীক্ষার খাতা অনেকে চেম্বারে দেখেন আবার কেউ বাড়িতে। করোনার লকডাউনে এসব কাজে অগ্রগতি হচ্ছে না। তবে, বিভাগের শিক্ষকরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করলে রেজাল্ট প্রকাশ সম্ভব। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগের কার্যক্রম শুরু হলেই সকল শিক্ষককে আসতে হবে এমন নোটিশ দেওয়া আছে। তখন সবাইকে নিয়ে মিটিং করবো। এবং টেবুলেশন সিটে মার্কস জমা করতে হবে। এতে দ্রুত ফল প্রকাশ করতে পারবো। এই ক্রান্তিলগ্নে আমরা কোনো শিক্ষককে জোর করতে পারি না। এটা সম্পূর্ণ তাদের সদিচ্ছার ব্যাপার।’

আরও পড়ুন : মাৎস্য শিল্পে করোনার ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়াই আগামীর চ্যালেঞ্জ : ড. আব্দুস ছাত্তার

বিশ্ববিদ্যালয় কলা অনুষদের ডিন ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. ফজলুল হক বলেন, ‘রেজাল্ট প্রকাশ হওয়া অসম্ভব কিছু নয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের অত্যাবশ্যকীয় কাজগুলো অফিশিয়ালি সেরে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে। কোনো বিভাগের রেজাল্ট আটকে থাকলে তা প্রকাশ করতেই পারে। কেন না, তা অত্যাবশ্যকীয় কাজের মধ্যেই পড়ে। আর ফল প্রকাশের বিষয়ে পরীক্ষা গ্রহণের পূর্বেই ৪ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। তারাই পরীক্ষা নেওয়া ও ফল প্রকাশ করে।’

এমতাবস্থায় ওই কমিটি চাইলেই ফল প্রকাশ করতে পারবে। এটা কোনো জটিল বিষয় নয়। রেজাল্ট প্রকাশে ৩ জন টেবুলেটর স্ব স্ব জায়গায় টেবুলেশনের দায়িত্ব পালন করেন। এতে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে ফলের কাজ করতে পারবে। তারা একদিন একসঙ্গে বসে রেজাল্টের সমন্বয় করে ঠিক করতে পারেন। ইচ্ছা থাকলেই এটা করা সম্ভব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এম এ বারী জানান, সীমিত আকারে প্রশাসনিক কার্যক্রম চলছে। এখনও বিভাগের কার্যক্রম শুরু হয়নি। এ কারণে ফল প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না। আর মহামারির ব্যাপকতায় শিক্ষকরাও সুষ্ঠুভাবে কাজ করতে পারছে না। ক্যাম্পাস পুরোপুরি চালু হলেই কেবল ফল প্রকাশ সম্ভব।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড