• শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৪ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ঢাকা কলেজ আঙ্গিনায় দৃষ্টিনন্দন মে ফুল

  রাকিবুল হাসান তামিম, ডিসি প্রতিনিধি

১১ মে ২০২০, ১৭:১৮
ঢাকা কলেজ
বাগানে দৃষ্টিনন্দন মে ফুল (ছবি : রাকিব হাসান তামিম)

করোনার ভয়াল থাবায় বিপর্যস্ত জনজীবনে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে প্রকৃতি ফিরেছে তার স্ব-মহিমায়। আর সেই সুবাদে স্বাভাবিক পরিবেশ পেয়েই প্রকৃতি মেলে ধরেছে তার সৌন্দর্যের পেখম।

দীর্ঘদিনের না পাওয়ার শূন্যতাগুলো একে একে করছে পূরণ। প্রকৃতি মনের সুখেই নিজের বিস্তৃতি আর অস্তিত্ব কে জাগিয়ে তুলছে। পৃথিবীর বুকে মেলে ধরেছে নিজস্ব রূপ-নিসর্গ। বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়। পরিবেশ প্রকৃতিরাজ্যে চলছে সৃজনের পালা বদল। নানান ধরনের বাহারি রঙের ফুল আর ঘন সবুজ পাতার সজীবতাই যেন প্রমাণ করে অতৃপ্ত পৃথিবীর স্বস্তির ভাব। প্রকৃতির এমন হাজারো রূপ আর রসের ভিড়ে ইতিহাস ঐতিহ্যের বিদ্যাপীঠ ঐতিহ্যবাহী ঢাকা কলেজের বাগানে দেখা মিললো দৃষ্টিনন্দন মে ফুলের।

একবছর পর পর লাল টুকটুক কাপালি ফুলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ না হয়ে পারা যায় না। প্রকৃতপক্ষে একবছরের জুন মাস থেকে পরবর্তী বছরের এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত দেখে বুঝার উপায় নেই এখানে কোনো গাছ আছে। এপ্রিলের শেষ দশকেই মাটি ফুঁড়ে নতুন করে মাথা তুলে দাঁড়ায় এই গাছ। আর মাস ঘুরে মে হতেই গাছে যেন নতুন প্রাণের সঞ্চার হয়। পাতা আর কলির সঞ্জীবনে নতুন রূপের পসরা সাজিয়ে নিজেকে মেলে ধরে মুক্ত আকাশের পানে। কলি ফুটে হয়ে যায় মে ফুল। মে মাসে জন্ম তাই মে ফুল। ঢাকা কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনের বাগানে চোখ রাখলেই দেখা মিলবে এই মনোমুগ্ধকর ফুলের। সৌন্দর্যের আঁচড়ে আঁকা ছবির মতোই শোভা পাচ্ছে দৃষ্টিনন্দন এই মে ফুল।

কলেজের বাগানের পরিচর্যায় দীর্ঘ প্রায় ২৮ বছর ধরে কাজ করেন মুন্না। বাগানের মালি মুন্না জানান, আজ হতে প্রায় ১১ বছর আগে অর্থাৎ ২০০৮ সালের দিকে কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের জনৈক সহযোগী অধ্যাপক তার বাসা থেকে মে ফুলের দুটি কন্দ এনে তাকে দেন বাগানে লাগানোর জন্য। তার পরবর্তী বছর থেকে পর্যায়ক্রমিকভাবে আজ অবধি দীর্ঘ প্রায় ১২ বছর ধরে এই বাগানে ফুটছে মে ফুল। এতে বাড়তি কোন যত্নের প্রয়োজন হয় না। নিজের ইচ্ছেমতো মাটি ফুঁড়ে মে ফুলের চারা বের হয় আবার ফুল ফোটার পর জুন মাসের মাঝামাঝি গাছ মরে যায়। মূলত মাটির নিচের কন্দটাই আসল।

মে ফুল সম্বন্ধে আরও চমৎকার তথ্য দিলেন ঢাকা কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জিল্লুর রহমান। বললেন, মে ফুলের অস্তিত্ব প্রথম চোখে পড়ে আফ্রিকা মহাদেশে। এর বৈজ্ঞানিক নাম ক্যাশিয়া জাভানিকা। মে ফুলের কোনো গন্ধ নেই, তবুও দেখতে সুন্দর ও অপরূপ। এর আরও কয়েকটি নামে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রচলিত রয়েছে যেমন- পাউডার পাফ লিলি, আফ্রিকান ব্লাড লিলি নামেও পরিচিত। গোলাকার দেখতে হওয়ায় ফুলটিকে বল লিলিও বলা হয়। একই কারণে বলা হয় গ্লোব লিলি। মে ফুল প্রায় ৩ সেমি. চওড়া হয়। পাপড়ি ও পুংকেশর অসমান।

আরও পড়ুন : প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে শাবিপ্রবির ১৩ লক্ষ টাকা অনুদান

সাধারণ শিক্ষার্থীরাও মুগ্ধ এই ফুলের সৌন্দর্যে। জানতে চাইলে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী জুয়েল মৃধা বলেন, ফুল সবসময়ই পবিত্রতা আর ভালোবাসার বার্তা বহন করে। কলেজে আসা যাওয়ার পথে বাগানে ফুটে থাকা বড় মে ফুলের সৌন্দর্যে আমি মুগ্ধ।

সবকিছু ছাপিয়ে সদ্য ফোঁটা মে ফুলের সৌন্দর্যের মায়ায় একনজর থমকে দাঁড়াতেই হয়। কেননা সৃষ্টিগতভাবেই ফুলের সঙ্গে মানুষের হৃদয়ের অমোঘ বন্ধন। তাই ফুলের জাদুকরী বৈশিষ্ট্য মানুষকে সহসাই কাছে টানে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড