বশেফমুবিপ্রবি প্রতিনিধি
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব থেকে বাঁচতে বিনা মূল্যে বিতরণের জন্য হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি করেছে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেফমুবিপ্রবি) একদল গবেষক। পরে তা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী ও পথচারীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়।
সোমবার (২৩ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বিভাগের শিক্ষক বিজ্ঞানী ড. মাহমুদুল হাছানের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় ল্যাবরেটরিতে নিজস্ব অর্থায়নে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
তিনি জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার উৎপাদন করা আমাদের দায়িত্বের একটি অংশ। আমরা আপাতত স্বল্প পরিসরে এটা করেছি। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় যেহেতু শিক্ষার্থীরা নেই, তাই আপাতত কর্মচারী এবং আশেপাশের সাধারণ মানুষদের মাঝে বিনা মূল্যে এ স্যানিটাইজার বিতরণ করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, স্যানিটাইজার তৈরির প্রাথমিক পর্যায়ে স্যানিটাইজার প্রস্তুত করার পর পরীক্ষামূলকভাবে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বোতলজাতও করা হয়। প্রয়োজনীয় সহায়তা পেলে পরবর্তী সময়ে বৃহৎ পরিসরে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বোতলজাত করা হবে এবং তা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং আশেপাশের সাধারণ মানুষের মাঝে বিনা মূল্যে বিতরণ করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বিভাগের শিক্ষার্থী তুষার কুমার সিংহ রায় জানান, চলমান সংকটময় মুহূর্তে দায়িত্বানুভূতির জায়গা থেকে ড. মাহমুদুল হাসানের নেতৃত্বে ৮ সদস্যের একটি দলের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় জীবাণুনাশক হ্যান্ড স্যানিটাইজার প্রস্তুত করতে কাজ করেছি।
স্যানিটাইজার প্রস্তুতকারী দলের অন্য সদস্যরা হলেন- ফিশারিজ বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান অনিক, সৈয়দা মার্জিয়া ইসলাম তৃপ্তি, ফারজানা হায়দার স্মৃতি, দিদারুল ইসলাম অভি, বিল্লাল হাসান ও শর্মিলা দে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ সামসুদ্দিন আহমেদ জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার উৎপাদন খুবই ভালো উদ্যোগ। আমরা এ ধরনের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। এ ধরনের কর্মকাণ্ডে সর্বাত্মক সহায়তা করতে সর্বদা প্রস্তুত। আশা করছি ধীরে ধীরে এর উৎপাদন এবং ব্যাপ্তি বৃদ্ধি করা হবে। এ জন্য প্রশাসন থেকে প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
এছাড়া এ উদ্যোগ সাধারণ মানুষের উপকারে আসবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এ বিষয়ে জামালপুরের বরেণ্য শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ শহীদুর রহমান খান জানান, এটি নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় উদ্যোগ। আমি তাদের এই মহতী উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বলব ‘তারা যেন এটি বৃহৎ পরিসরে করে সাধারণ মানুষদের বিতরণ করে।’
আরও পড়ুন : হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি করেছে ঢাকা কলেজের রসায়ন বিভাগ
উল্লেখ্য, তরুণ বিজ্ঞানী ড. মাহমুদুল হাছান বাংলাদেশের ১০৭টি ব্যাঙ নিয়ে মলিকুলার পদ্ধতিতে ডিএনএ বারকুডিং অ্যানালাইসিস করে ৮টি নতুন প্রজাতির ব্যাঙ আবিষ্কারসহ ৩টির বৈজ্ঞানিক নামকরণ করেন। এর মধ্যে ১টি ব্যাঙের নামকরণ করেন দেশের মৎস্য বিজ্ঞানী ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়াত অধ্যাপক ড. মোখলেসুর রহমান খানের নামে। এছাড়া বর্তমানে বশেফমুবিপ্রবির কেন্দ্রীয় ল্যাবরেটরিতে ‘ক্রিপটিক বায়োডাইভারসিটি অফ ফ্রেশ ওয়াটার স্পিসেস ইন বাংলাদেশ’ ও ‘ব্লাইণ্ড স্নেক’ বা ‘দুমুখো সাপ’-এর জিন গবেষণাসহ বেশ কয়েকটি গবেষণা জাপান সরকার এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে চলমান রয়েছে।
ওডি/এমআরকে
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড