ক্যাম্পাস ডেস্ক
মরণঘাতি করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে রোবট চিকিৎসক বানিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পাঁচ শিক্ষার্থী। যার নাম দিয়েছেন ‘মিস্টার ইলেক্ট্রোমেডিক্যাল’।
এ রোবট মানুষের শরীরের তাপমাত্রা, হার্টবিট, অক্সিজেনের পরিমাণ ও রক্তচাপ পরিমাপসহ রোগ নির্ণয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারবে। এছাড়া চিকিৎসকের বিকল্প হিসেবে রোবটটি কাজ করতে সক্ষম বলে দাবি করেছেন নির্মাতারা।
দেশের বিভিন্ন পলিটেকনিকে প্রায় ১৫ বছর আগে ইলেক্ট্রোমেডিক্যাল টেকনোলজি বিভাগ খোলা হয়। তবে এ বিভাগ থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের সরকারি চাকরির বাজারে প্রবেশের তেমন সুযোগ ছিল না। এর পরিপ্রেক্ষিতে রোবট চিকিৎসক বানিয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তারা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইলেক্ট্রোমেডিক্যাল টেকনোলজি বিভাগের জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর (টেক) আবুল কাশেমের সহযোগিতায় বিভাগের অষ্টম ব্যাচের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান, আনাসুর রহমান, মীর আমিন, মেহেদী হাসান ও ষষ্ঠ ব্যাচের শিক্ষার্থী আব্দুল মোন্নাফ মিলে ‘মিস্টার ইলেক্ট্রোমেডিক্যাল’ রোবটটি তৈরি করেছেন।
এ বিষয়ে আবুল কাশেম বলেন, রোবটটিতে বি.পি মনিটর, ই.সি.জি সেন্সর, পালস অক্সিমেটরি সেন্সর, জি.সি.ইউ সেন্সর, ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর ও থার্মাল স্ক্যানার যুক্ত করে মানুষের স্বাস্থ্য পরীক্ষা-নীরিক্ষার জন্য উপযোগী করে তোলা হয়েছে। আর চলাফেরার জন্য ক্যামেরা ও আল্ট্রাসনিক সেন্সর লাগানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, রোবট নিয়ন্ত্রণে স্থাপন করা হয়েছে রেসবেরি পাই, আরডোইনো মেগা ও আরডোইনো ইউএনও। সালাম দেওয়াসহ দেশের নাম, বঙ্গবন্ধুর নাম ও প্রধানমন্ত্রীর নাম বলতে পারে এ রোবট। এটি নির্মাণ ব্যয় মাত্র ৫০ হাজার টাকা। তবে সরকারি বা বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে রোবটটি আরও উন্নত করে তৈরি করা যাবে।
নির্মাতাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, হাসপাতালে ডাক্তার না থাকলেও এ রোবট যেন চিকিৎসকের বিকল্প হিসেবে কাজ করতে পারে সেজন্য এটিকে আরও আধুনিক ও উন্নত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
তারা দাবি করেন, কোনো ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির কাছে কেউ না গেলেও রোবটটি আক্রান্ত ব্যক্তির কাছে গিয়ে তার শরীরের তাপমাত্রা, রক্তচাপ, হার্টবিট ও অক্সিজেনের পরিমাণ পরিমাপ করতে পারবে। একই সঙ্গে আক্রান্ত ব্যক্তির কাছে ওষুধ ও খাবার সরবরাহ করতে পারবে।
মাদকাসক্ত ব্যক্তিকে শনাক্ত করতে এবং আগুন লাগার খবর দিতে রোবটটিতে নতুন ফিচার হিসেবে অ্যালকোহল ডিটেক্টর ও ফায়ার অ্যালার্ম যুক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। এছাড়াও রোবটটি যেকোনো জায়গা থেকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি মোবাইল অ্যাপস তৈরির কাজ করা হচ্ছে বলে জানান ওই পাঁচ শিক্ষার্থী।
আরও পড়ুন : জাককানইবিতে ইএসই বিভাগের শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি
ইন্সট্রাক্টর বলেন, বিশ্বব্যাপী যখন করোনা ভাইরাস রোগীদের চিকিৎসায় চিকিৎসকরা হিমশিম খাচ্ছে, তখন মানবরূপী চিকিৎসকের বিকল্প হতে পারে এই রোবট। পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এরকম রোগীদের চিকিৎসায় এ ধরণের রোবট তৈরি করে ব্যবহার করা যাবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগর ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন খান জানান, এ প্রজেক্টটি তারা কারিগরি শিক্ষা বিভাগে উত্থাপন করেছেন। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে মন্ত্রণালয়।
ওডি/জেআই
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড