• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

সাফল্যের শীর্ষে বেগম রোকেয়ার মেয়েরা

  আবু সাঈদ জনি, বেরোবি প্রতিনিধি

০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৫:৩১
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়
বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় (ছবি : মেহেদী হাসান)

রংপুর শহর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দক্ষিণে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি)। ২০০৮ সালের ১২ অক্টোবর এর প্রতিষ্ঠা। প্রথমে রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় নামে যাত্রা শুরু করলেও ২০০৯ সালে বাঙালি নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়।

বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন ছিল সমাজ থেকে কুসংস্কার, ধর্মীয় গোঁড়ামি, অন্ধকারাচ্ছন্নতা দূর করে সুষ্ঠু, সুন্দর একটি সমাজ বিনির্মাণ করা। যে সমাজে পুরুষ দেহের একটি অংশ হলে মেয়েরা হবে অপর অংশ। পুরুষ গাড়ির একটি চাকা হলে নারী হবে সেই গাড়ির অপর চাকা। পুরুষরা দেবতার আসনে আসীন হলে নারীরাও বসবে দেবীর আসনে। অর্থাৎ পুরুষ অর্ধাঙ্গ হলে নারী হবে অর্ধাঙ্গী।

সম্প্রতি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় শিক্ষার্থী ‘প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক-২০১৮’ এর জন্য মনোনীত হয়েছেন। যার মধ্যে পাঁচজনই মেয়ে। এছাড়া প্রতিটি বিভাগে শীর্ষ ফলধারীদের তালিকাতেও মেয়েদের জয়জয়কার।

প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদকে মনোনীত সোহানা ইয়াসমিন বলেন, ‘আমি যে দিন প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদকে মনোনীত হয়েছি শুনলাম তখন আমার ভেতরে অন্য রকম একটা অনুভূতি হলো যা ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব। আসলে এটি পাওয়ার যোগ্যতা আমার নেই। বাবা-মা অনেক কষ্ট করে আমাকে লেখাপড়া করিয়েছেন। তাদের হাতে সেই পদক তুলে দিতে চাই।’

বেরোবিতে পড়ুয়া মেয়েদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘মেয়েদের জন্য যা কিছু মন্দ তা ত্যাগ করে আত্মবিশ্বাসে বলিষ্ঠ হয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করতে হবে। এজন্য প্রয়োজন সুশিক্ষা ও দক্ষতা অর্জন করা। নিজেকে মূল্যায়ন করতে হবে একজন মানুষ হিসেবে ‘‘মেয়ে মানুষ’’ হিসেবে নয়। নিজের অবস্থান নিজেকেই অর্জন করে নিতে হবে।’

সম্প্রতি যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য অধিকার বিষয়ক প্রতিযোগিতায় গ্র্যান্ড ফাইনালে বিজয়ী হয় রংপুর অঞ্চল। যেখানে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচজন বিতার্কিক অংশগ্রহণ করে। যার মধ্যে তিনজনই মেয়ে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে এ পর্যন্ত মোট ১২টি ব্যাচ পড়াশোনা করছে (কয়েকটি ব্যাচ শেষ করেছে)। তাদের মধ্যে বিভিন্ন বিভাগে খোঁজ নিয়ে দেখা যায় অধিকাংশ বিভাগের ফাইনালে ১ম স্থান মেয়েদের দখলে থাকে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা কর্মকাণ্ডে তাদের যোগ্যতার প্রমাণ মিলছে। যেমন পড়ালেখার পাশাপাশি যুক্তিতর্ক দিয়ে বিতর্কে অংশগ্রহণ, রোভার স্কাউটে অংশগ্রহণ, গান, কবিতা, নাচ আবৃত্তিতে অংশগ্রহণসহ সাহিত্য-সংস্কৃতির সব জায়গায় পদচারণা করছে অবলীলায়।

সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগীয় পর্যায়ের বিভিন্ন ব্যাচের মধ্যে এবং আন্তঃবিভাগীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতাগুলোতেও মেয়েরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করছে। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নারী কলা অনুষদের ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি হলেন ড. সরিফা সালোয়া ডিনা। এছাড়া ড. সোহেলা মুসতারী ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেছেন।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী যিনি নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম শিক্ষক হয়েছেন তিনিও একজন মেয়ে । তিনি বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৫০ জনের মতো নারী শিক্ষক শিক্ষাদান করছেন।

আরও পড়ুন : দারুল কোরআন মুসলিম একাডেমির পুরস্কার বিতরণী

গত ১৭ জানুয়ারি মেয়েদের আত্মরক্ষার কলাকৌশল শেখার জন্য বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেন্সিং ট্রেনিং ক্লাবের উদ্বোধন করা হয়। যা মেয়েদের জন্য একটি নতুন প্লাটফর্ম। এ ক্লাবের মাধ্যমে তারা ইভটিজিং সহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধে রুখে দাঁড়াতে সক্ষমতা অর্জন করবে।

এভাবেই প্রতিটি ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছেন বেগম রোকেয়ার ভগিনীকুল।

ওডি/এমএ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড