যবিপ্রবি প্রতিনিধি
নিরাপদ সড়কের দাবিতে টানা আন্দোলনের পর যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) প্রধান ফটকের সামনে স্পিড ব্রেকার, জেব্রা ক্রসিংয়ের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
দ্রুততম সময়ের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন করায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, সড়ক ও জনপথ বিভাগ ও সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
এর আগে গত ১২ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৭টায় অনিয়ন্ত্রিত মোটরসাইকেল ও ট্রাকের গতির কারণে দুর্ঘটনার শিকার হন পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মোহাইমেনুল হক।
দুর্ঘটনার প্রতিবাদে ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে পরদিন ১৩ জানুয়ারি (সোমবার) দুপুর ১টা ৩০মিনিটে যবিপ্রবির প্রধান ফটকের সামনের রাস্তায় মানববন্ধন ও প্রায় এক ঘণ্টা অবরোধ করে অবস্থান করেন শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে তাদের সাত দফা দাবি তুলে ধরেন।
তাদের দাবিগুলো হলো- বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আম বটতলা বাজার থেকে বেলতলা পর্যন্ত গাড়ির সর্বোচ্চ গতিসীমা ২০ কিলোমিটার নির্ধারণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানার শুরুতে একটি ও প্রধান ফটকের সামনে দুটি গতিরোধক নির্মাণ, বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন রাস্তায় ওভারটেকিং ও হর্ন নিষিদ্ধের সাইন সংযুক্তকরণ, বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন সড়কে ফুটপাত নির্মাণ এবং ফুটপাত নির্মাণ না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্বদিকের গেট খোলা রাখা এবং সম্পূর্ণ রাস্তায় ল্যাম্পপোস্ট সংযুক্তকরণ।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মাঝে উপস্থিত হয়ে যবিপ্রবির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনিসুর রহমান বলেন, ‘এ দাবি শুধু তোমাদের নয় এ দাবি আমাদেরও।’
এরপর একই দাবিতে ১৪ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) দুপুর সাড়ে ১২টায় যশোর সড়ক বিভাগের কার্যালয়ের সামনে আবারও মানববন্ধন করেন যবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা ২০১৪ সালে তাদের দুই সহপাঠীর মৃত্যু ও গুটিকয়েক শিক্ষার্থী আহত হওয়ার কথা উল্লেখ করেন।
মানববন্ধন ও রাস্তা অবরোধের পর শিক্ষার্থীদের সাত দফা দাবির মধ্যে স্পিড ব্রেকার নির্মাণ, জেব্রা ক্রসিং তৈরি, রাস্তার পাশে গতি রোধের সাইনবোর্ড এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব দিকের গেট খুলে দেওয়া হয়।
সড়কে স্পিড ব্রেকার (ছবি : দৈনিক অধিকার)
এ উদ্যোগ নেওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসারদের কাছে এর প্রভাব সম্পর্কে জানতে চাইলে সহকারী ক্যাম্প ইনচার্জ মো. শিপন হোসেন দৈনিক অধিকারকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেইটসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ এবং শুরুতে সর্বমোট তিন জায়গাতে স্পিড ব্রেকার দেওয়ায় শিক্ষার্থী, পথচারী এবং বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সকলে উপকৃত হচ্ছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রায় প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল গেইটের সামনে স্পিড ব্রেকার ও জেব্রা ক্রসিং থাকে যার ফলে দুর্ঘটনা অনেকটা কমে আসে। এখন যবিপ্রবিতেও স্পিড ব্রেকার, জেব্রা ক্রসিং ও গতি সংক্রান্ত সাইনবোর্ড দেওয়া হয়েছে যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয় ও এলাকাবাসীর সড়ক নিরাপত্তা অনেক বেড়ে গিয়েছে।’
ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনেই আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয় সব দোকান। সবসময় আমাদের রাস্তা অতিক্রম করতে হয়। কিন্তু বাস, মোটরসাইকেলগুলোর বেপরোয়া গতির কারণে আমরা আতঙ্কিত থাকতাম। এখন স্পিড ব্রেকার দেওয়ায় একটু নির্ভয়ে রাস্তা পার হতে পারছি। তবে ফুটপাত, রোড লাইটসহ অন্যান্য দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ থাকবে।’
আরও পড়ুন : জাবিতে নীলফামারী জেলা সমিতির নতুন কমিটি
এত দ্রুত সমস্যা সমাধানে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সড়ক বিভাগকে ধন্যবাদ জানিয়ে ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. ইমরান হোসেন দৈনিক অধিকারকে বলেন, ‘স্পিড ব্রেকার ও জেব্রা ক্রসিং নির্মাণের ফলে এখন আমরা নির্ভয়ে চলাচল করতে পারছি।
মার্কেটিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. ওয়াসিম আকরাম বলেন, ‘স্পিড ব্রেকার দেওয়াতে আমি শিক্ষার্থী হিসেবে নিজেকে নিরাপদ মনে করছি। স্পিড ব্রেকার দেওয়াতে গাড়ির গতি কমেছে। তাই আমরা সহজেই চলাফেরা করছি।’
ওডি/এমএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড